Advertisement
E-Paper

এ বার ভোট দেবেন না তৃণমূল-বিজেপির মা

সুমিত্রাদেবীর বড় ছেলে দীনবন্ধু জাটী এ বার তৃণমূল প্রার্থী। আর ছোট চন্দ্রশেখর বিজেপি। একই ছাদের তলায় বাস। স্ত্রী-ছেলেমেয়ে আর মাকে নিয়ে দু’ভাইয়ের সংসার। বড় ভাইয়ের সোনার দোকান, ছোটর ওষুধের ব্যবসা। স্বচ্ছল পরিবারে অশান্তি নেই বললেই চলে।

সুব্রত জানা

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৮ ০০:০৯
যুযুধান: মায়ের সঙ্গে বাড়িতে তৃণমূল প্রার্থী দীনবন্ধু ও বিজেপি প্রার্থী চন্দ্রশেখর।

যুযুধান: মায়ের সঙ্গে বাড়িতে তৃণমূল প্রার্থী দীনবন্ধু ও বিজেপি প্রার্থী চন্দ্রশেখর।

এ বার আর ভোট দেবেন না আমতার সুমিত্রা জাটী। এই তো গত মাসে তাঁকে প্রণাম করে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে এসেছেন আমতা-১ ব্লকের খড়দহ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১১ নম্বর বুথের বিজেপি ও তৃণমূল প্রার্থী। এখন প্রচার চলছে জোরদার। রোজই তাঁকে প্রণাম করে প্রচারে যায় বিজেপি-তৃণমূল। ভোট তিনি কাউকে দিতে পারবেন না— জানিয়ে দিয়েছেন।

সুমিত্রাদেবীর বড় ছেলে দীনবন্ধু জাটী এ বার তৃণমূল প্রার্থী। আর ছোট চন্দ্রশেখর বিজেপি। একই ছাদের তলায় বাস। স্ত্রী-ছেলেমেয়ে আর মাকে নিয়ে দু’ভাইয়ের সংসার। বড় ভাইয়ের সোনার দোকান, ছোটর ওষুধের ব্যবসা। স্বচ্ছল পরিবারে অশান্তি নেই বললেই চলে। তবে রাজনীতি তাঁদের আলাদা করেছে। নিজ নিজ মতাদর্শের বলে বলীয়ান দু’ভাই ভোটের ময়দানে একচুল জমি ছাড়তে চান না।

ভোট আবহে সরগরম এক সকালে তাঁদের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল দাদাকে মোটরবাইক বের করে দিচ্ছেন চন্দ্রশেখর। ঘরের ভিতর টেবিলে বসে ছেলেমেয়েদের খাওয়াচ্ছেন বাড়ির দুই বৌ— তুলিকা আর পম্পা। বড় পরিচিত এক পারিবারিক ছবি। ভোটের কথা উঠতেই অবশ্য বেরিয়ে পড়ল লড়াইয়ের ভিতরের কথা। দীনবন্ধু বললেন, ‘‘তৃণমূল সরকার উন্নয়ন করেছে। মানুষ উন্নয়ন দেখেছে, তাঁরাই রায় দেবেন।’’ তবে তিনি জানিয়েছেন, রাজনীতির সঙ্গে পরিবারের কোনও বিরোধ নেই। বলেন, ‘‘আমার ভাই বিজেপিকে সমর্থন করে তাই ওর দল ওকে প্রার্থী করেছে। মানুষ যাকে ভোট দেবে সে জিতবে।’’ ভাই চন্দ্রশেখর অবশ্য বলেন, ‘‘দাদাকে ভুল বুঝিয়ে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। গত লোকসভা ভোটের নিরিখে আমাদের পঞ্চায়েতে অনেক পিছিয়ে তৃণমূল। তাই শুধু ভোট ভাগাভাগিরই জন্য দাদাকে আমার বিরুদ্ধে প্রার্থী করেছে ওরা।’’

তবে কি লড়াই এ বার ঘরের মধ্যেই?

দু’ভাই সাফ জানিয়েছেন, তেমন হওয়ার জো নেই। চন্দ্রশেখর বলেন, ‘‘তৃণমূল ভেবেছে আমাদের ঘরে ঘরে ঝগড়া লাগাবে! ভুল করছে। ভোটের দিন যদি আমার ওপর হামলা হয় তবে তো আমার দাদাই রুখে দাঁড়াবে। আবার আমার দাদাকে বাঁচানোর দায়িত্বও আমার।’’

সারাদিন প্রচার চলে গ্রাম জুড়ে। রাতে বাড়ি ফিরলে সে সবের আঁচ থাকে না— জানালেন পম্পা, তুলিকা। তুলিকা বলেন, ‘‘রাতে সবাই একসঙ্গে খাই। তখন শুধু বাড়ির ভাল-মন্দ আলোচনা হয়।’’ পম্পা আবার জানান, খুব মজা হচ্ছে এই ভোট নিয়ে। প্রতিবেশীরা নাকি ফল নিয়ে উৎসাহী— কে জেতে! আর মা সুমিত্রাদেবী বলেন, ‘‘বড় ছেলেকে ভোট দিলে ছোট ছেলের ভোট কমবে, আবার ছোটকে দিলে বড়র ভোট কমবে। তার চেয়ে কাউকে ভোট না দেওয়াই ভাল। যে-ই জিতুক— সে তো আমারই।’’

West Bengal Panchayat Elections 2018 Mother TMC BJP তৃণমূল বিজেপি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy