চাষিদের স্বার্থে রামপুর খাল খনন করেছিল সেচ দফতর। বছর খানেক ধরে কোটি কোটি টাকা খরচ করে বর্ষার আগে সেই কাজ শেষ হয়। আর এখন সেই খাল সংস্কারই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে হাওড়ার আমতা ২ নম্বর ব্লকের কয়েকশো আলু ও সবজি চাষির। দু’হাজার বিঘারও বেশি জমিতে চাষ করা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চাষিদের অভিযোগ, সংস্কারের সময় বেশি করে খননের জন্য রামপুর খালের গভীরতা এখন সংলগ্ন অন্যান্য খাল ও মজা দামোদরের থেকে অনেক বেশি। ফলে রামপুর খালে জল এলেও তা ওই খাল সংলগ্ন নিকাশি ও ন্যাচা (তুলনায় ছোট নিকাশি খাল) খালগুলি ও মজা দামোদরের মাধ্যমে মাঠে পৌঁছতে পারছে না। ফলে জলের অভাবে চাষ নিয়ে রীতিমত আশঙ্কায় চাষিরা।
তাঁদের অভিযোগ, সেচ দফতর বিশেষ কোনও ব্যবস্থা না নিলে এই শীতে রবি শস্য এবং আলু চাষের ক্ষেত্রে চাষিরা খুবই সমস্যায় পড়বেন। সেচ দফতর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি নিকাশি ও ন্যাচা খাল দ্রুত সংস্কার করে রামপুর খাল থেকে জল ঢোকানোর ব্যবস্থা করলে সমস্যার কিছুটা সুরাহা হতে পারে। এ ছাড়া ডিভিসির জল বোরো চাষের আগে রবি মরসুমে একবার আনানোর ব্যবস্থা করলে চাষিদের সমস্যা মিটবে। চাষিদের বক্তব্য, বন্যার ফলে এ বার চাষের ক্ষতি হয়েছে। তার উপর যদি ফের জলের অভাবে রবি চাষও মার খায় তাহলে সংসার চালানোই দায় হয়ে দাঁড়াবে।
আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র চাষিদের সমস্যা সমাধানে ইতিমধ্যেই সেচমন্ত্রী ও সেচ দফতরের কর্তাদের সঙ্গে দেখা করে স্থানীয় নিকাশি খাল ও ন্যাচা খাল দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবেই হোক, চাষিরা যাতে জল পান সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে। তা সে খাল সংস্কার করেই হোক বা ডিভিসি থেকে জল আনানোর মাধ্যমেই হোক।’’
সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই এলাকার চাষিদের সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা চেষ্টা করছি। দফতরের বাস্তুকারদেরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ সেচ দফতরের আমতা শাখার এডিও স্বপন দত্ত বলেন, ‘‘সেচমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা ইতিমধ্যেই মজা দামোদরের কিছুটা অংশে খনন শুরু করেছি। এতে চাষিদের সমস্যা অনেকটাই মিটবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ডিভিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলা হবে।’’
সেচ দফতরের কর্তাদের দাবি, একদিকে দামোদর নদের অতিরিক্ত জল বাইপাস করে উদয়নারায়ণপুর ও আমতায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং অন্যদিকে চাষের মরশুমে জলের ব্যবস্থা—এই দুইয়ের লক্ষ্যে সংস্কার করা হয় রামপুর খাল। প্রায় তিন ফুট গভীর করে খালটি খনন করা হয়। আর তাতেই বিপত্তি বেধেছে বলে দাবি চাষিদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy