Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভারী বৃষ্টিতে নাস্তানাবুদ হাওড়া

বর্ষার প্রথম ভারী বর্ষণে বানভাসি হল হাওড়া শহর। সোম ও মঙ্গলবারের বৃষ্টিতে জল জমল হাওড়া পুরসভার ৬৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টির বেশি ওয়ার্ডে। কয়েক জায়গায় জল দ্রুত নেমে গেলেও অধিকাংশ ওয়ার্ডে রাত পর্যন্ত জল নামেনি।

পানিপথ: বৃষ্টির জমা জলে বেহাল জনজীবন। সালকিয়ার ঘোষপাড়ায়। মঙ্গলবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

পানিপথ: বৃষ্টির জমা জলে বেহাল জনজীবন। সালকিয়ার ঘোষপাড়ায়। মঙ্গলবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৮ ০২:১২
Share: Save:

বর্ষার প্রথম ভারী বর্ষণে বানভাসি হল হাওড়া শহর। সোম ও মঙ্গলবারের বৃষ্টিতে জল জমল হাওড়া পুরসভার ৬৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টির বেশি ওয়ার্ডে। কয়েক জায়গায় জল দ্রুত নেমে গেলেও অধিকাংশ ওয়ার্ডে রাত পর্যন্ত জল নামেনি। যদিও পুরসভার দাবি, জল জমলেও তা দ্রুত নেমে গিয়েছে। এখন যে সব নিচু এলাকায় জমা জল রয়েছে গঙ্গায় ভাটা এলে সেই জলও নেমে যাবে।

বেশি বৃষ্টি হলে জল জমবে হাওড়ায় এটা নতুন কোনও কথা নয়। কিন্তু সেই জল দ্রুত নামাতে হলে বছরভর নিকাশি সংস্কারের প্রয়োজন। কিন্তু অভিযোগ, গত ৩০ বছর ধরে জমা জলের যে ছবি সাধারণ মানুষ দেখে অভ্যস্ত, এ দিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অর্থাৎ এ বছরও সেই নিকাশি সংস্কারের ব্যর্থতার ছবিটাই ফের ফুটে উঠেছে। যেমন, সোমবারের রাতভর বৃষ্টির পরে বানভাসি হয়ে গিয়েছে পুরসভার অন্তত ২০টি ওয়ার্ড। যার মধ্যে সব থেকে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ১৯, ২০, ২১, ২২ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্চাননতলা রোড, বেলিলিয়াস লেন ও বেলিলিয়াস রোড, ডুমুরজলা এইচআইটি আবাসন-সহ ওই চারটি ওয়ার্ডের অধিকাংশ অলিগলি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এত জল জমলেও ওই সব এলাকায় পুরকর্মী বা নিকাশি দফতরের অফিসারদের দেখা যায়নি। এলাকার লোকজনকেই অবশেষে ম্যানহোলের ঢাকনা সরাতে হয়েছে। এ দিন জল জমেছে, লিলুয়া ও বালির বিভিন্ন এলাকা-সহ উত্তর হাওড়ার বিভিন্ন অংশেও।

জমা জলে সব থেকে বেশি নাজেহাল হতে হয়েছে ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের। ওই এলাকার বেনারস রোড, ঘোষপাড়া, কামিনী স্কুল লেনে কোথাও হাঁটুজল, কোথাও কোমর সমান জল জমে যায়। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই এলাকাগুলিতে নিকাশির কোনও উন্নতি হয়নি গত ৩০ বছরেও। তাই এক বার জল জমলে তা নামতে অন্তত ১৫ দিন লাগে।

স্থানীয় গৃহবধূ অপর্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘২১ বছর ধরে দেখছি, এখনও পর্যন্ত কোনও বর্ষায় জল জমেনি এমনটা হয়নি। গত বছর ছেলে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে গিয়েছে অতিরিক্ত জামা প্যান্ট হাতে নিয়ে। নিকাশির কোনও কাজই এই এলাকায় হয়নি।’’

অপর্ণাদেবী এ কথা বললেও এলাকার কাউন্সিলর তথা হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ বাণী সিংহরায় বলেন, ‘‘নিকাশির কাজ হয়েছে বলেই ম্যানহোল খুলে দেওয়ার পর জল হু হু করে নেমে গিয়েছে। কয়েকটি জায়গায় আছে কারণ সেগুলি অত্যন্ত নিচু এলাকা। নতুন পাম্প হাউস কাজ শুরু করে দিলে তাও থাকবে না।’’

হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কয়েকটি নিচু এলাকায় জল জমেছে। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয়। হাওড়া শহরের জল নামার জন্য
গঙ্গার জলস্তরের উপরে নির্ভর করতে হয়। জলস্তর নামলেই জল নেমে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Water Logging Rain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE