নির্বিচারে এই বনাঞ্চল থেকেই চলছে গাছ কাটা। আরামবাগের চাঁদুর রেঞ্জে। ছবি: মোহন দাস
বেআইনি ভাবে বালি তোলার জন্য ভাঙছে নদীর পাড়। চুরি হচ্ছে একের পর এক গাছ। দখল হয়ে যাচ্ছে বনভূমির জমি।
আরামবাগ চাঁদুর রেঞ্জের বনভূমির অবস্থা এখন এমনই। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বন দফতরের উদাসীনতাতেই ঘটছে এই ঘটনা। বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেগুন, শিশু, শাল, শিরিষ ইত্যাদি গাছ নিয়ে ঘেরা আরামবাগের চাঁদুর রেঞ্জে বনভূমি এলাকা হল প্রায় ৬৪০ একর। হুগলির আরামবাগ ও গোঘাট, বর্ধমানের মাধবডিহি থানা এলাকার ৫টি ‘বিট’ নিয়ে এই বনভূমির বিস্তৃতি। বনভূমিটির অধিকাংশ জায়গাতেই বনকর্মী নেই। পাঁচটি ‘বিট’ মিলিয়ে একজন রেঞ্জ অফিসার, একজন বিট অফিসার ছাড়া করণিক এবং বনরক্ষী মিলিয়ে রয়েছেন মাত্র ৭ জন। মাধবডিহির বাবলা বিটে তো কোনও কর্মীই নেই।
বনকর্মী কম থাকায় নজরদারিতে সমস্যা হচ্ছে বলে মেনে নিয়েছেন আরামবাগ রেঞ্জ অফিসার নির্মল মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘বনভূমি রক্ষার জন্য আমাদের মূল ভরসা স্থানীয় মানুষ এবং ক্লাব।’’ তাঁর দাবি, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা নিয়ে লাগাতার প্রচারে সুফল মিলছে। আগের তুলনায় গাছ চুরি অনেক কমে গিয়েছে।
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ অবশ্য নির্মলবাবুর দাবি মানতে রাজি নন। তাঁদের অভিযোগ, শাসক দলের একাংশে প্রশয়ে পারআদ্রা এবং ভাবাপুর মৌজায় প্রতিদিন গাছ কাটা চলছে। কোনও কোনও জায়গায় গাছ কাটার কারণ হিসেবে মৃতদেহ সৎকার কিংবা গরিব পরিবারের মেয়ের বিয়ের খরচ তোলার কারণ দেখানো হচ্ছে। সম্প্রতি কয়েকটি ক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দারা গাছ চোরেদের ধরেও ফেলেন।
হুগলি ও হাওড়া দু’টি জেলা মিলিয়েই বন দফতরের হাওড়া ডিভিশন। এই ডিভিশনের ফরেস্ট অফিসার নিরঞ্জিতা মিত্র গত বৃহস্পতিবার আরামবাগের দ্বারকেশ্বর নদীর দু’পাড়ের বাঁধ অবস্থা খতিয়ে দেখতে আসেন। নিরঞ্জিতাদেবী বলেন, “বালি তোলা নিয়ে আমাদের কিছু করার এক্তিয়ার নেই। তবে নদীবাঁধের ভাঙনে বনভূমির ক্ষতি হচ্ছে। আমরা কয়েকটি জায়গায় বোল্ডার পিচিং করে নদী বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করেছি।” তবে গাছ চুরির অভিযোগ মানেননি তিনি। বনকর্মীর অপ্রতুলতা নিয়ে তিনি জানান, রাজ্য সরকার কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy