বাগনানের পটুয়াপাড়ায় আগুনে শুকনো করা হচ্ছে মূর্তি। ছবি: মোহন দাস ও সুব্রত জানা
যে সব মণ্ডপে আগেভাগেই ত্রিপলের ছাউনি ভাল করে দেওয়া হয়েছিল, সেই সব পুজো উদ্যোক্তারা কিছুটা নিশ্চিন্ত। কিন্তু যাঁরা মা-দুর্গার ভরসায় পরের দিকের জন্য কাজ ফেলে রেখেছেন, তাঁদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। উদ্যোক্তাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার ভেবেছিলেন চলতি মরসুমে এ বার আগে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। এই রাজ্য বন্যার ভ্রুকুটিও দেখেছে। তাই পুজোর মুখে কিছুটা স্বস্তি মিলবে। কিন্তু সব মিলিয়ে আকাশের মুখ ভারে এ বার কপালে ঘাম তাঁদেরও।
বস্তুত আর সময় নেই। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে তাই ‘ফিনিশিং’ টাচের পালা। থিমকে আরও নিখুঁত করে তোলার শেষ সময়ের রূপটান। কিন্তু বিধি বাম। বাধ সাধছে বৃষ্টি। অনেক পুজো উদ্যোক্তাদের মাথায় হাত। কারণ মণ্ডপের কাজ শেষ না হলে উদ্বোধনের দিন পিছিয়ে দিতে হবে। নামজাদা অতিথিকে পাড়ায় এনে ফিতে কেটে বা়জিমাতের স্বপ্ন দেখছিলেন যে উদ্যোক্তারা, ঘাবড়ে গিয়েছেন তাঁরাও।
আরামবাগের মানিক সঙ্ঘের থিম ব্যাঙের ছাতা। মণ্ডপ তৈরির মূল উপকরণ চট। তার উপর রং করা হচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টিতে রঙের কাজ থমকে গিয়েছে। পুজো কমিটির সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় মাল বলেন, ‘‘রঙের কাজ কী ভাবে শেষ হবে, বুঝতে পারছি না। আকাশ মেঘলা থাকায় চটের উপর রং শুকোচ্ছে না। তার উপর বৃষ্টিতে ধুয়ে যাচ্ছে।’’ কাজ শেষ করে পঞ্চমীতে উদ্বোধন করা যাবে কি না, সেটাই এখন মস্ত চিন্তা। শুধু কী মণ্ডপ? মৃত্যুঞ্জয়বাবুর অনুযোগ, বৃষ্টিতে কেউ চাঁদা তুলতে বেরোচ্ছেন না। ফলে পকেটেও টান পড়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
উত্তরপাড়া বেশ কয়েকটি মণ্ডপে মাঠ জুড়ে থিম পুজো হয়। চরকডাঙা, শিবাজী স্পোটিং, সখের বাজার বলাকা মাঠে কাদা। তাই উদ্যোক্তারা বালি বা কাঠের গুড়ো দিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু বৃষ্টি আরও হলে তা কতটা কার্যকারী হবে? সেই প্রশ্ন থাকছেই।
আরামবাগের দৌলতপুর যুবশক্তি নাট্যমন্দিরের পুজো উদ্যোক্তাদেরও সদস্যদেরও একই চিন্তা। পুজোর বিশেষ আকর্ষণ থাকছে ১৫ ফুটের একটি মহাদেব। পুজো কমিটির সম্পাদক সোনাচাঁদ হালদার জানান, মণ্ডপের বাইরের দিকে মাটি দিয়ে তৈরি এই মহাদেবকে রং করাই যাচ্ছে না। ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখতে হচ্ছে। মণ্ডপে থার্মোকলের কাজ নিয়েও একই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
চণ্ডীতলা বাজারে অহল্যাবাঈ রোডের ধারে নবজাগরণ সঙ্ঘের পুজো। বড় বাজেটের এই পুজোয় মণ্ডপসজ্জায় গাছপালা, লতাপাতা বা কীটপতঙ্গ আঁকার কথা। কিন্তু বৃষ্টিতে আঁকার কাজ বন্ধ। পুজো কমিটির কর্তা সুবীর মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘দিনভর আর্ট কলেজের ছেলেরা এসে বসে রইলেন। কাজ করাই গেল না। চতুর্থীতে উদ্বোধন। কাজ শেষ হবে কি না বুঝতে পারছি না।’’ শ্রীরামপুরের মাহেশ কলোনি সর্বজনীনের কর্তা শিবশঙ্কর বনিকের কথায়, ‘‘মণ্ডপে থার্মোকলের কিছু কাজ বাকি। ভরসা মা দু্গ্গারই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy