নিস্তারিনী কালীমন্দির চত্বরে পুজো-সামগ্রীর দোকান শুভাশিস অধিকারীর। আগে তিনি জিনিস বেচতেন প্লাস্টিকের ব্যাগে। গত কয়েক মাস ধরে দিচ্ছেন কাপড়ের ব্যাগ। শুধু শুভাশিস নন, বৈদ্যবাটী পুর-এলাকার বাজার-দোকানে প্লাস্টিক ব্যাগের পাট কার্যত চুকে গিয়েছে। বাজারে গেলে বাড়ি থেকে ব্যাগ নিতে ভুলছেন না শহরবাসী। খালি হাতে গেলে কাপড়ের ব্যাগ ধরাচ্ছেন দোকানদার।
বছর দু’য়েক আগেও ছবিটা এরকম ছিল না। এমনিতেই, বৈদ্যবাটী পুরসভায় নিকাশি ব্যবস্থার হাল বেশ খারাপ। নালা-নর্দমায় প্লাস্টিকের ব্যাগ জমে পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হয়ে ওঠে। পরিবেশপ্রেমীরা এ নিয়ে সরব হন। বছর দেড়েক আগে পুরসভার ১৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্লাস্টিকমুক্ত শহর গড়ার ডাক দেন পুর-কর্তৃপক্ষ। সেই মতো প্রচার চালানো হয়। মাইকে ঘোষণা, ফ্লেক্স লাগানো, দোকানে-বাড়িতে লিফলেট বিলি, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। কর জমা দিলে নাগরিকদের দেওয়া হয় চটের ব্যাগ। তবে এতেও পরিস্থিতি খুব একটা বদলায়নি। এরপর নির্দিষ্ট আইনের ভিত্তিতে কাউন্সিলরদের বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়, প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করলে জরিমানা করা হবে। সেই মতো দোকান-বাজারে হানা দিয়ে জরিমানা আদায়ও চলতে থাকে। নাগরিকদের তরফেও প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধের দাবিতে সভা করা হয়।
এই ধরণের নানা পদক্ষেপের ফলে ধীরে ধীরে প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ হয়। পুরপ্রধান অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘জরিমানা আদায় আমাদের লক্ষ্য নয়। তবে এক শ্রেণির মানুষ কিছুতেই অভ্যাস বদলাচ্ছিলেন না। সেই কারণেই জরিমানার কথা ভাবতে হয়েছে।’’ পুরসভার স্যানিটারি ইনস্পেক্টর কৃষ্ণেন্দু মিত্র বলেন, ‘‘সর্বত্র নজরদারি চলছে। প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বন্ধ হওয়ায় নিকাশির সমস্যা অনেকটা মিটবে বলেই আশা করছি।’’