Advertisement
১৮ মে ২০২৪

কারখানায় কাজে যোগ দিলেন অনেকে, গোলমাল সামান্যই

কোথাও কারখানার ‘ভোঁ’ শুনেই অন্য দিনের মতো হাজির হলেন শ্রমিকেরা। কোথাও এক শিফ্‌টে কাজ হলেও পরের শিফ্‌টে দেখা মিলল না বেশির ভাগ শ্রমিকের। ব্যাহত হল স্বাভাবিক কাজকর্ম। সব মিলিয়ে হাওড়া-হুগলির শিল্পাঞ্চলগুলিতে মিশ্র চিত্র দেখা গেল শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ধর্মঘটে।

কর্মী কম থাকায় নোটিস দিয়ে শুক্রবারের মতো ডালহৌসি কারখানা কর্তৃপক্ষ।

কর্মী কম থাকায় নোটিস দিয়ে শুক্রবারের মতো ডালহৌসি কারখানা কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব প্রতিবেদন‌
শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৫৪
Share: Save:

কোথাও কারখানার ‘ভোঁ’ শুনেই অন্য দিনের মতো হাজির হলেন শ্রমিকেরা। কোথাও এক শিফ্‌টে কাজ হলেও পরের শিফ্‌টে দেখা মিলল না বেশির ভাগ শ্রমিকের। ব্যাহত হল স্বাভাবিক কাজকর্ম। সব মিলিয়ে হাওড়া-হুগলির শিল্পাঞ্চলগুলিতে মিশ্র চিত্র দেখা গেল শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ধর্মঘটে।

ল্যাডলো, গ্লস্টার লিমিটেড, বাউড়িয়া জুটমিল-সহ অন্য জুটমিল এবং বীরশিবপুর গ্রোথ সেন্টারে কমবেশি কাজ হয়েছে। তবে ল্যাডলো জুটমিলে সকালের শিফ্‌টে শ্রমিকেরা কাজ করতে গেলে বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনের তরফে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরে যদিও শ’খানেক শ্রমিক কাজে যোগ দেন। বাউড়িয়া জুটমিলে শ’তিনেকের বেশি শ্রমিক কাজ করেছেন। এই জুটমিলে সকাল থেকেই দু’পক্ষের শ্রমিক নেতারা হাজির হন। দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতিও হয় বলে সূত্রের খবর। সিটুর হাওড়া জেলা সম্পাদক কৃষ্ণস্বপন মিত্র বলেন, ‘‘শ্রমিক শ্রেণির মধ্যে ধর্মঘটের প্রভাব যথেষ্ট পড়েছে। ধর্মঘট সফল।’’

অন্য দিকে, তৃণমূলের হাওড়া (গ্রামীণ) সভাপতি পুলক রায় বলেন, ‘‘মানুষ কর্মনাশা ধর্মঘট আর চান না। তাই তাঁরা পথে নেমে বাম শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ধর্মঘট ব্যর্থ করেছেন।’’ হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘কোথাও সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেনি।’’

কাজ চলছে বাউড়িয়া জুটমিলে।

হুগলির ভদ্রেশ্বরের নর্থ শ্যামনগর চটকলে সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। ধর্মঘটের সমর্থক এবং ধর্মঘট বিরোধী— দু’পক্ষই মিলের গেটের সামনে জড়ো হয়েছিলেন। অশান্তি এড়াতে পুলিশ দু’পক্ষকেই সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। চাঁপদানির ডালহৌসি চটকলে শ্রমিকদের উপস্থিতি ছিল নামমাত্র। সেখানে এ দিন কাজ হয়নি। নর্থব্রুক চটক‌লে প্রথম শিফ্‌টে উৎপাদন স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু তারপরে অধিকাংশ শ্রমিক ঢোকেননি। ফলে দ্বিতীয় শিফ্‌ট থেকে উৎপাদন বন্ধ করে দিতে হয়। অ্যাঙ্গাস চটকল চালু থাকলেও শ্রমিকদের হাজিরা ছিল অন্যান্য দিনের তুলনায় কম। শ্রীরামপুরের ইন্ডিয়া চটকলেও শ্রমিকদের হাজিরা ছিল খুব কম।

তবে চাঁপদানির জিআইএস কটন মিল, ভিক্টোরিয়া চটকল, চন্দননগরের গোন্দলপাড়া চটকল বা বাঁশবেড়িয়ার গ্যাঞ্জেস চটকলে শ্রমিকদের উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিক। ডানকুন‌ি শিল্পাঞ্চলে কোল ইন্ডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন বেসরকারি কারখানায় কাজ হয়েছে। কয়েকটি কারখানায় অবশ্য উৎপাদন বন্ধ ছিল। সকালে এখানকার কয়েকটি কারখানার সামনে অবস্থান করেন এসইউসি-র শ্রমিক সংগঠন ইউটিইউসি-র কর্মীরা।

এসইউসি নেতা সন্তোষ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ভয় দেখিয়েও শিল্পাঞ্চলে স্বাভাবিক ভাবে কল-কারখানায় উৎপাদন‌ করাতে পারেনি প্রশাসন। উল্টে শ্রমিকেরা ধর্মঘটের পক্ষেই সায় দিয়েছেন হাজির না হয়ে। সরকারি দফতরের কর্মীদের শাস্তির ভয় না দেখালে সেখানেও সব কিছু ফাঁকা থাকত। তবে সেখানে কিছু কর্মী গেলেও সাধারণ মানুষ ছিলেন না।’’

তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্তের অবশ্য দাবি, ‘‘জেলার সব জায়গাতেই মানুষ পথে নেমেছেন। বাজার-হাট থেকে শুরু করে অফিস-কাছারি বা কল-কারখানা কোথাও বন্‌ধের প্রভাব পড়েনি। রাস্তায় নেমেই সাধারণ মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, কর্মনাশা ধর্মঘট তাঁরা চান না।’’

ছবি: তাপস ঘোষ ও সুব্রত জানা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jute company Worker
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE