Advertisement
২১ মে ২০২৪

সরকারি প্রকল্পে নিজের জমি ভরাট, অভিযুক্ত নেতা

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পইপই করে দলের নেতাকর্মীদের সরকারি কাজে মাতব্বরি বা হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে কড়া বার্তা দিচ্ছেন। কিন্তু তার পরেও নানা প্রান্তে শাসকদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ওই জাতীয় অভিযোগ ওঠা বন্ধ হচ্ছে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৫৫
Share: Save:

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পইপই করে দলের নেতাকর্মীদের সরকারি কাজে মাতব্বরি বা হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে কড়া বার্তা দিচ্ছেন। কিন্তু তার পরেও নানা প্রান্তে শাসকদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ওই জাতীয় অভিযোগ ওঠা বন্ধ হচ্ছে না।

এ বার একশো দিনের কাজ প্রকল্পে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে নিজের জমি ভরাট করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল আরামবাগের আরান্ডি-১ পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েতটির ১৩টি আসনই তৃণমূলের দখলে রয়েছে। সোহরাবের স্ত্রী আকলিমা বেগম পঞ্চায়েতের প্রধান। ফলে, তাঁর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনায় ক্ষুব্ধ পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশও।

প্রধান বা তাঁর স্বামী অভিযোগ মানতে চাননি। পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কিছু গ্রামবাসী এ নিয়ে সম্প্রতি ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। তাঁদের অভিযোগ, ওই তৃণমূল নেতার চাপ ও হুমকিতে প্রায় পৌনে ৬ লক্ষ টাকার ওই কাজটি অনুমোদন করা হয়। প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার কমলেশ মণ্ডল জানান, ওই প্রকল্পের আওতায় ভূমি উন্নয়নের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট শ্রেণিভুক্ত না হলে এই সুযোগ পাওয়া যায় না। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার তথা আরামবাগ বিডিও বদরুজ্জামান বিষয়টি সরেজমিন দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে কোন জমি উন্নয়ন (বসবাস বা চাষযোগ্য করার জন্য) করা হবে তা নির্দিষ্ট রয়েছে। যেমন, তফসিলি জাতি-উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্তের জমি, বর্গাদার, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষির জমি, গ্রামীণ আবাস প্রকল্পের উপভোক্তা চাষির জমি, হাট-বাজার, খেলার মাঠ ইত্যাদির জমি। সাতমাসা গ্রামে সোহরাবের ১ একর ৫২ শতক জমিটি সেই শ্রেণিভুক্ত নয়। তা সত্ত্বেও সরকারি প্রকল্পে সেই জমি ভরাটের কাজ হয় পঞ্চায়েতের তত্ত্বাবধানে। তৈরি হয় মাস্টাররোলও।

প্রধান অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘প্রকল্পটি সাধারণ সভায় পাশ করেই পাঠানো হয়। পতিত একটি জমিকে চাষযোগ্য করা হয়েছে এবং প্রায় সাড়ে ৩ হাজার শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছে।” জোর করা বা প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উড়িয়ে সোহরাবের দাবি, ‘‘ভূমি উন্নয়নের সুবিধা কারা পাবেন না জানা নেই। প্রকল্পের বার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভূক্তির জন্য আবেদন করেছিলাম। তা অনুমোদন হয়েছে।’’

গ্রামবাসীদের অনেকেই মনে করছেন, নিজে শাসকদলের নেতা এবং স্ত্রী প্রধান হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়েছেন সোহরাব। জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত জানান, আইন মোতাবেক প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। দলও বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata banerjee CM tmc LAND
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE