তাঁর ‘অপরাধ’ বাড়ির জমিতে সীমানা-পাঁচিল দিতে যাওয়া। কিন্তু সেই পাঁচিল নিয়ম বহির্ভূত ভাবে দেওয়া হচ্ছে, এই দাবি তুলে ধনেখালির এক প্রান্তিক চাষিকে সেই কাজে বাধা দেওয়া এবং তাঁর জমিতে ‘কৃষি বয়কট’-এর ফতোয়া জারি করার অভিযোগ উঠল শাসকদলেরই কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনাচক্রে, শঙ্কর দাস নামে ওই চাষিও তৃণমূল সমর্থক! ‘ফতোয়া’র জেরে বেশ কিছুদিন ধরে তিনি নিজের আলু চাষের জমিতে জলটুকুও দিতে পারছেন না।
শঙ্করবাবু বেলমুড়ি পঞ্চায়েতের জয় হরিপুরের বাসিন্দা। পঞ্চায়েতের বিধিবদ্ধ অনুমতি নিয়েই সম্প্রতি তিনি রাস্তার ধারে নিজের বাড়ির জমি ঘিরতে যাচ্ছিলেন। তখনই বাধার মুখে পড়েন। নিজের জমিতে পঞ্চায়েতের অনুমতি সাপেক্ষে কেন পাঁচিল দিতে পারবেন না, এই সঙ্গত প্রশ্ন তুলতেই বিস্তর জলঘোলা শুরু হয়। বিষয়টি কানে যায় স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীদের। রোষে পড়ে যায় পরিবারটি। ইতিমধ্যে প্রশাসন, পুলিশ, এমনকী পঞ্চায়েতের কাছেও এ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন শঙ্করবাবু। কিন্তু এখনও জট খোলেনি। ফলে, নিজের জমিতে চাষ করতে পারছেন না শঙ্করবাবু।
শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘এ বার ৩৫ হাজার টাকারও বেশি খরচ করে আলু চাষ করেছি। কিন্তু এখন আমার জমির চাষ জল না পেয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। কৃষি-মজুরদের ফতোয়া দেওয়া হয়েছে। আতঙ্কে তাঁরা কেউই কাজ করছেন না। অন্যের জমিতে খেটে খাব, সেখানেও বয়কট। দলের নেতাদের জানিয়ে লাভ হয়নি।’’
কারা তাঁকে ‘ফতোয়া’ দিয়েছে, ভয়ে তাঁদের নাম করতে চাইছেন না শঙ্করবাবু। তবে, ধনেখালিতে শাসকদলেরই একাংশের অভিযোগ, এলাকার যুব তৃণমূল সভাপতি বিভাস দে এবং তাঁর দলবলের অঙ্গুলি হেলনেই এই সব চলছে। স্থানীয় এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, ‘‘এক সময়ে সিপিএম গ্রামে গ্রামে এই সব অত্যাচার করত। এখন তৃণমূলও যদি এ সব করে, মানুষ দাঁড়াবেন কোথায়?’’
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানেননি বিভাসবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘ওই চাষি যদি আমাকে বিষয়টি জানান, তা হলে আমি দেখব।’’ পঞ্চায়েত প্রধান দীপালি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শঙ্করবাবুরা বাড়িতে পাঁচিল দেওয়ার অনুমতি নিয়েছিলেন, এটা ঘটনা। স্থানীয় ভাবে একটা সমস্যা হয়েছে। ওঁরা চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন। আমরা পঞ্চায়েতের তরফে বিষয়টি মেটাতে দু’পক্ষকে নিয়ে বসব।’’
এখন দেখার, এই সব আশ্বাসে দাস পরিবারের আলু জমিতে জল গড়ায় কিনা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy