Advertisement
E-Paper

প্রার্থী নিয়ে তৃণমূলের ক্ষোভ দুই জেলাতেই

এক জায়গায় চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হয়েছে ৩ দিন আগে। সে তালিকায় বদলের ইঙ্গিত দিচ্ছেন নেতৃত্ব। কারণ, দলের অন্দরে ক্ষোভ। অন্য জায়গায় তালিকা সবে চুড়ান্ত হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই শুরু বিক্ষোভ। রবিবার পর্যন্ত আরামবাগে শাসক দলের কোনও প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেননি। তৃণমূলেরই একটি সূত্রের দাবি, টিকিট না পেয়ে কেউ নির্দল প্রতীকে দাঁড়ানো বা বিজেপি সমর্থনের হুমকি দিচ্ছেন। তাই প্রার্থীদের এখনই মনোনয়ন জমা দিতে বারণ করা হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৫ ০১:৩১
বিক্ষোভ বাউরিয়ায়।—নিজস্ব চিত্র।

বিক্ষোভ বাউরিয়ায়।—নিজস্ব চিত্র।

এক জায়গায় চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হয়েছে ৩ দিন আগে। সে তালিকায় বদলের ইঙ্গিত দিচ্ছেন নেতৃত্ব। কারণ, দলের অন্দরে ক্ষোভ। অন্য জায়গায় তালিকা সবে চুড়ান্ত হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই শুরু বিক্ষোভ।

রবিবার পর্যন্ত আরামবাগে শাসক দলের কোনও প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেননি। তৃণমূলেরই একটি সূত্রের দাবি, টিকিট না পেয়ে কেউ নির্দল প্রতীকে দাঁড়ানো বা বিজেপি সমর্থনের হুমকি দিচ্ছেন। তাই প্রার্থীদের এখনই মনোনয়ন জমা দিতে বারণ করা হয়।

ক্ষোভ-বিক্ষোভ যাতে দ্রুত সামাল দেওয়া যায়, তার জন্য রবিবারই দুপুর থেকে সন্ধ্যা দলের বিক্ষুব্ধ নেতা-সহ সব পক্ষকে নিয়ে দু’দফায় বৈঠক করেন আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দার এবং বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা। বিধায়ক বলেন, “প্রার্থী নিয়ে দলে ক্ষোভ-বিক্ষোভ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। দু’একটি নাম বদল হতে পারে। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ অনুযায়ী বিষয়টি সোমবার চূড়ান্ত হবে।”

সাংসদ জানান, এক-একটি ওয়ার্ড থেকে ৪-৫ জন করে প্রার্থী-পদের দাবিদার থাকতেই পারে। দল বিবেচনা করে যাঁদের টিকিট দিয়েছে, তাঁদেরই মনোনয়নপত্র দাখিল করার কথা।

আরামবাগ পুর এলাকায় এ বার ওয়ার্ডসংখ্যা একটি বেড়ে হয়েছে ১৯। গত পুর নির্বাচনে জেতা চার মহিলা কাউন্সিলরকে বাদ দিয়ে এ বার সাতটি ওয়ার্ডে নতুন মহিলা প্রার্থী করেছে তৃণমূল। এ নিয়ে দলের অন্দরে যেমন ক্ষোভ রয়েছে, তেমনই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতাদের অনেকেই দাবি করেছেন, সাসংদ, বিধায়ক এবং বিদায়ী পুরবোর্ডের চেয়ারম্যান স্বপন নন্দীর সই করা প্রস্তাবিত যে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়েছিল, তা থেকে রহস্যজনক ভাবে তিন জনের নাম বাদ গিয়েছে। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মিতা দে’র বদলে প্রার্থী করা হয়েছে দীপালি চট্টোপাধ্যায়কে, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সুজিত গঙ্গোপাধ্যায়ের বদলে প্রার্থী হন তাঁর দাদা গৌতম গঙ্গোপাধ্যায়। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে হিমাংশু মালিকের জায়গায় প্রাথী শিবনারায়ণ মালিক। ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে গত বার সিপিএমের টিকিটে জেতা এবং পরে তৃণমূলে আসা সুজিত রেজাকেও এ বার প্রার্থী করা নিয়ে ক্ষোভ গোপন রাখেননি বেশ কিছু তৃণমূল নেতা।

বিক্ষুব্ধ ওই নেতাদের অভিযোগ, ওয়ার্ডভিত্তিক বৈঠক না করেই বিধায়ক ও স্বপনবাবু অধিকাংশ ওয়ার্ডে নিজের পছন্দের লোকদের নাম প্রার্থী হিসেবে প্রস্তাব করেছেন। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বিধায়ক। তাঁর দাবি, “প্রতিটি ওয়ার্ডে বৈঠক করেই তালিকা পাঠানো হয়। পছন্দ-অপছন্দের কোনও প্রশ্ন নেই। যে অদল-বদল হয়েছে তা দলের সিদ্ধান্ত।” একই দাবি স্বপনবাবুরও।

প্রার্থী নিয়ে শাসক দলের বিক্ষোভ প্রকাশ্যে উলুবেড়িয়াতেও। রবিবারই প্রার্থী-তালিকা চূড়ান্ত হয় তৃণমূলের। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী দলের যুবনেতা কৌশিক দাস। সীমানা পুনর্বিন্যাসের আগে ওই ওয়ার্ড ছিল ২৩ নম্বর। গত ২০১০ সালের পুরভোটে সেই ওয়ার্ড থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছিলেন সাধনা বারিক। পরে যান তৃণমূলে। তাঁকে এ বার টিকিট দেয়নি তৃণমূল। এ কথা জানতে পেরেই রবিবার ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাধনাদেবীর অনুগামীরা। তাঁরা বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মিছিলও করা হয়।

সাধনাদেবীর দাবি, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে দলের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ সংগঠিত করেছেন। তাঁর ক্ষোভ, “আমাকে মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হল। দলীয় নেতৃত্ব শনিবার রাত পর্যন্ত আমাকে বলেছিলেন, নিশ্চিন্ত থাকো। তুমিই প্রার্থী হচ্ছো। সকালে জানতে পারলাম আমি প্রার্থী নয়।” সাধনাদেবী যখন কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছিলেন তখন আসনটি ছিল তফসিলি জাতি (মহিলা) সংরক্ষিত। এ বারে সাধারণ।

বিক্ষোভের কথা মানতে চাননি মানেননি উলুবেড়িয়া দক্ষিণেরর তৃণমূূল বিধায়ক পুলক রায়। তাঁর দাবি, “দল নির্বাচন কমিটি গড়ে ৩২টি ওয়ার্ডে প্রার্থী ঠিক করেছে। এটা দলীয় সিদ্ধান্ত।” সাধনাদেবীকে ‘ভাল কর্মী’ ও ‘দক্ষ সংগঠক’ হিসেবে মেনে নিয়ে সাংসদ সুলতান আহমেদ বলেন, “আসন যদি মহিলা তফসিলির জন্য সংরক্ষিত থাকত, তা হলে তিনিই প্রার্থী হতেন। দলের সিদ্ধান্ত সকলকে মানতে হবে।”

tmc candidate list agitation uluberia arambagh southbengal municipal election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy