Advertisement
২৩ মে ২০২৪

বিলুপ্তপ্রায় মাছ চাষে উদ্যোগ

দেশি মাগুর-সহ বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রজাতি রক্ষায় উদ্যোগী হল আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতি। এই উদ্দেশ্যে ওই আরামবাগ ব্লকের ‘খামার উপদেষ্টা কমিটি’ দেশি মাগুর চাষের ১২টি প্রদর্শনী ক্ষেত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিলি হচ্ছে মাছের চারা। —নিজস্ব চিত্র।

বিলি হচ্ছে মাছের চারা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:১৭
Share: Save:

দেশি মাগুর-সহ বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রজাতি রক্ষায় উদ্যোগী হল আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতি। এই উদ্দেশ্যে ওই আরামবাগ ব্লকের ‘খামার উপদেষ্টা কমিটি’ দেশি মাগুর চাষের ১২টি প্রদর্শনী ক্ষেত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর জন্য দিন কয়েক আগে ব্লকের ১২ জন মাছচাষিকে আত্‌মা(এগ্রিকালচার টেকনোলজি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি) প্রকল্পে ২০০টি করে মাগুর চারা এবং ১৫ কেজি করে খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ওই কমিটির পদাধিকারী তথা আরামবাগ ব্লক মৎস্য সম্পসারণ আধিকারিক মহদেব শুকুল বলেন, ‘‘আত্‌মা প্রকল্পে পঞ্চায়েত স্তরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা থাকায় আমরা গ্রামের পতিত পুকুরগুলিতে বিলুপ্তপ্রায় বিভিন্ন মাছের চাষ, প্রজনন ও বংশ বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দিয়েছি।’’

ব্লক মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিলুপ্তপ্রায় মাছ চাষে চাষিদের আগ্রহ বাড়াতে গ্রাম ধরে ধরে সচেতনতা শিবির এবং প্রশিক্ষণ শিবিরেরও আয়োজন শুরু হয়েছে। আত্‌মা প্রকল্পে একটি প্রদর্শনী ক্ষেত্র পিছু অনুদান ৪ হাজার টাকা। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় সেই বরাদ্দ কম হওয়ায় পঞ্চায়েত সমিতি থেকে মাছের চারা এবং খাবার কিনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। আরামবাগ ব্লকের ১৫টি পঞ্চায়েত এলাকায় রেকর্ডভুক্ত জলাভূমির পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে মাছ চাষের যোগ্য এলাকা তিন হাজার হেক্টর। বাকি এক হাজার হেক্টর আংশিক এবং সম্পূর্ণ পতিত। সূর্যের ভাল আলো না পাওয়া, আগাছায় ভর্তি, অবহেলায় পড়ে থাকা পুকুরগুলিতে বিলুপ্তপ্রায় বিভিন্ন জিওল মাছ চাষের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মহাদেববাবু জানান, এর পাশাপাশি ভিয়েতনাম কই, গিফট তেলাপিয়া মাছ চাষেরও পরিকল্পনা হয়েছে। জিওল মাছ চাষ করলে জলাশয় যেমন দূষণমুক্ত হবে, তেমনি আর্থিক লাভের পাশাপাশি এই সব মাকে অবলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা যাবে। যথাযথভাবে জিওল মাছ চাষ করলে ৫ কাঠা জলাশয়ে ১ কুইন্টালের বেশি মাছ পাওয়া সম্ভব।

দেশি মাগুর চাষে উদ্যোগীদের মধ্যে কাপসিটের মৎস্যচাষি নিত্য সরকার বলেন, “দেশি মাগুর চাষে আগ্রহ ছিলই। কিন্তু সরকারি অনুদান নিয়ে নিশ্চয়তা ছিল না। এখন অনুদান মিলেছে। বাজারে দেশি মাগুরের খুব চাহিদাও আছে।’’ ডিহিবয়রা গ্রামের সমরেশ পণ্ডিত বলেন, ‘‘সরকারি অনুদান ছাড়াও হাতে কলমে সহযোগিতা পাওয়া জরুরি। অনেকেই প্রশিক্ষণ নিতে পারেনি। ফলে মাছের বা পুকুরে রোগ পোকার আক্রমণ চিহ্নিত করা এবং তার প্রতিকার করার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। মাছের খাবার নিয়েও পরামর্শ দরকার হয়। তবে সরকারি স্তরে সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়ায় আমার মতো অনেকেই দেশি মাগুর চাষে উৎসাহী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Initiative Endangered fish
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE