Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ট্রাকভর্তি মাছ, ডিম নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা, সৌজন্যে ৫০০, ১০০০

৫০০ ও ১০০০ টাকার সমস্যায় সাধারণ মানুষ তো জেরবার হচ্ছেনই। পরিবহণ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে মাছ, ডিম সহ অন্য ব্যবসায়ীরাও যে সঙ্কটে তা দেখা গেল হাওড়ার উলুবেড়িয়ায়। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লরিতে করে আনা মাল লরিতেই পড়ে থাকছে দিনের পর দিন। মঙ্গলবার উলুবেড়িয়ায় মুম্বই রোডে দেখা গেল সারি দিয়ে মালবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে।

উলুবেড়িয়ায় পার্কিং লটে দাঁড়িয়ে মালবোঝাই ট্রাক। ছবি: সুব্রত জানা।

উলুবেড়িয়ায় পার্কিং লটে দাঁড়িয়ে মালবোঝাই ট্রাক। ছবি: সুব্রত জানা।

মনিরুল ইসলাম
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৩২
Share: Save:

৫০০ ও ১০০০ টাকার সমস্যায় সাধারণ মানুষ তো জেরবার হচ্ছেনই। পরিবহণ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে মাছ, ডিম সহ অন্য ব্যবসায়ীরাও যে সঙ্কটে তা দেখা গেল হাওড়ার উলুবেড়িয়ায়। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লরিতে করে আনা মাল লরিতেই পড়ে থাকছে দিনের পর দিন। মঙ্গলবার উলুবেড়িয়ায় মুম্বই রোডে দেখা গেল সারি দিয়ে মালবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে। মালপত্র নেওয়ার জন্য আড়তদারদের ভিড় নেই। ফলে মাল নষ্টের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে ট্রাকচালকদের অভিযোগ।

অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে মাছ, ডিম নিয়ে উলুবেড়িয়ায় এসেছে ১৫-২০টি ট্রাক। সেখানের এক পার্কিং প্লেসে লরিগুলো রয়েছে। নিয়মমতো এখান থেকেই বড় বড় আড়তদারদের কাছে মাছ চলে যায়। হাওড়া, কলকাতা, বেহালা, শিয়ালদহ থেকে শুরু করে নদিয়ার রানাঘাট, হুগলির শ্রীরামপুর সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সেই মাছ, ডিম পৌঁছে যায়। কিন্তু এ বার তা না হওয়ায় কপালে ভাঁজ পড়েছে ট্রাকচালকদের।

নদীয়ার তেহট্টের একটি বেসরকারি পরিবহণ সংস্থার ট্রাকচালক মহাভারত বিশ্বাস গত ১২ নভেম্বর উলুবেড়িয়ার ওই পার্কিং প্লেসে লরি নিয়ে পৌঁছেছেন। তিনি বলেন, পরিবহণ সংস্থা ও ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে আমাদের বলা হয় কোথায় মাল নিয়ে যেতে হবে। সেই অনুযায়ী আমরা উলুবেড়িয়া থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মাল পৌঁছে দিই। কিন্তু এখন কারও পক্ষ থেকেই আমাদের বলা হচ্ছে না কোথায় মাল নিয়ে যাব। ফলে চার দিন ধরে এখানে আটকে রয়েছি।’’ কৃষ্ণনগরের এক পরিবহণ সংস্থার ট্রাকচালক সুব্রত ঘোষও অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে মাছ নিয়ে এসেছেন ১৪ নভেম্বর। তিনিও জানালেন, কোথায় মাল পৌঁছে দিতে হবে সেই নির্দেশ না আসায় এখানে পড়ে থাকতে হচ্ছে। কাছে যে টুকু খুচরো টাকা ছিল তা শেষ। এখন কী করবনে ভেবে পাচ্ছেন না। কারণ আড়তদারদের ফোন করলে তাঁরা বলছেন, ‘নোটের সমস্যা না মিটলে মাল তুলতে পারবেন না’। কিন্তু এ ভাবে থাকলে মাছ আর বেশিদিন রাখা যাব না

উলুবেড়িয়ার এক পরিবহণ সংস্থার কর্তা সেখ খোকন বলেন, ‘‘আমরা মাল নিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার পর পুরনো নোটই দেওয়া হচ্ছে। সেই নোট আমরা চালাতে পারছি না। ফলে আমরাও অন্যত্র মাল নিয়ে যাচ্ছি না। ফলে রাজ্যের অন্য জায়গা থেকে যে মাল আনা হচ্ছে তাও পড়ে থাকছে।’’

হাওড়া হোলসেল ফিশ মার্কেটের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, ‘‘আমাদেরও মাছের গাড়ি উলুবেড়িয়ায় দাঁড়িয়ে আছে। মাছের পর্যাপ্ত চাহিদা না থাকায় সেই গাড়ি আনা যাচ্ছে না।’’ তিনি জানান, হাওড়া ফিশ মার্কেটে প্রতিদিন গড়ে ১০০০ মেট্রিক টন মাছের ব্যবসা হয়। কিন্তু বাজার না থাকায় মাত্র ৬০০ মেট্রিক টন মাছ আনা হচ্ছে। কারণ, পুরনো ৫০০, ১০০০ টাকার নোট। তাঁর প্রশ্ন, এ ভাবে ব্যবসা করা যায়?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Truck Uluberia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE