Advertisement
২৪ মে ২০২৪

‘অশান্তিকারী’, নাম বাড়ছে তালিকায়

সে কারণেই তাঁদের নামের তালিকা তৈরি করছে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০৫:২৬
Share: Save:

তালিকায় নাম ছিল ১০০ জনের। মঙ্গলবার কলকাতায় ডেপুটি নির্বাচন কমিশনারের বৈঠকের সঙ্গে জেলাশাসকদের বৈঠকের পর সে তালিকায় ঢুকল ৪০০ জনের নাম। তাঁরা সকলেই নেতা-কর্মী— বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের। প্রশাসনের কাছ থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী এঁরা সকলেই ভোটে অশান্তি পাকাতে পারেন। আর সে কারণেই তাঁদের নামের তালিকা তৈরি করছে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন।

এ ছবি শুধু আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের আরামবাগ বিধানসভা কেন্দ্রের। এ দিন কলকাতায় জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। তারপর অশান্তি করতে পারেন এমন নেতা-কর্মীদের নামের তালিকা বেড়ে গিয়েছে এক ধাক্কায়। শুধু আরামবাগ নয়, প্রায় তিনগুণ করে নাম বেড়েছে পুরশুড়া, গোঘাট, খানাকুল, হরিপাল, তারকেশ্বর এবং চন্দ্রকোনা বিধানসভা এলাকাতেও।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে বিভিন্ন থানা থেকে প্রায় হাজার দুই পুরনো এবং সম্ভাব্য গোলমালকারীকে চিহ্নিত করে তালিকা পাঠানো হয়েছিল নির্বাচন কমিশনের দফতরে। এরপরেও চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে, বলে থানাগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে। ফলে তালিকা আরও বাড়বে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটে পুরনো অশান্তির ইতিহাস আছে এবং এ বার নতুন করে গোলমাল পাকাতে পারেন এমন সব ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে নাম তালিকাভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ ভোট নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা।

বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, আগের তালিকায় এমন অনেক শাসক নেতার নাম ছিল না, যাঁদের নামে পুরনো অশান্তির অভিযোগ ছিল। নির্বাচন কমিশনের চাপে নতুন তালিকায় দেখা গিয়েছে চার ভাগের তিন ভাগই শাসকদলের নেতা-কর্মী। সেখানে যেমন রয়েছে বিভিন্ন পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতি কর্মাধ্যক্ষ, সদস্যদের নাম। তেমনই রয়েছেন জেলা পরিষদের সদস্য, ব্লক সভাপতি, অঞ্চল সভাপতিরাও।

জানা গিয়েছে, নতুন তালিকায় নাম উঠেছে তৃণমূলের আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সুদীপ্ত চক্রবর্তী, প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ কমল কুশারী, পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান সদস্য চিন্ময় রায়, কাজল ভট্টাচার্য, সালেপুর-২ পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জিৎ অধিকারী , আরান্ডি-১ পঞ্চায়েত প্রধান সোহরাব হোসেন, গৌরহাটি-২ উপ-প্রধান অনন্ত ভট্টাচার্য, তিরোল অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল, পঞ্চায়েত সদস্য ঝর্না সিংহ, মিতা বাগের মত কয়েকজন মহিলাও আছেন। সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতারাও বাদ যাননি। যেমন মোজাম্মেল হোসেন, সমীর চক্রবর্তী, পূর্নেন্দু চট্টোপাধ্যায়।

তালিকায় নাম থাকা আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূল নেতা সুদীপ্ত চক্রবর্তী বলেন, “দল যদি ঠিকঠাক দেখে, তালিকা নিয়ে আমি ভয় পাই না। দলকে বলে দিয়েছি আমার অঞ্চল থেকে অন্তত ৬ হাজার ভোটের লিড দেব।” ঝর্না সিংহ, মিতা বাগরা তালিকাভুক্ত হয়েছেন পুরনো গোলমাল সৃষ্টির ইতিহাস থেকে। গত লোকসভা নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রের ভিতর ঢুকে ভোটারদের দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ায় প্রভাবিত করার অভিযোগ ছিল আরামবাগের তিরোল পঞ্চায়েতের সদস্যার ঝর্না সিংহের বিরুদ্ধে। ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়। একইরকম অভিযোগ ছিল মিতা বাগের বিরুদ্ধেও।

সিপিএমের তালিকাভুক্তদের মধ্যে আরামবাগ এরিয়া সম্পাদক পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের দলের পদাধিকারীদের নাম ঢুকিয়ে থাকলে তা পরিকল্পিত ভাবেই করেছে পুলিশ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Election Commission Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE