গত বছর ডেঙ্গিতে জেরবার হয়েছিল শ্রীরামপুর। মৃত্যু হয়েছিল অন্তত চার জনের। হুগলির এই মহকুমায় ডেঙ্গি মহামারি ঘোষণা করেছিল স্বাস্থ্য ভবন। এ বারেও যাতে একই পরিস্থিতি না হয়, সে জন্য আগেভাগেই আসরে নামল শ্রীরামপুর পুরসভা।
ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ থেকেই শুরু হয়েছে অভিযান। মশার লার্ভা নিধনে তেল ছড়ানোর পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি অভিযানও চলছে। মঙ্গলবার পুরসভার বিশেষ গাড়ি নিয়ে তেল ছড়ানো হয় শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতাল, থানা, গার্লস কলেজে। পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি প্রচার চালান। পুরসভার জনস্বাস্থ্য বিভাগের চেয়ারম্যান ইন-কাউন্সিল গৌরমোহন দে’র দাবি, ‘‘গত বারের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন থেকেই আমরা পথে নেমেছি। অক্টোবর পর্যন্ত লাগাতার অভিযান চলবে। প্রয়োজনে নভেম্বরেও অভিযান চালানো হবে।’’
গতবার ডেঙ্গির প্রকোপ সবচেয়ে বেশি ছিল শ্রীরামপুর পুর-এলাকায়। মশাবাহিত এই রোগকে বাগে আনতে ত্রাহি অবস্থা হয় স্থানীয় প্রশাসনের। এ বার পুরসভা আগেভাগে পথে নামলেও উদ্যোগ কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে পুরবাসীদের অনেকেই সন্দিহান। বস্তুত, গতবারের পরিস্থিতির জন্য পুরসভার জনস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্য বিভাগকেই কাঠগড়ায় তুলেছিলেন এলাকাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, ওই দুই দফতরের অকর্মণ্যতাতেই গতবার পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গিয়েছিল। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত শহরকে সাফসুতরো রাখার ব্যাপারে পুরসভার কাজ ততটা সন্তোষজনক নয়। এখনও নানা এলাকায় জঞ্জাল জমে থাকছে। বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা। ফলে, শুধু তেল ছড়িয়ে কতটা ফল মিলবে তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। দিন কয়েক আগে পুরসভায় এক বৈঠকে একাধিক কাউন্সিলরও এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
শহরের এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, ‘‘প্লাস্টিকের জন্য অনেক জায়গাতেই নর্দমায় জল সরে না। তা ছাড়া বর্তমানে অনেক রাস্তার ধারের নর্দমা কংক্রিটের স্ল্যাব দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। সেখানে মশার দল নিশ্চিন্তে ডিম পাড়ছে।’’
গৌরমোহনবাবুর আশ্বাস, নিকাশি নালায় যাতে প্লাস্টিক জমে না থাকে, সে ব্যাপারে তাঁরা উদ্যোগী হবেন। বাড়ির ভিতরে বা ছাদে বা কোনও নির্মীয়মাণ আবাসনে যাতে জল না জমে, সে দিকেও নজর দেওয়া হবে। প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বন্ধ করতে ইতিমধ্যেই শহরের কেন্দ্রীয় ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। ফের তাদের কাছে আবেদন জানানো হবে। আশ্বাসে কাজ কতটা হয়, এ বার সেটাই দেখার।