Advertisement
E-Paper

জলে তলিয়ে আরামবাগে মৃত্যু ৪ জনের

শনিবার সকালে মৃত্যু হয় খানাকুলের পূর্ব রাধানগর গ্রামের দাস পাড়ার বাসিন্দা পায়েল দাস (১৭) নামে এক কিশোরীর। বাড়ির সামনের মুদিখানার দোকানে যাওয়ার সময়ে রাস্তায় জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছিল সে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে উদয়নারায়ণপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ০১:৪৩
প্লাবিত: খানাকুলের জলে ডোবা এলাকা পারাপারে ভরসা ভেলা । নিজস্ব চিত্র

প্লাবিত: খানাকুলের জলে ডোবা এলাকা পারাপারে ভরসা ভেলা । নিজস্ব চিত্র

নতুন করে জল তেমন না বাড়লেও জলে তলিয়ে নতুন করে প্রাণহানির ঘটনা ঘটল আরামবাগ মহকুমায়। শুক্রবার এবং শনিবার মিলিয়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছে এখানে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে খানাকুলের মাইনান গ্রামের খানপাড়ায় আনসারি খান (৬০) নামে এক বৃদ্ধ পা হড়কে বাড়ির সামনে জমা জলে তলিয়ে যান। স্থানীয় বাসিন্দারা শুক্রবার সন্ধ্যায় দেহটি উদ্ধার করেন। ওই রাতেই পুরশুড়ার তকিপুরে সমীর ভৌমিক (৪০) ওরফে ক্যাবল নামে এক ব্যক্তি তকিপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে বাড়ি ফেরার সময়ে রাস্তার জলে তলিয়ে যান। শনিবার সকালে গ্রাম সংলগ্ন মাঠের পাট খেত থেকে তাঁর দেহটি উদ্ধার হয়।

শনিবার সকালে মৃত্যু হয় খানাকুলের পূর্ব রাধানগর গ্রামের দাস পাড়ার বাসিন্দা পায়েল দাস (১৭) নামে এক কিশোরীর। বাড়ির সামনের মুদিখানার দোকানে যাওয়ার সময়ে রাস্তায় জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছিল সে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে উদয়নারায়ণপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। জলে ভেসে মৃত্যু হয়েছে ওই গ্রামেরই বাসিন্দা চম্পা দাসের (৪৫)। তিনি শনিবার সকাল থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। এ দিন সন্ধ্যায় এডিআরএফের কর্মীরা তাঁর দেহ উদ্ধার করেন।

মুণ্ডেশ্বরী সেচ দফতরের সহকারী বাস্তুকার সোমনাথ ঘোষ বলেন, “শনিবার বিকেল তিনটে পর্যন্ত দামোদরের জল চরম বিপদসীমার উপর দিয়ে বইলেও মুণ্ডেশ্বরী নদীর জল চরম বিপদসীমা থেকে প্রায় ১ মিটার নেমেছে।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খানাকুল এবং পুরশুড়ার সব রাস্তায় শনিবার রাত পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ ছিল। আরামবাগ থেকে কলকাতা এবং তারকেশ্বর সংযোগকারী রাস্তাও জল জমে বন্ধ রয়েছে। পুরশুড়ার আটটি পঞ্চায়েত এলাকাই জলমগ্ন রয়েছ। পুরশুড়া বিডিও অফিসেও জল ঢুকে গিয়েছে।

শুক্রবারের পরে শনিবারও ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ করেছেন দুর্গতদের একাংশ। খানাকুলের মাড়োখানা, বালিপুর, চিংড়া, শাবলসিংহপুর এলাকায় ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। পুরশুড়া এবং আরামবাগের বিভিন্ন এলাকাতেও প্রায় একই অবস্থা। এ দিন পুরশুড়ার ঘোলদিগরুইতে ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান দুর্গতরা। চিকিৎসা পরিষেবা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। আরামবাগ মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক সিদ্ধার্থ দত্ত বলেন, “গ্রামীণ স্বাস্থ্যকর্মী এবং আশা কর্মীদের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসার পর্যাপ্ত ওষুধ দেওয়া রয়েছেন। চিকিৎসকেরাও বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন।’’

এর মধ্যে আবার দলীয় ত্রাণের দখলদারি নিয়ে পুরশুড়ার প্রাক্তন বিধায়ক পারভেজ রহমান এবং বর্তমান বিধায়ক মহম্মদ নূরুজ্জামানের অনুগামীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। যদিও তৃণমূল বিষয়টি স্বীকার করেনি।

আরামবাগের মহকুমা শাসক প্রীতি গোয়েল বলেন, “মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ত্রাণের ব্যবস্থা হচ্ছে। স্বাস্থ্য, সেচ, জনস্বাস্থ্য, পূর্ত-সহ সংশ্লিষ্ট সব দফতরগুলি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করছে।”

Arambagh Flood Dead আরামবাগ বন্যা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy