Advertisement
E-Paper

দায় কার! রাজনীতি সরগরম জাঙ্গিপাড়ায়

জাঙ্গিপাড়া বিধানসভা এলাকা জুড়েও এই অভিযোগ। কিছুটা অনিয়ম হয়েছে, মানলেও এলাকার তৃণমূল বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তীর যুক্তি, এমন ঘূর্ণিঝড় গত ১৬০ বছরে হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২০ ০৩:৫৭
ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

দায় কার!

শাসক দল বলছে, মিলিত। বিরোধীরা অবশ্য সূচাগ্র দায় নিতেও নারাজ। তাঁদের দাবি, যাবতীয় দায় শুধুই শাসকের।

আমপান ক্ষতিপূরণে অনিয়ম নিয়ে হুগলিতে শোরগোল অব্যাহত। এর মধ্যেই প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের সকলের হাতে টাকা না পৌঁছনোর দায় নিয়ে রাজনৈতিক তরজা জমেছে জাঙ্গিপাড়ায়।

গত ২০ মে ওই ঘূর্ণিঝড় হয়। তার পরেই নবান্নের ঘোষণায় দ্রুত ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু, ওই টাকা নয়ছয় হয়েছে বলে হইচই বাধান বিরোধীরা। অভিযোগ, দোতলা, তিনতলা পাকা বাড়ি অক্ষত থাকা সত্বেও বহু তৃণমূল নেতা, তাঁদের আত্মীয়, ঘনিষ্ঠ, প্রভাবশালীরা ওই টাকা পেয়েছেন। শুধু পাকা বাড়িই নয়, কারও ঘরে এসি। কারও গ্যারাজে গাড়ি। অথচ বহু মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ক্ষতিপূরণ জোটেনি।

জাঙ্গিপাড়া বিধানসভা এলাকা জুড়েও এই অভিযোগ। কিছুটা অনিয়ম হয়েছে, মানলেও এলাকার তৃণমূল বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তীর যুক্তি, এমন ঘূর্ণিঝড় গত ১৬০ বছরে হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সক্রিয় হয়ে দ্রুত ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেন। অতি দ্রুত সেই কাজ করতে গিয়ে অনুসন্ধান করা সম্ভব হয়নি। সেই ফাঁক গলেই ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য নন, এমন কিছু লোকের নাম তালিকায় ঢুকে গিয়েছে।

স্নেহাশিস বলেন, ‘‘সমস্যা হওয়াতেই মুখ্যমন্ত্রী সর্বদল বৈঠক করেন। তার প্রেক্ষিতে জাঙ্গিপাড়াতেও সব দলকে নিয়ে বিডিও বৈঠক করেন। সবাইকেই প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা জমা দিতে বলা হয়। আমিও এই নিয়ে বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। এর পরেও অনেকে টাকা পাননি শুনছি, এটা দুর্ভাগ্যজনক।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘সর্বদল বৈঠকের পরেও প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত সবাই টাকা না পেয়ে থাকলে, সেই দোষ একা তৃণমূলের হবে কেন! সেই দায় সকলকেই নিতে হবে।’’

বিরোধীদের দাবি, বৈঠক ডাকার আগেই তৃণমূলের একাংশের বদান্যতায় ক্ষতিপূরণ বড়লোকদের ঘরে পৌঁছে গিয়েছিল। বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, সর্বদল বৈঠক হলেও সর্বদল কমিটি হয়নি। অর্থাৎ তাঁদের কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তাঁরা বৈঠকে অনিয়মের কথা জানান। পরে বিডিও অফিসে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত বহু মানুষের আবেদন জমা দেন। সেই আবেদনকারীদের অধিকাংশই এখনও টাকা পাননি। বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল বসু বলেন, ‘‘শাসক দল এই ভাবে দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইলে তো চলবে না। সর্বদল বৈঠককে মান্যতা দিতে হলে, যাঁরা অন্যায় ভাবে গরিবের টাকা নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’’

জাঙ্গিপাড়ার সিপিএম নেতা অলোক সিংহরায় বলেন, ‘‘সর্বদলীয় বৈঠকের আগেই অনিয়ম যা হওয়ার, হয়ে গিয়েছল। যে সব তৃণমূল নেতারা টাকা পেয়েছেন এবং বড়লোকেদের পাইয়ে দিয়েছেন, প্রত্যেকের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করা উচিত। সরকার তথা শাসক দলকে এই দায় নিতে হবে। একটা বৈঠকে ডেকে আর কিছু নাম জমা দিতে বলে দায় ভাগ করার চেষ্টা করা হবে কেন?’’ সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, প্রথম পর্যায়ের ক্ষতিপূরণ-প্রাপকদের তালিকা বিডিও অফিসে ঝুলিয়েই খুলে নেওয়া হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ের তালিকা ঝোলানো হয়নি।

শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘পুরাণে আছে, দস্যু রত্নাকরের পাপের ভাগ তার পরিবারের কেউ নিতে চাননি। তৃণমূলের পাপের বোঝাও ওদেরই বইতে হবে।’’

এ দিকে, জাঙ্গিপাড়া ব্লকের কোতলপুর পঞ্চায়েতের দুই যুব তৃণমূল নেতা শেখর দলুই, অভিজিৎ কুণ্ডু-সহ তিন জন শুক্রবার ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দিয়েছেন বলে পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে।

Jangipara Amphan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy