Advertisement
E-Paper

যানজটে গতিহীন উলুবেড়িয়া শহর

পুরভবনে সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন উলুবেড়িয়া শহরের উপপুরপ্রধান আব্বাসউদ্দিন খান। শহরবাসীর নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন নুরুল আবসার। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।জগদীশপুর মসজিদতলা থেকে জেলেপাড়া এবং বাঁশতলা পর্যন্ত রাস্তা খারাপ। কিছু এলাকায় কাজ হলেও ঠিকাদারদের উপরে নজরদারির অভাব আছে। ফলে রাস্তার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পানীয় জলে পোকা পাওয়া যায়। কয়েকটি জায়গায় নলকূপও খারাপ।

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৬ ০১:৪০

জগদীশপুর মসজিদতলা থেকে জেলেপাড়া এবং বাঁশতলা পর্যন্ত রাস্তা খারাপ। কিছু এলাকায় কাজ হলেও ঠিকাদারদের উপরে নজরদারির অভাব আছে। ফলে রাস্তার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পানীয় জলে পোকা পাওয়া যায়। কয়েকটি জায়গায় নলকূপও খারাপ।

জাহানারা বেগম (অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপিকা), ২৪ নম্বর ওয়ার্ড

উপপুরপ্রধান: জগদীশপুর মসজিদতলা থেকে বাঁশতলা ও জেলেপাড়া পর্যন্ত পিচঢালা রাস্তা হবে। এর জন্য ৫৬ লক্ষ টাকার টেন্ডার ডাকা হয়েছে। তবে জলের পাইপলাইন যাওয়ার জন্য খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছে। সেই কাজ খুব শীঘ্রই শেষ হয়ে যাবে। তার মধ্যে বর্ষার মরসুমও চলে যাবে। আশা করা যায় পুজোর পরেই রাস্তার কাজ শুরু হয়ে যাবে। জলে পোকা বেরনো একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এইরকমটি কোথাও হয়েছে বলে আগে শুনিনি। তবে যেহেতু বিষয়টি উঠেছে তাই খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। আমার মনে হয়, পাইপলাইন ফেটে গিয়ে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

ট্যাপ কলের জলে মাঝে মাঝে বালি আসে। মাঝে কয়েকবার নোনতা জলও এসেছিল। শহরে প্রচুর ক্লাব ও সাংস্কৃতিক সংগঠন আছে। তাদের নিয়ে একটি সমন্বয় কমিটি গড়া দরকার। কমিটি গঠনের বিষয়ে পুরসভা কী ভাবছে?

সুপ্রিয় ধর (অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক), ২৭ নম্বর ওয়ার্ড

উপপুরপ্রধান: মূল পাইপ থেকে যখন শাখা পাইপ লাইনে জল আনা হয়, তখন খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়। তার ফলে হয়তো জলে বালি ঢুকে যেতে পারে। সমস্যাটি খতিয়ে দেখা হবে। জল লবণাক্ত হওয়ার কারণ হল, বানের সময় সমুদ্রের জল গঙ্গায় ঢুকে পড়েছিল। কিন্তু সমুদ্রের জল শোধন করার পরিকাঠামো পুরসভার নেই। শহরে ক্লাব এবং সাংস্কৃতিক সংস্থাগুলিকে নিয়ে সমন্বয় কমিটি গড়ার প্রস্তাবটি ভাল। তবে প্রাথমিক উদ্যোগটি নিতে হবে নাগরিকদেরই। পুরসভা অবশ্যই তাতে সামিল হবে।

বর্জ্য পরিষ্কার করা দরকার। রাস্তার উপরে আবর্জনা জমে থাকে। ফুলেশ্বরে ১১ নম্বর ফটকের কাছে বড় রাস্তায় ঝাঁট দেওয়া হলেও পাড়ার ভিতরের রাস্তা ঠিকমতো ঝাঁট দেওয়া হয় না। ভ্যাট বসানো দরকার।

মৃত্যুঞ্জয় খাঁড়া (চিকিৎসক), ২০ নম্বর ওয়ার্ড

উপপুরপ্রধান: পুরসভার নিজস্ব ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির কাজ শুরু হয়েছে বাণীতবলায় মুম্বই রোডের ধারে। সেটি কয়েক মাসের মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে। তারপরেই ভ্যাট বসানো হবে। ভ্যাট থেকে বর্জ্য নিয়ে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ফেলার জন্য গাড়িও কেনা হয়েছে। এ ছাড়া পাড়ার ভিতরে বসানো হবে ছোট ভ্যাট। তা থেকে ছোট গাড়িতে করে বর্জ্য তুলে এনে ফেলা হবে মূল ভ্যাটে। ছোট গাড়ি কেনার জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে। পাড়ার রাস্তায় ঝাঁট দেওয়ার জন্য সাফাইবন্ধুরা আছেন। তাঁরা সপ্তাহে দু’দিন রাস্তা ঝাঁট দেন। সময় আরও বাড়ানো যায় কি না ভেবে দেখা হবে।

এই দৃশ্য রোজকার। তার মধ্য দিয়েই যাতায়াত করতে হয় বহু মানুষকে। মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের সামনে।

ছবি: সুব্রত জানা।

রাস্তার নামকরণ মনীষীদের নামে করা যায় কি না তা ভেবে দেখার জন্য অনুরোধ করছি।

সুবীর সেন (চিকিৎসক),২৯ নম্বর ওয়ার্ড

উপপুরপ্রধান: রাস্তার নামকরণ মনীষীদের নামে করার জন্য একবার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে নানা কারণে সেই উদ্যোগ ভেস্তে যায়। ফের এ ব্যাপারে আলোচনা করা হবে।

স্টেশন রোড এবং ওটি রোড এলাকায় প্রচুর নার্সিং হোম, আবাসন তৈরি হয়েছে। কিন্তু এই দু’টি রাস্তায় ফুটপাথ বেদখল হয়ে গিয়েছে। তার উপরে রাস্তার উপরেই গাড়ি পার্কিং করা হয়। ফলে যাতায়াতের খুব অসুবিধা হচ্ছে।

মহম্মদ ফারুক (শিক্ষক),২৭ নম্বর ওয়ার্ড

উপপুরপ্রধান: জবরদখলকারীদের সরাতে হলে তাঁদের পুনর্বাসন দরকার। এ ব্যাপারে সর্বজনগ্রাহ্য নীতি প্রণয়ন করার প্রয়োজন আছে। বেআইনি পার্কিং রুখতে একটি পার্কিং জোন করা যায় কি না সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করার দরকার। খুব শীঘ্র পুরসভার উদ্যোগে নাগরিক কনভেনশন ডাকা হবে। সকলের মতামত নিয়ে এ ব্যাপারে কী করা যায় দেখছি।

রবীন্দ্রভবনের ভাড়া বেশি। বাণিজ্যিক কারণে যাঁরা এই হল ভাড়া নেন, তাঁদের পক্ষে হয়তো ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের মতো যাঁরা সখের নাটকের দল চালান তাঁদের জন্য ভাড়া কম করা উচিত। এ বিষয়ে ভেবে দেখলে ভাল হয়।

অনুপ চক্রবর্তী (নাট্যকর্মী),২০ নম্বর ওয়ার্ড

উপপুরপ্রধান: ২ ঘণ্টার অনুষ্ঠানের জন্য হল চালাতে যে খরচ, তাতে ভাড়া কমালে পুরসভার ক্ষতি হবে। এর মধ্যেও আমরা কিন্তু অপেশাদার নাটক বা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর জন্য ভাড়া কমিয়েই নিই।

নিমদিঘিতে নিকাশি নালা দখল করে দোকান তৈরি হয়েছে। ফলে সমস্যা হয়েছে।

বাসুদেব দাস (অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক),২৯ নম্বর ওয়ার্ড

উপপুরপ্রধান: মোট ৩০ জন জবরদখলকারী ওই নিকাশি নালা জবরদখল করে আছেন। তাঁদের চিঠি দিয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে। তাতে কাজ না হলে পুরসভা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

পুরএলাকায় বসবাসকারী কিছু প্রতিবন্ধী ভাতা পেলেও, অধিকাংশই তা থেকে বঞ্চিত। পুরসভা ভবনে প্রতিবন্ধীদের ঢোকার জন্য ‌র‌্যাম্প নেই। প্রতিবন্ধীদের সমস্যা শোনার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনও আধিকারিক নেই। পুরসভা পরিচালিত স্কুলে প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। পরীক্ষায় তারা ভাল ফল করে। যদি তাদেরও সংবর্ধনা দেওয়া হয় তারা উৎসাহ পাবে।

অজয় দাস (সমাজকর্মী),২৯ নম্বর ওয়ার্ড

উপপুরপ্রধান: পুরসভার পক্ষ থেকে কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা দেব। ওই সময়েই প্রতিবন্ধীদের মধ্যে যারা কৃতী তাদেরও সংবর্ধনা দেওয়া হবে। প্রতিবন্ধী ভাতা নিয়ম মেনেই দেওয়া হয়। প্রতিবন্ধীদের প্রতিটি সমস্যা পুরসভার পক্ষ থেকে গুরুত্ব দিয়ে শোনা হয়।

শহরের যানজট মেটাতে ওটি রোডের সমান্তরাল একটি বাইপাস করলে খুবই ভাল হয়।

শ্যামল দত্ত (সাংস্কৃতিক কর্মী),২৭ নম্বর ওয়ার্ড

উপপুরপ্রধান: লেভেলক্রশিং-এ উড়ালসেতু তৈরি হচ্ছে। তা হয়ে গেলে মেদিনীপুর ক্যানেলের বাঁধের উপর দিয়ে বাইপাস তৈরি করা হবে।

বাউড়িয়া ফোর্ট গ্লস্টার এলাকায় শ্রমিক আবাসনে প্রায় সাড়ে মানুষ বসবাস করেন। এখনও এই আবাসনে খাটা শৌচাগার রয়েছে। এর বর্জ্য সরাসরি গঙ্গায় পড়ে।

তুষারকান্তি মণ্ডল (শিক্ষক), ৪ নম্বর ওয়ার্ড

উপপুরপ্রধান: ওই শৌচাগার সরানোর জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তার বদলে নতুন শৌচাগার করতে বলা হয়েছে। তবে পুরসভা অনেক শৌচাগার তৈরি করেছে। প্রয়োজনে আরও করা হবে।

Traffic
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy