Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
কিসান মান্ডিতে আপত্তি দোকানিদের

যেতে নারাজ সরকারি অফিসও

বাজার বসা তো দূরঅস্ত, রাজ্য সরকারের তরফে চেষ্টা হয়েছিল অন্তত ব্লক কৃষি আধিকারিকের দফতরগুলি উঠে আসুক কিসান মান্ডির প্রশাসনিক ভবনে। সফল হয়নি সেই প্রচেষ্টাও। হাওড়া জেলায় তৈরি হওয়া কিসান মান্ডিগুলির এখন এমনই পরিস্থিতি।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০২:৩৭
Share: Save:

বাজার বসা তো দূরঅস্ত, রাজ্য সরকারের তরফে চেষ্টা হয়েছিল অন্তত ব্লক কৃষি আধিকারিকের দফতরগুলি উঠে আসুক কিসান মান্ডির প্রশাসনিক ভবনে। সফল হয়নি সেই প্রচেষ্টাও। হাওড়া জেলায় তৈরি হওয়া কিসান মান্ডিগুলির এখন এমনই পরিস্থিতি।

জেলায় মোট পাঁচটি কিসান মান্ডি তৈরি হওয়ার কথা। উলুবেড়িয়া ১, আমতা ১ এবং উদয়নারায়ণপুর ব্লকে তিনটি মান্ডি তৈরি হয়ে গিয়েছে বছর দেড়েক আগে। বাগনান ১ এবং শ্যামপুর ২ এই দুটি ব্লকে মান্ডি তৈরির কাজ চলছে। দুটি মান্ডির নির্মাণ কাজ শীঘ্রই শেষ হয়ে যাবে বলে কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে খবর। প্রতিটি মান্ডিতে বাজার সংক্রান্ত দৈনন্দিন বিষয় দেখভালের জন্য তৈরি হয়েছে প্রশাসনিক ভবন। ভবনগুলিতে যথেষ্ট জায়গা থাকায় রাজ্য সরকার ঠিক করেছিল ব্লক কৃষি আধিকারিকের দফতর ওই সব ভবন‌ে নিয়ে যাওয়া হবে। এখন ব্লক কৃষি আধিকারিকের দফতরগুলি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভাড়াবাড়িতে চলে। সে ক্ষেত্রে কিসান মান্ডিতে ওই দফতর উঠে এলে ভাড়া বাবদ সরকারের খরচ বাঁচবে।

কিন্তু সেখানেও দেখা দিয়েছে বিপত্তি। উলুবেড়িয়া ১ ব্লক কৃষি দফতর এবং উলুবেড়িয়া মহকুমা কৃষি আধিকারিকের দফতরের নিজস্ব ভবন অনেক আগে তৈরি হয়ে গিয়েছে। ফলে তারা মান্ডিতে যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। বিকল্প হিসাবে জেলা কৃষি দফতরকে জানানো হয়েছিল, উলুবেড়িয়ায় যদি সমবায় দফতর বা অন্য কোনও কৃষি সংক্রান্ত সরকারি অফিস থাকে তাদের যেন এখানে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু সেখানেও ফল মেলেনি। জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিক জানান, কোনও দফতর মান্ডিতে আসতে রাজি হচ্ছে না।

এর কারণ?

আমতা ১ ব্লক কৃষি দফতর এবং উদয়নারায়ণপুর ব্লক কৃষি দফতরকে সংশ্লিষ্ট দুটি মান্ডিতে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। দু’টি ক্ষেত্রেই বাধা দিয়েছেন কর্মীদের একটা বড় অংশ। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, ব্লক প্রশাসনিক ভবন থেকে দুটি মান্ডির দূরত্ব এতটাই যে অধিকাংশ কর্মীই সেখানে যেতে রাজি হচ্ছেন না। জেলা কৃষি দফতরের এক কর্তা জানান, গত ২৮ জানুয়ারি এক বৈঠকে রাজ্য কৃষি দফতর এবং কৃষি বিপণন দফতরের পদস্থ কর্তারা জেলার কিসান মান্ডিগুলির কী অবস্থা তা জানতে চান। সেখানে এ সব সমস্যা জানানো হয়েছে।

ক্ষমতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের প্রতি ব্লকে কিসান মান্ডি তৈরির পরিকল্পনা করেন। উদ্দেশ্য ছিল, চাষিরা এখানে সরাসরি তাঁদের ফসল বিক্রি করবেন। পাইকারি ও খুচরো দুই ধরনের ব্যবসাই হওয়ার কথা ছিল এখানে। কিন্তু উদয়নারায়ণপুর, আমতা ১ এবং উলুবেড়িয়া ১— তিনটি মান্ডি তৈরি হয়ে গেলেও এখনও কৃষি বাজার চালু হয়নি। খুচরো ব্যবসায়ীরা যাতে বসতে পারেন তার জন্য উলুবেড়িয়া মান্ডিতে ১৯ লক্ষ টাকা খরচ করে ছাউনি তৈরি করেছে কৃষি বিপণন দফতর। দফতরের কর্তারা জানান, ওখানে যাতে আনাজ বিক্রেতারা আসেন তার চেষ্টা চলছে। ১৯টি পাকা স্টল বিলিও করা হয়েছে। যদিও এসেছেন মাত্র একজন। তবে কোনও কৃষিজ পণ্য নয়, তাঁর দশকর্মার ব্যবসা।

জেলায় চাষিদের সুবিধার কথা তৈরি কিসান মান্ডিগুলির সাফল্য বলতে আপাতত এটুকুই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kisan Mandi Government office
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE