Advertisement
২১ মে ২০২৪

ট্র্যাফিকের নিয়ম ভাঙলে ক্যামেরা করবে জরিমানা

হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) সুমনজিৎ রায় বলেন, ‘‘সাইটেশন ফি বন্ধ করে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় জরিমানা নেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি বাধা কেটেছে। কেন জরিমানা করা হয়েছে, কোন দিন তিনি আইন ভঙ্গ করেছেন, তার ফুটেজ আমরা আইন ভঙ্গকারীকে দেখিয়ে দিতে পারব।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দেবাশিস দাশ
শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৭ ১৪:১৫
Share: Save:

ট্র্যাফিক আইন ভাঙলে পুলিশের নম্বর টোকার দিন শেষ। এ বার আইন ভঙ্গকারীদের জরিমানা করবে ক্যামেরার চোখ।

সেই লক্ষ্যেই হাওড়া শহরে বন্ধ করে দেওয়া হল ‘সাইটেশন’ প্রথা। এখন থেকে ক্যামেরায় ওঠা ছবি দেখে ট্র্যাফিক আইন ভঙ্গকারীদের চিহ্নিত করবে পুলিশ। হাওড়া সিটি পুলিশের দাবি, সাইটেশন প্রথা বন্ধ করে পুলিশের জরিমানা নেওয়ার প্রক্রিয়াকে আরও আইনগ্রাহ্য করতেই এই ব্যবস্থা চালু করা হল। আর এই কাজের জন্য হাওড়া শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় লাগানো হয়েছে ২০টি অত্যাধুনিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। ট্র্যাফিক আইন ভাঙলেই সেই ক্যামেরায় তোলা ছবি দেখে আইন ভঙ্গকারীদের বাড়িতে দিন দশেকের মধ্যে জরিমানার নোটিস পাঠাবে পুলিশ। ডেকে পাঠানো হবে আইন ভঙ্গকারীকেও। না এলে মামলা আদালত পর্যন্ত গড়াবে।

কিন্তু কেন বন্ধ করে দেওয়া হল সাইটেশন? হাওড়া সিটি পুলিশের বক্তব্য, প্রথমত খাতায় টুকে সাইটেশন ফি নেওয়ার ক্ষেত্রে ট্র্যাফিক পুলিশের ভুলের সম্ভাবনা রয়েছে। দ্বিতীয়ত, পরিবহণ ব্যবসায়ীরা হাওড়া কমিশনারেট এলাকায় পুলিশের এই নম্বর টুকে জরিমানা ধার্য করার প্রথাটির আইনগত ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলেন। কারণ, হাওড়ায় পুলিশ কমিশনারেট তৈরি হয়েছে সরকারি নোটিফিকেশন অনুযায়ী, কলকাতা পুলিশের মতো আইন মেনে নয়। তাই কলকাতা পুলিশের সাইটেশন ফি নেওয়ার পিছনে একটি আইনি ভিত্তি রয়েছে, যা হাওড়ার নেই।

হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) সুমনজিৎ রায় বলেন, ‘‘সাইটেশন ফি বন্ধ করে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় জরিমানা নেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি বাধা কেটেছে। কেন জরিমানা করা হয়েছে, কোন দিন তিনি আইন ভঙ্গ করেছেন, তার ফুটেজ আমরা আইন ভঙ্গকারীকে দেখিয়ে দিতে পারব।’’

ডিসি (ট্র্যাফিক) জানান, হাওড়া শহরের বিভিন্ন রাস্তায় প্রায় ৫০০ ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। এর পাশাপাশি আরও ২০টি ‘রেড লাইট ভায়োলেশন ডিটেকশন’ বা আরএলভিডি ক্যামেরা এবং ‘অটোম্যাটিক নাম্বার প্লেট রিকগনিশন ক্যামেরা’ বা এএনপিআর ক্যামেরা লাগানো হল। আরএলভিডি ক্যামেরার কাজ হল, কোনও গাড়ি সিগন্যাল অমান্য করলে তা চিহ্নিত করা। আর এনপিআর ক্যামেরার কাজ হল, যে কোনও গাড়ির নম্বর প্লেট নিখুঁত ভাবে পড়ার জন্য ছবি তুলে রাখা। যে গাড়িগুলির নম্বর প্লেট একান্তই ঝাপসা মনে হবে, সেগুলিকে বাদ দেওয়া হবে বলে জানান ডিসি (ট্র্যাফিক)। তিনি বলেন, ‘‘এই উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ক্যামেরাগুলি রাতেও একই ভাবে কাজ করবে। ফলে রাতে কোনও গাড়ি আইন ভাঙলে সেই গাড়ির মালিকের কাছে নোটিস পৌঁছে যাবে।’’

হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর, হয়রানি এ়ড়াতে শহরের প্রত্যেকটি ট্র্যাফিক গার্ডে থাকছে জরিমানা জমা দেওয়ার ব্যবস্থা। ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তাদের যুক্তি, শিবপুরের কোনও বাসিন্দা যদি বালিতে আইন ভঙ্গ করেন, তা হলে গাড়ির কাগজপত্র নিয়ে বালির ট্র্যাফিক গার্ডে আসতে হলে তাঁর অনেকটা সময় নষ্ট হবে। হয়রানও হতে হবে। তাই ঠিক করা হয়েছে, যে কোনও ট্র্যাফিক গার্ড অফিসে গিয়ে গাড়ির কাগজপত্র দেখালেই সমস্যা মিটে যাবে। তিনি সেখানে জরিমানাও জমা দিতে পারবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE