নিকাশি নালায় ছাড়া হচ্ছে গাপ্পি মাছ। আরামবাগে নিজস্ব চিত্র।
হুগলি জেলায় জ্বরপ্রবণ পুরসভা এলাকাগুলিতে ডেঙ্গি প্রতিরোধে জেলা প্রশাসন এবং মৎস্য দফতরের পরিকল্পনায় গাপ্পি মাছ ছাড়ার কর্মসূচি শুরু হল। মঙ্গলবার আরামবাগ পুরসভা ছাড়াও উত্তরপাড়া-কোতরং, কোন্নগর, শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটি এবং বাঁশবেড়িয়া পুরসভা এলাকার নালাগুলিতে গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়। জেলা মৎস্য অধিকর্তা পার্থসারথি কুণ্ডু বলেন, “জেলাশাসক সঞ্জয় বনসলের পরিকল্পনা অনুযায়ী এডিস ইজিপ্টাই মশার লার্ভা ধ্বংসের উদ্দেশ্যে গাপ্পি মাছ ছাড়ার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আরামবাগ পুরসভা এলাকার জন্য ৩০ হাজার গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়েছে। বাকি পাঁচটি পুরসভার প্রত্যেকটিতে ৩ হাজার করে গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়েছে।”
অন্য পুর এলাকাগুলিতে ৩ হাজার করে গাপ্পি মাছ ছাড়া হলেও আরামবাগ পুরসভা এলাকার জন্য ৩০ হাজার কেন?
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, আরামবাগ শহরের বেহালি নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য দফতর। যত্রতত্র জমা জল এবং আবর্জনায় গোটা শহরটাই বছরভর মশার আঁতুড়ঘর। মশা দমনে পুরসভার নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে স্থানীয় মানুষের অভিযোগও দীর্ঘদিনের। পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে জ্বরের প্রকোপও রয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত আরামবাগ পুর এলাকায় জ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে ২ জনের রক্তের অ্যালাইজা টেস্টে ডেঙ্গির ইঙ্গিত মিলেছে বলে মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক সিদ্ধার্থ দত্ত জানান। সিদ্ধার্থবাবু বলেন, “৯ অগস্ট থেকে ১৬ অগস্ট পর্যন্ত মহকুমায় ২৪ জনের রক্তের অ্যালাইজা টেস্টে ডেঙ্গি পজেটিভ ধরা পড়েছে। ওই ২৪ জনই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তাঁদের মধ্যে ২ জন পুর এলাকার বাসিন্দা”।
প্রসঙ্গত, গ্রামকেন্দ্রীক ৮৫.৯ একর এলাকা নিয়ে আরামবাগ শহরে মশার উপদ্রবের চিত্র বরারই মারাত্মক। শুধু ম্যালেরিয়ার আশঙ্কাতেই তটস্থ থাকেন শহরের ১৯টি ওয়ার্ডের প্রায় ৭০ হাজার বাসিন্দা। তার উপর বর্তমানে ডেঙ্গির আক্রমণে আতঙ্ক আরও চেপে বসেছে। পুর এলাকার মানুষের অভিযোগ, যত্রতত্র জমা জল এবং আবর্জনায় শহরজুড়ে মশার আঁতুড়ঘর। মশার ব্যাপকতার কথা স্বীকার করে পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, “নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজার পাশাপাশি সারা বছর ধরেই মশা মারার কৌশল নেওয়া হচ্ছে। ওষুধ স্প্রে-ব্লিচিং ছড়ানো ছাড়াও গাপ্পি মাছ ছাড়া হয়েছে ১৯টি ওয়ার্ডের ৬২টি খোলা নিকাশি নালায়। এই মাছ মশার ডিম খেয়ে নেবে। এ ছাড়াও মশার ভারসাম্যহীন মিলন এবং পুরুষ মশার নিবীর্জকরনের মত বিষয় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে”।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy