Advertisement
E-Paper

বর্গাদার উচ্ছেদ, অভিযোগ অস্বীকার করল তৃণমূল

এক বর্গাদারকে উচ্ছেদ করে তৃণমূল নেতৃত্বের মদতে জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছিল। শুক্রবার আরামবাগের হরিণখোলা ২ পঞ্চায়েত এলাকার প্রান্তিক মৌজায় ওই ঘটনায় শনিবারই পাশাপাশি ৩টি গ্রামের বর্গাদাররা এককাট্টা হয়ে সেই জমি পুনরুদ্ধার করলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৭ ০২:৪৬

এক বর্গাদারকে উচ্ছেদ করে তৃণমূল নেতৃত্বের মদতে জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছিল। শুক্রবার আরামবাগের হরিণখোলা ২ পঞ্চায়েত এলাকার প্রান্তিক মৌজায় ওই ঘটনায় শনিবারই পাশাপাশি ৩টি গ্রামের বর্গাদাররা এককাট্টা হয়ে সেই জমি পুনরুদ্ধার করলেন। এই নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বাড়লে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। তবে এই নিয়ে কোনও পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট জমির বর্গাদার হেমন্ত সাঁতরার অভিযোগ, “গত ১৬ মার্চ অঞ্চলের মায়াপুরে তৃণমূলের কার্যালয়ে আমাকে ডেকে তৃণমূল নেতা শেখ ময়না নির্দেশ দেন ২ বিঘা ৩ কাঠা বর্গা জমি ছেড়ে দিতে হবে মালিককে। রাজি না হওয়ায় ফের গত ২২ মার্চ (বুধবার) ওই দলীয় কার্যালয়ে ডেকে পাঠান ওই নেতা এবং সাত দিনের মধ্যে জমি ছেড়ে দিতে বলেন। শুক্রবার তৃণমূল নেতারা দাঁড়িয়ে থেকে জমির সিকি ভাগ অংশ ছেড়ে (যে অংশ বর্গাদারকে দিতে হয়) বাকি অংশে তিল বুনে দেন।’’

ঘটনা জানতে পেরে পাশাপাশি সুলতানপুর, সাহাবাগ এবং রসুলপুর গ্রামের মোট ৫৫ জন বর্গাদার তাঁদেরও জমি কেড়ে নেওয়ার আশঙ্কায় রাতেই বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা এককাট্টা হয়ে জমি পুনর্দখল করবেন। সেইমত শনিবার সকালে তিন গ্রামের বর্গাদাররা মিলে পুরো জমিতেই নতুন করে তিল বুনে দেন। বর্গাদার হেমন্ত সাঁতরা বলেন, “ফের জমি কাড়ার চেষ্টা হলে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের খবরদারি নিয়ে সমস্ত স্তর-সহ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানাব।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৮ সাল থেকে প্রান্তিক মৌজায় ২ বিঘা ৩ কাঠা জমি ভাগ চাষ করতেন স্থানীয় সুলতানপুর গ্রামের ধর্মদাস সাঁতরা। জমির মালিক ছিলেন পাশেই সাহাবাগ গ্রামের ইয়াসিন আলি। ধর্মদাসের নামে সেই জমি বর্গা হিসাবে নথিভুক্তও হয়। ধর্মদাস মারা যাওয়ার পর সেই জমির বর্গাদার হিসাবে তাঁর ছেলে হেমন্ত সাঁতরা নিজের নাম নথিভুক্ত করেন। জমির মালিক ইয়াসিন আলি পারিবারিক প্রয়োজনের তাগিদে ২০০৪ সালে জমিটি বিক্রি করতে চান। হেমন্ত সাঁতরা সেই জমি কিনতে আপত্তি জানানোয় তিনি সুলতানপুরের সমর সাঁতরা নামে এক প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষককে জমি বিক্রি করেন।

সমর সাঁতরার অভিযোগ, “২০০৪ সালে জমি কেনার পর থেকে ফসলের কোনও ভাগ তাঁকে দেওয়া হয়নি। রাজ্য তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টা ২০১১ সালে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে বিষয়টি জানাই।’’ তিনি জানান, তৃণমূল নেতাদের হস্তক্ষেপে দীর্ঘ আট বছরের ফসলের ভাগ হিসাবে তাঁকে ৬৫ হাজার টাকা দিতে সম্মত হন হেমন্ত। কিন্তু ৩২ হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা আর দেননি। সেই কারণে ফের তিনি দ্বারস্থ হন তৃণমূল নেতৃত্বের। তাঁর কথায়, ‘‘বর্গাদার হেমন্ত সাঁতরার এখন ১৮ বিঘার বেশি জমি। আমার ১ কাঠা ভিটেটুকু ছাড়া কোনও জমি নেই। দীর্ঘদিনের বর্গাদার হিসাবে তাঁর জন্য সিকি অংশ জমি ছেড়ে দিয়ে তিল চাষ করেছিলাম। ফের তিনি পুরোটাই পুনর্দখল করেছেন। জমি উদ্ধারেই তৃণমূল নেতৃত্বের দ্বারস্থ হয়েছি।’’

অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ ময়না বলেন, ‘‘জমি থেকে বর্গাদার উচ্ছেদের অভিযোগ মিথ্যা। ওই শিক্ষক জমির ভাগ পাচ্ছেন না বলে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য লিখিত আবেদন করেছিলেন। সেই মত বর্গাদারকে ডেকে লিখিত সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে বর্গাদার জমির মালিককে বকেয়া সমস্ত ফসলের ভাগের হিসাব করে টাকা মিটিয়ে দেবেন। সেই সঙ্গে জমির সিকি ভাগ বর্গাদার নিজের জন্য রেখে বাকিটা জমির মালিককে ফেরত দেবেন। কিন্তু ওই বর্গাদার তখন সব মেনেও নেন। পরে শুনি লোকজন নিয়ে গিয়ে ফের জমি পুনর্দখল করেছেন।’’ তিনি জানান, এখন জমির মালিকই ঠিক করবেন তিনি কী করবেন। এ ব্যাপারে তাঁদের কিছু বলার নেই।’’

Arambagh Unrest TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy