নবরূপ: তৈরি হচ্ছে ভবন, যাত্রী প্রতীক্ষালয়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
ভোল পাল্টাচ্ছে শালিমার স্টেশন।
রেলের পণ্য পরিবহণের পুরনো এই টার্মিনাল বদলে যাবে শহরতলি ও দূরপাল্লার ট্রেনের সুদৃশ্য স্টেশনে।
রেল সূত্রে খবর, বছর খানেকের মধ্যেই হাওড়া স্টেশনের ভার হালকা করতে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের দূরপাল্লার ট্রেনের গন্তব্য হয়ে উঠবে শালিমার। স্টেশন ভবন, যাত্রী প্রতীক্ষালয়, বুকিং অফিস তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই এগিয়েছে। ৩৫০ কোটি টাকা খরচ করে কয়েক ধাপে শালিমার স্টেশনের ভোল বদল হবে। প্রথম পর্বের কাজ শুরু হয়েছে প্রায় বছর দুই। দুই থেকে বাড়িয়ে পাঁচটি প্ল্যাটফর্ম করা হচ্ছে। পুরোনো দু’টি প্ল্যাটফর্ম ঢেলে সাজার পাশাপাশি নতুন একটির কাজ শেষ। আরও দু’টি প্ল্যাটফর্ম তৈরি চলছে। চলতি বাজেটে স্টেশন চত্বর করতে ১০ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রথম পর্বের কাজ শেষ হওয়ার কথা আগামী বছরের গোড়ায়।
দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রের খবর, শালিমার রেল ইয়ার্ডটি তৈরি হয় ১৮৮৩ সালে। পণ্য পরিবহণ টার্মিনাল হয় আরও পরে। ১৯০৫ সালের ওই টার্মিনাল বছর খানেক আগে পর্যন্ত সিমেন্ট, লোহা, রাসায়নিক-সহ নানা পণ্য পরিবহণের কাজে ব্যবহার হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে সেখানে সিমেন্ট পরিবহণ বন্ধ। এক রেল কর্তা জানান, দেশের মোট রেলপথের ৪ শতাংশ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের অংশ। কিন্তু দেশে রেলের মোট পণ্য পরিবহণের ১২ শতাংশ হয় দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মাধ্যমে। সে কাজে শালিমার টার্মিনাল উল্লেখযোগ্য।
নদী ঘেঁষা ছিমছাম শালিমার স্টেশন পরের দিকে বলিউড এবং টলিউডের একাধিক ছবির ‘শ্যুটিং স্পট’ হিসেবেও খ্যাতি পেয়েছে। বাংলা ছবি প্রাক্তন ছাড়াও একাধিক বাংলা ও হিন্দি ছবির শ্যুটিং হয়েছে এখানে। দক্ষিণ পূর্ব রেল সূত্রের খবর, ২০১৫-২০১৬ সালে শুধু মাত্র সিনেমার শ্যুটিং বাবদ রেলের কোটি টাকার কাছাকাছি আয় হয়েছে।
ভবিষ্যতে যাত্রী পরিবহণে শালিমারের গুরুত্ব বাড়তে থাকার পরেই পণ্য পরিবহণের বিকল্প টার্মিনাল তৈরির জায়গা হিসেব বেছে নেওয়া হয় সাঁকরাইলকে। চলতি বাজেটে সাঁকরাইলে ওই টার্মিনাল তৈরি করার জন্য ৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। শালিমারের পণ্য পরিবহণের কাজের অনেকটা ইতিমধ্যেই সাঁকারাইলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রেল সূত্রের খবর, যাত্রী পরিবহণের স্টেশন হিসেবে শালিমারের আত্মপ্রকাশ ঘটে ২০০০ সালে। ওই সময়ে সাঁতরগাছি এবং শালিমারের মধ্যে একটি যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচল করত। মূলত রেলকর্মীরা ওই ট্রেনে যাতায়াত করতেন। ফেরিতে গঙ্গা পেরিয়ে গার্ডেনরিচে রেলের হাসপাতাল কিংবা সদর কার্যালয়ে আসতেন তাঁরা। বর্তমানে শালিমার থেকে বিশাখাপত্তনম, সেকেন্দরাবাদ, উদয়পুর, পুরী, তিরুঅন্তপুরম, গোরক্ষপুর যাওয়ার বিভিন্ন ট্রেন ছাড়ে। তবে স্টেশন থেকে বেরোনোর পরে যাত্রীদের যানবাহনের সমস্যায় পড়তে হয় বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন,“সাঁতরাগাছির পাশাপাশি শালিমারকে প্রান্তিক স্টেশন হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। পুরো প্রকল্প শেষ হলে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের যাত্রী পরিবহণের পরিকাঠামোয় বিপুল বদল আসবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy