Advertisement
E-Paper

পুজোর আগে জলমগ্ন হুগলি

তারকেশ্বর ব্লকের পাঁচটি এবং জাঙ্গিপাড়া ব্লকের তিনটি গ্রামে সোমবার সন্ধ্যা থেকে জল ঢুকতে শুরু করে। জাঙ্গিপাড়ার রাজবলহাট এবং রসিদপুর পঞ্চায়েতের আখনা, ছিটখোলা, সেনপুর প্রভৃতি জায়গা জলমগ্ন।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৫৩
জলমগ্ন: জল ভেঙে বাড়ির পথে। নিজস্ব চিত্র

জলমগ্ন: জল ভেঙে বাড়ির পথে। নিজস্ব চিত্র

ডিভিসি ছাড়ার কারণে হুগলির চারটি ব্লকে বেশ কিছু গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। উৎসবের মরসুমে কাশফুল জলে ডুবেছে। পুজোপ্রাঙ্গনে আনন্দ ছেড়ে গ্রামবাসীরা ঠাঁই নিচ্ছেন ত্রাণ শিবিরে।

তারকেশ্বর ব্লকের পাঁচটি এবং জাঙ্গিপাড়া ব্লকের তিনটি গ্রামে সোমবার সন্ধ্যা থেকে জল ঢুকতে শুরু করে। জাঙ্গিপাড়ার রাজবলহাট এবং রসিদপুর পঞ্চায়েতের আখনা, ছিটখোলা, সেনপুর প্রভৃতি জায়গা জলমগ্ন। রাজবলহাটে কয়েকশো মানুষ সরকারি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। বিশ্বজিৎ সাঁতারা নামে এক গ্রামবাসীর চাষজমি জলের তলায়। তিনি বলেন, ‘‘তিন বিঘে জমিতে ধান, পটল, কপি চাষ করেছি। জলে ডুবে সব ক্ষতি হয়ে গেল।’’ বিডিও (জাঙ্গিপাড়া) সীতাংশুশেখর শীট বলেন, ‘‘প্রায় ১৭০০ পরিবার কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ত্রাণশিবিরে খিচুড়ি, শুকনো খাবার, জলের পাউচ দেওয়া হচ্ছে।’’

তবে, পরিস্থিতি নিয়ে প্রসাসনের তরফে গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। জাঙ্গিপাড়ার মোড়হল গ্রামে মঙ্গলবার সকালে সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার সোমনাথ দে বাঁধ পরিদর্শনে গেলে গ্রামবাসীরা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আগাম মাইক-প্রচার না করায় ঘর-গেরস্থালির জিনিস সরানোর সুযোগ মেলেনি। সোমনাথবাবু বলেন, ‘‘জল ছাড়ার কথা জেলা প্রশাসনকে আগাম জানানো হয়েছিল। কেন প্রচার করা হয়নি, প্রশাসনই বলতে পারবে।’’ প্রশাসনের আধিকারিকদের বক্তব্য, গ্রামবাসীদের মধ্যে অযথা আতঙ্ক ছড়াতে পারে ভেবেই সে ভাবে প্রচার করা হয়নি।

তারকেশ্বরের কেশবচক, তালপুর, সন্তোষপুর, চাঁপাডাঙা পঞ্চায়েতে বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। তালপুরে দমোদর লাগোয়া নিচু এলাকার মানুষজন বাঁধের উপরে আশ্রয় নিয়েছেন। বিডিও (তারকেশ্বর) জয়গোপাল পাল জানান, ওই চারটি পঞ্চায়েতের প্রায় তিনশো পরিবারের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ দিন বিনোগ্রাম এবং তালপুরে গিয়ে দেখা গেল, দামোদরের বাঁধের উপর অনেক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে অস্থায়ী তাবুর সামনে দাঁড়িয়ে কেবশচকের বাসিন্দা বিজয় প্রধান বলেন, ‘‘সোমবার বিকেল থেকেই দামোদরে জল বাড়ছিল। গ্রামেও জল ঢোকে। বিপদ বুঝে সকালেই পরিবার নিয়ে এখানে উঠে এসেছি।’’

নদীতে জল বাড়লেও পুরশুড়া বা খানাকুলে বাঁধ ভাঙেনি। তবে বাঁধের ভিতরের অংশের অনেক বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে পুরশুড়ার শ্রীরামপুর, মির্জাপুর, ডিহিবাতপুরে এমন প্রায় ৫০টি পরিবারের লোকেদের নিরাপদ জায়গায় তুলে আনা হয়েছে ব্লক প্রশাসনের তরফে। শ্রীরামপুরে কৈলাসচন্দ্র সাধুখাঁ উচ্চ বিদ্যালয়, প্রাথমিক স্কুল, পুরশুড়া কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতির কার্যালয়ে জল ঢুকেছে। খানাকুল-২ ব্লকের নতিবপুর, নিমতলা-সহ কয়েকটি জায়গায় বাঁশের সাঁকো ভেসে গিয়েছে জলের তোড়ে। আরামবাগ মহকুমার সবচেয়ে নিচু জায়গা খানাকুলের মাড়োখানা এবং রাজহাটি-১ পঞ্চায়েত এলাকায় বেশ কিছু জায়গা জলমগ্ন হয়েছে।

ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের বক্তব্য, কোনও কোনও জায়গায় জল ঢুকলেও তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সোমাবার রাত থেকেই বাঁধে নজরদারি করছেন সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত, ব্লক প্রশাসন, পুলিশ এবং সেচ দফতরের কর্মীরা। মঙ্গলবার পুরশুড়ায় গিয়ে দেখা গেল, কয়েকটি জায়গায় বালির বস্তা মজুত করা হয়েছে, যাতে বাঁধ ভাঙলে দ্রুত মেরামত করা যায়। কোথাও ফাটল বা ঘোগ দেখা গেলে মেরামত করা হচ্ছে।

Durga Puja Flood Situation Hooghly
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy