শ্বাস কষ্ট নিয়ে ভর্তি হওয়া এক শিশু মৃত্যু ঘিরে গাফিলতির অভিযোগ উঠল আরামবাগ হাসপাতালে। শুক্রবার রাতের এই ঘটনায় ক্ষোভ-বিক্ষোভের জেরে উত্তপ্ত হয় হাসপাতাল চত্বর। হাসপাতাল সুপার শিশির নস্করকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান মৃতের আত্মীয়স্বজনরা। পুলিশ পরিস্থিতি আয়ত্বে আনে। হাসপাতাল সুপার বলেন, ‘‘বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানিয়েছি। প্রাথমিকভাবে সংশ্লিট চিকিৎসক জেকের আলিকে শো-কজ কজ করা হয়েছে। কর্তব্যরত নার্সদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।” অভিযুক্ত চিকিৎসক জেকের আলি বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। যা বলার তদন্তকারী দলকে বলেছি।’’ একই বক্তব্য অভিযুক্ত নার্সদেরও।
মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, খানাকুলের রাজহাটির বাসিন্দা শেখ সানোয়াজ হোসেন নামে ১ বছরের ওই শিশুর প্রবল শ্বাসকষ্ট হওয়ায় শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার মৃত্যু হয় সন্ধ্যায়। বাবা শেখ বাদশার অভিযোগ, ‘‘ছেলেকে দুপুর ২টো নাগাদ ভর্তি করানো হয়। রাত ৭টার আগে পর্যন্ত কোনও চিকিৎসককে দেখা যায়নি। ৭টা নাগাদ দেখি অনেক চিকিৎসক এসে ছেলেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। তার পরেই আমাকে জানানো হল, আমার ছেলে মারা গিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, বিনা চিকিৎসায় এবং হাসপাতালের গাফিলতিতে তাঁর ছেলে মারা গিয়েছে। এই ঘটনায় কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির চান। মৃতের মা চাঁদনি বেগমের অভিযোগ, ‘‘ছেলে খুব কষ্ট পাচ্ছে জানিয়ে কর্তব্যরত নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মী যাঁরা ছিলেন তাঁদের বহুবার ডাকাডাকি করেছি। কেউ গুরুত্ব দেননি। চিকিৎসক জেকের আলির অধীনে ছেলেকে ভর্তি করানো হয়েছিল। ছেলের মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনিও শিশু ওয়ার্ডেই আসেননি।’’
রাতে অভিযোগ পেয়ে শনিবার সকালেই তিন জনের তদন্তকারী দল পাঠিয়েছেন হুগলি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘তদন্তকারী দলের রিপোর্ট অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তিন জনের তদন্তকারী দল আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে যান। তাঁরা হাসপাতাল সুপারের ঘরে সবপক্ষকে আলাদা ভাবে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তদন্তকারী দলের পক্ষে জেলা হাসপাতালের সুপারিন্টেডেন্ট উজ্জ্বলেন্দুবিকাশ মণ্ডল বলেন, ‘‘অভিযুক্ত সব পক্ষের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। যা তথ্য পেয়েছি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর কাছে জমা দেব। তাঁরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।’’