অধিগ্রহণ করা জমিতে ফলেছে ফসল।-দীপঙ্কর দে।
ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও টাকা পাননি অধিগ্রহণ করা জমির বর্গাদাররা। ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁদের অনেকেই প্রকল্প এলাকায় চাষ শুরু করে দিয়েছেন। জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, ‘‘নথিভুক্ত বর্গাদাররা অবশ্যই টাকা পাবেন। কেন এখনও পাননি, তা দেখে শীঘ্রই টাকা মেটানোর ব্যবস্থা করা যাবে।’’
কয়েক দশক আগে হাওড়া ও হুগলির সংযোগকারী বকপোতা সেতু তৈরি হয় দামোদরের উপরে। কিন্তু কালের নিয়মে সেতুটি জীর্ণ হয়ে পড়েছিল। সেতুতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ২০১৪ সালের মে মাসে সেটিকে গাড়ি চলাচলের পক্ষে ‘বিপজ্জনক’ ঘোষণা করা হয়। দু’চাকার গাড়ি ছাড়া অন্য সব যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধুমাত্র চলছে পাশেই নতুন একটি সেতু তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সে জন্যই দামোদরের দুই পাড়ে জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হয়।
প্রথমে জাঙ্গিপাড়ার দিকে জমি অধিগ্রহণে সমস্যা হয়। চাষি ও বর্গাদারদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাসে সমস্যা মেটে। এর পরেই জাঙ্গিপাড়ার অংশে ১২ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করা হয়। নতুন সেতু তৈরির কাজও শুরু হয়ে যায়। বর্তমানে নদের উপর পিলার তৈরির কাজ চলছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, চুক্তি অনুযায়ী চাষিদের টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শতাধিক বর্গাদার এখনও টাকা হাতে পাননি বলে অভিযোগ।
দামোদরে তৈরি হচ্ছে নতুন পিলার।
প্রাপ্য না পেয়ে ক্ষুব্ধ বর্গাদারদের একাংশ ইতিমধ্যেই প্রকল্পের জমিতে চাষ শুরু করে দিয়েছেন। কেউ আলু চাষ করছেন। কেউ বুনেছেন সর্ষেবীজ। বর্গাদার লোকনাথ ঘোষ, অশোক পাত্ররা বলেন, ‘‘সেতু বন্ধ থাকায় ফসল নিয়ে ওপারে যেতে সমস্যা হচ্ছে। এখানকার বহু মানুষ উদয়নারায়ণপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। ঘুরপথে সেখানে যেতে হচ্ছে। গ্রামবাসীদের অসুবিধার কারণেই প্রশাসনের কথা আমরা মেনে নিই। কিন্তু আমাদের প্রাপ্য এখনও কেন প্রশাসন দিল না?’’
জমি অধিগ্রহণের জন্য তৈরি কমিটির সদস্য, রশিদপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান স্বপন পাত্রের অবশ্য বলেন, ‘‘চুক্তি মতো বর্গাদারদের টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে। ওঁদের তা বোঝানো হয়েছে। কিন্তু কিছু বর্গাদার জমিতে ফসল লাগিয়ে ফেলেছেন। ওঁদের সঙ্গে আবারও কথা বলা হবে।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন সেতুর কাজ শেষ করার সময় ধরা হয়েছে। তাই কিছুটা সমস্যা এড়াতে দেড় বছর পরে পুরনো সেতু সংস্কারের হাত দিয়েছে পূর্ত দফতর (সড়ক)। আপাতত নতুন সেতু তৈরি না হওয়া পর্যন্ত পুরনো সেতু দিয়ে ছোট এবং হালকা চার চাকার গাড়ি চলাচল করবে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, এটা যদি দেড় বছর আগে করা হতো, তা হলে এতদিন ভোগান্তি পোহাতে হতো না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy