Advertisement
০৪ মে ২০২৪
পঞ্চায়েত অনাস্থা নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব

তৃণমূল সদস্যাকে হুমকি, ব্লক সভাপতির বাড়িতে বোমাবাজি

প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনাকে কেন্দ্র করে শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দলে উত্তপ্ত হয়ে উঠল হুগলির শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের কানাইপুর। তৃণমূল সদস্যার বাড়িতে হামলা ও ব্লক সভাপতি-সহ দুই নেতার বাড়িতে বোমাবাজির অভিযোগও উঠল।

ভেঙে ফেলা হয়েছে জানলা।

ভেঙে ফেলা হয়েছে জানলা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:০২
Share: Save:

প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনাকে কেন্দ্র করে শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দলে উত্তপ্ত হয়ে উঠল হুগলির শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের কানাইপুর। তৃণমূল সদস্যার বাড়িতে হামলা ও ব্লক সভাপতি-সহ দুই নেতার বাড়িতে বোমাবাজির অভিযোগও উঠল।

কানাইপুর পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা ৩০টি। তৃণমূলের হাতে ২১টি ও ৯টি আসন সিপিএমের দখলে। প্রধান কণিকা ঘোষের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার-সহ নানা অভিযোগ এনে সম্প্রতি প্রশাসনের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন উপপ্রধান নির্মল দাস-সহ তৃণমূলেরই ১৪ জন সদস্য। আগামীকাল, মঙ্গলবার ভোটাভুটি রয়েছে। তৃণমূলের অন্দরের খবর, অধিকাংশ সদস্যই প্রধানের বিপক্ষে। এই অবস্থায় কণিকাদেবীকে প্রধান পদে বহাল রাখতে দলের একটি অংশ সচেষ্ট হয়েছে। আর তার ফলেই দু’পক্ষের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে বলে তৃণমূলের একটি সূত্র জানিয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার রাত ১১টা নাগাদ পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য সুমিতা সেনগুপ্তের বাড়িতে হামলা চালায় এক দল দুষ্কৃতী। দরজা ভেঙে ঢুকে আলমারি, আয়না, জানলার কাচ ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। সুমিতাদেবীর অভিযোগ, ‘‘প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনায় দলের কিছু লোক এটা করেছে। ব্লক তৃণমূল সভাপতি নিখিল চক্রবর্তী, যুগল নন্দী, প্রধানের স্বামী-সহ দলের কয়েক জন এর মধ্যে রয়েছে।’’ এ দিন পঞ্চায়েতের অপর সদস্য অনিমা দাসের বাড়িতেও হামলা চলে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মঙ্গলবার পঞ্চায়েতে গেলে খুন করা হবে বলে হুমকি দেয় দুষ্কৃতীরা।’’ রাতেই পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আচ্ছালাল যাদব ওই দুই সদস্যকে কানাইপুর ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন।

বোমার চিহ্ন দেখছেন বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল।—প্রকাশ পাল।

রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ রিষড়ার সুভাষনগরে নিখিলবাবু এবং দলের স্থানীয় নেতা যুগলবাবুর বাড়িতেও বোমাবাজি করা হয় বলে অভিযোগ। নিখিলবাবুর অভিযোগ, ‘‘দুষ্কৃতীরা হুঁশিয়ারি দেয়, আচ্ছালাল যাদবের পিছনে লাগলে ফল ভাল হবে না।’’ যদিও তাঁদের বিরুদ্ধেও যে হামলার অভিযোগ উঠেছে তা মানতে চাননি নিখিলবাবু। আচ্ছালাল যাদবের বক্তব্য, ‘‘অনাস্থা বানচাল করতে সদস্যদের বাড়িতে হামলা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে কারও রাজনৈতিক সুবিধা হবে না। এ সব করে অনাস্থা রোখা যাবে না।’’ রবিবার বিকেলে দু’পক্ষ মিছিল বের করে।

পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। এলাকায় পুলিশ রয়েছে। মঙ্গলবার ভোটাভুটিকে কেন্দ্র করে যাতে গোলমাল না হয় সে জন্য কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল রবিবার এলাকায় যান। তাঁর কথায়, ‘‘যা ঘটেছে, তাতে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। পুলিশকে বলেছি, দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে। সাংসদ ক‌ল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছে‌ন।’’ তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে অনাস্থা আনা নিয়ে দলে অন্তর্দন্দ্ব রয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিরোধীরা এ সব করছে।’’

কিন্তু তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধেই তো হামলার অভিযোগ উঠছে?

বিধায়ক বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে। সোমবার মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সবাইকে বৈঠকে ডেকেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE