হা-পিত্যেশ: উলুবেড়িয়ার যদুরবেড়িয়ায় জলের জন্য লাইন। ছবি: সুব্রত জানা
গরম পড়ার সঙ্গেই উলুবেড়িয়া-সহ হাওড়ার গ্রামীণ এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কারণ, জলস্তর হু হু করে নামছে। অধিকাংশ নলকূপে জল উঠছে না। বহু নলকূপ বেহাল। গ্রাম পঞ্চায়েত এবং জেলা পরিষদে নতুন নলকূপ চেয়ে আবেদন আসছে প্রতিদিনই।
বহু গ্রামেই জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর পাইপলাইনের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। নলকূপের জলও ব্যবহার করেন অনেকে। সমস্যা দেখা দিয়েছে মূলত নলকূপের ক্ষেত্রেই। হাওড়া জেলায় বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়েছে মাত্র কয়েকটি পঞ্চায়েতে। জেলায় মোট পঞ্চায়েতের সংখ্যা ১৫৭।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রধান শর্ত— জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পানীয় জলের পাম্প হাউসগুলি গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলা পরিষদকে হস্তান্তর। এ জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েতে সমাজের বিশিষ্ট মানুষদের নিয়ে ‘ভিলেজ লেভেল ওয়াটার অ্যান্ড স্যানিটেশন কমিটি’ গড়ার কথা। সেই কমিটিই বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহের বিষয়টি তদারক করবে। হাওড়ায় প্রতিটি পঞ্চায়েতেই ওই কমিটি গড়া হলেও, এখনও পাম্পহাউসগুলি হস্তান্তরের বিষয়টি আটকে রয়েছে।
প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘হস্তান্তরের পরে পাম্প হাউসগুলির দেখভাল এবং কর্মীদের বেতন বাবদ খরচের দায়িত্ব পঞ্চায়েতগুলি নিতে চাইছে না। সাই কারণে বিষয়টি আটকে রয়েছে। তবে জট কাটাতে আলোচনা চলছে।’’
বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহ না হওয়ায় গ্রামবাসীদের ভরসা বলতে এখনও রাস্তার ধারের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের স্ট্যান্ডপোস্ট। না হলে নলকূপ। কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতে আবার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কোনও প্রকল্পই নেই। সেখানে গ্রামবাসীদের পুরোপুরি নলকূপের উপরেই ভরসা করতে হয়। এইসব এলাকার বাসিন্দারাই বেশি সমস্যায় পড়েছেন। তাই পঞ্চায়েতগুলিকে উন্নয়নমূলক কাজের টাকা কেটে নলকূপ মেরামতির জন্য খরচ করতে হচ্ছে।
আমতার রসপুর পঞ্চায়েতে ১১০টি নলকূপ রয়েছে। এই পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই অর্ধেক নলকূপ থেকে জল ওঠা বন্ধ হয়ে গিয়েছে বা সুতোর মতো জল পড়ছে। উপপ্রধান জয়ন্ত পোল্যে বলেন, ‘‘এই তো শুরু। আরও অনেক নলকূপ থেকে জল বেরনো বন্ধ হয়ে যাবে। নলকূপগুলি মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে।’’ একই ছবি আরও অনেক পঞ্চায়েতেই।
জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ সীতানাথ ঘোষ জানান, গরমে সর্বত্র জলের অভাব হচ্ছে। নতুন নলকূপ বসিয়ে পরিস্থিতির মোতাবিলা করার চেষ্টা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy