Advertisement
০৮ মে ২০২৪

নির্মল ভারত অভিযানে পিছিয়ে হাওড়া

২০১০ সালের মধ্যেই নির্মল জেলা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছিল হাওড়া। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে এ জন্য পুরস্কারও পেয়েছিল জেলা পরিষদ। কিন্তু ২০১৪ সালের গোড়ায় জেলা পরিষদেরই করা এক সমীক্ষায় ধরা পড়ে, অন্তত ১ লক্ষ ৬০ হাজার বাড়িতে শৌচাগারই নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৪৪
Share: Save:

২০১০ সালের মধ্যেই নির্মল জেলা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছিল হাওড়া। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে এ জন্য পুরস্কারও পেয়েছিল জেলা পরিষদ। কিন্তু ২০১৪ সালের গোড়ায় জেলা পরিষদেরই করা এক সমীক্ষায় ধরা পড়ে, অন্তত ১ লক্ষ ৬০ হাজার বাড়িতে শৌচাগারই নেই।

ফলে ফের নতুন করে এই ১ লক্ষ ৬০ হাজার বাড়িতে শৌচাগার তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়। আপাতত ঠিক হয়েছে, ২০১৭ সালের মধ্যে এইসব বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করা হবে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করার জন্য গত বছরের জুন মাস থেকেই নিমর্ল বাংলা গড়ার অভিযান শুরু হয়েছে। হাওড়া জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, জেলায় ৩০ মার্চ পর্যন্ত ১৫,৪০৭টি বাড়িতে শৌচাগার বানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আরও ৮ হাজার বাড়িতে শৌচাগার তৈরির কাজ চলছে।

২০১০ সালে শৌচাগার তৈরির হিসাবে বাস্তবের সঙ্গে প্রকৃত অবস্থার এতটা ফারাক কেন হল হাওড়া জেলায়? জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগের বছরগুলিতে জেলা পরিষদ যখন এই জেলায় প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার তৈরির অভিযান চালাচ্ছিল তখন সেই অভিযান সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছিল শুধুমাত্র বিপিএল পরিবারগুলির মধ্যে। কিন্তু বিপিএল তালিকার বাইরে বসবাস করেন এমন পরিবারগুলির জন্যও শৌচাগার তৈরি করে দেওয়ার কথা। বিপিএল তালিকার বাইরে বসবাসকারী কোন কোন পরিবারকে এই প্রকল্পের অধীনে আনা যাবে সে বিষয়টিও স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের নির্দেশিকায়। যে সব পরিবার এই তালিকায় আসবে তারা হল তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি, যে পরিবারের কর্তা প্রতিবন্ধী, যে পরিবারের প্রধান কোনও বিধবা মহিলা, প্রান্তিক চাষি এবং ভূমিহীন চাষিদের পরিবার। এই ছয় শ্রেণির পরিবারকেও ঘরে ঘরে শৌচাগার প্রকল্পের আওতায় আনার কথা। কিন্তু আগের বারের অভিযানে তা করা হয়নি। তার ফলেই এতবড় ফাঁক থেকে গিয়েছিল হাওড়া জেলায়।

জেলা পরিষদের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, ‘‘নির্মল ভারত অভিযানে হাওড়ার জন্য টাকা চাইতে গেলে আমাদের রাজ্য দফতর থেকে বলা হয়, এই জেলা তো ইতিমধ্যেই নির্মল জেলার তকমা পেয়েছে। তা হলে আবার কীসের অভিযান। আমরা তখন সমীক্ষা রিপোর্টটি তাঁদের দেখাই।’’

বর্তমানে নিয়ম হল যে পরিবার এই অভিযানের আওতায় আসতে চাইবেন তাকে নিজেকে দিতে হবে ৯০০ টাকা। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে তাকে দেওয়া হবে ১২ হাজার টাকা। জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মাধ্যক্ষ সীতানাথ ঘোষ বলেন, ‘‘বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে প্রকল্পটি রূপায়ণ করছি। আশা করা যায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যাবে।’’ তবে যেখানে ২০১৮ সালের মধ্যে ১ লক্ষ ৬০ হাজার পরিবারে শৌচাগার তৈরি করতে হবে, সেখানে এখনও পর্যন্ত মাত্র ১৫ হাজার ৪০৭টি পরিবারে কাজটি করা গিয়েছে। আরও ৮ হাজার পরিবারে শৌচাগার তৈরির কাজ চলছে। কিন্তু এত ধীর গতিতে কাজ হলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যাবে কিনা সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মহল।

এ বিষয়ে জেলা পরিষদের বক্তব্য ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের সঙ্গে একসময় নির্মল ভারত অভিযানকে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। তার ফলে কাজটি হচ্ছিল ঢিমেতালে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশ দিয়েছে এই অভিযান সফল করতে পুরো টাকাই দেবে তারা। সীতানাথবাবু বলেন, ‘‘নতুন নির্দেশ আসার পরে আমরা নির্মল ভারত অভিযানের গতি বাড়িয়েছি। আশা করি লক্ষমাত্রা পূরণ করা যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE