Advertisement
E-Paper

রাস্তা জুড়ে গর্ত, জ্বলে না আলো প্রাণ হাতেই যাতায়াত উড়ালপুলে

কয়েক মাস আগে কলকাতার পোস্তায় নির্মীয়মাণ উড়ালপুল ভেঙে পড়ার ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল সাধারণ মানুষ ও প্রশাসনকে। প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল অন্য উড়ালপুলগুলির স্বাস্থ্য নিয়ে। কিন্তু শ্রীরামপুর উড়ালপুলের অবস্থা দেখলে বোঝা যায় এর রক্ষণাবেক্ষণে কোনও নজরই নেই প্রশাসনের।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৩৯
রাস্তার পিচ উঠে বেরিয়ে পড়েছে কংক্রিটের লোহার রড।

রাস্তার পিচ উঠে বেরিয়ে পড়েছে কংক্রিটের লোহার রড।

কয়েক মাস আগে কলকাতার পোস্তায় নির্মীয়মাণ উড়ালপুল ভেঙে পড়ার ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল সাধারণ মানুষ ও প্রশাসনকে। প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল অন্য উড়ালপুলগুলির স্বাস্থ্য নিয়ে। কিন্তু শ্রীরামপুর উড়ালপুলের অবস্থা দেখলে বোঝা যায় এর রক্ষণাবেক্ষণে কোনও নজরই নেই প্রশাসনের। অন্তত এমনই অভিযোগ মানুষের।

গোটা উড়ালপুলে রাস্তায় একাধিক বড় গর্ত। বাতিস্তম্ভ থাকলেও আলো জ্বলে না। দিনের আলোয় গর্ত এড়িয়ে কোনওমতে যাতায়াত করলেও সন্ধ্যে নামলেই প্রমাদ গোনেন যানচালকেরা। বিপদের ঝুঁকি নিয়ে বাধ্য হয়েই ওই পথে চলাচল করছে যাত্রীবাহি গাড়ি থেকে বড় বড় ট্রাক-ট্রেলার। সিকি শতাব্দী পার হওয়া এই উড়ালপুলের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে গাফিলতির অভিযোগও পুরনো। কিন্তু তারপরেও হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের।

বাম আমলে জিটি রোডে রেলের লেভেল ক্রসিংয়ে যানজট দূর করতে উড়ালপুলটি তৈরি হয়। ১৯৯১ সালে প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ এই উড়ালপুলের উদ্বোধন করেন তৎকা‌লীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, তৈরির পর বড় রকমের কোনও সংস্কার হয়নি। ফলে গার্ড ওয়ালে ফাটল ধরেছে। বহু জায়গায় পলেস্তারা খসে পড়েছে। কংক্রিট ফেটে লোহার রড বেরিয়ে গিয়েছে। তার উপর রাস্তা জুড়ে ছোট-বড় গর্ত যেন মৃত্যুফাঁদ। উড়ালপুলে আলো দিতে বাতিস্তম্ভ থাকলেও জ্বলে গুটিকতক। ফলে সূর্য ডুবলে উড়ালপুলও ডোবে অন্ধকারে। গাড়ির হেডলাইটই তখন ভরসা গাড়িচালকদের। সাইকেল বা ভ্যানচালকদের অবস্থা আরও দুর্বিষহ।

গাড়ি চালকদের অভিযোগ, একে রাস্তা জুড়ে বড় বড় গর্ত, তার উপর অন্ধকার। ফলে সন্ধ্যার পরে প্রাণ হাতে নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। দুর্ঘটনা এড়াতে অনেকে উড়ালপুলের নীচের সঙ্কীর্ণ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। পুরভবনের কাছে এবং মল্লিকপাড়া লাগোয়া জায়গায় উড়ালপুলে ওঠানামা করার সিঁড়ি রয়েছে। আলোর অভাব সেখানেও। প্রায়ান্ধকার সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে হয় বাস-ট্রেকারের যাত্রীদের। উড়ালপুলে আলো না জ্বলায় মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, এ সব সমস্যার কথা জানা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট দফতর কোনও পদক্ষেপ করেনি।

জ্বলে না আলো। সূর্য ডুবলে গাড়ির আলোই ভরসা।—নিজস্ব চিত্র।

উড়ালপুল দেখভালের দায়িত্ব আগে ছিল পূর্ত (সড়ক) দফতরের। এখন সেই দায়িত্ব পূর্ত দফতরের কাঁধে। সমস্যার কথা মে‌নে নিয়েছেন ওই দফতরের আধিকারিকরা। হুগলি জেলা পূর্ত দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার জয়ন্ত মণ্ডল জানান, পুজোর আগেই উড়ালপুলে রাস্তার গর্তগুলি মেরামত করে দেওয়া হবে। তাঁর আশ্বাস, ‘‘আপাতত জোড়াতাপ্পি দেওয়া হলেও বর্ষার পর পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করা হবে। উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন জানানো হয়েছে। তবে উড়ালপুলের অবস্থা খুব খারাপ নয়।’’ তবে আলো না জ্বলার কথা মেনে পূর্ত দফতরের ওই আধিকারিকের দাবি, ‘‘উড়ালপুলের আলো রক্ষণাবেক্ষণের কথা স্থানীয় পুরসভার।’’ পুরসভার চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল (পূর্ত) উত্তম রায় অবশ্য বলেন, ‘‘এত বছর ধরে আলোর রক্ষণাবেক্ষণ ওরাই করে আসছে। হঠাৎ পুরসভার দায়িত্ব হবে কেন।’’ তিনি বলেন, ‘‘যাতায়াতের সুবিধার কথা ভেবে মল্লিকপাড়ার দিকে উড়ালপুলের নীচে আলো লাগিয়েছেন পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায়। কিন্তু উড়ালপুলের উপরে আলো লাগানো বা রক্ষণাবেক্ষণ পূর্ত দফতরকেই করতে হবে।’’

তবে দুই তরফের কাজিয়া নয়, সাধারণ মানুষ চাইছেন অবিলম্বে উড়ালপুলে আলো জ্বলুক। সারানো হোক গর্ত।

Flyover No Light damaged
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy