Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঝুঁকি নিয়ে মুমূর্ষু শিশুকে বাঁচাল জেলা হাসপাতাল

কঠিন রোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য ‘পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট’ (পিআইসিইউ) এখানে নেই। তা সত্ত্বেও প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট’ (সিসিআই)-এই বিশেষ ব্যবস্থা গড়ে ভিন্ রাজ্যের সাত মাসের এক মুমূর্ষু শিশুর প্রাণ বাঁচাল চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল।

জীবনে-ফেরা: হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে শিশুটির। নিজস্ব চিত্র।

জীবনে-ফেরা: হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে শিশুটির। নিজস্ব চিত্র।

তাপস ঘোষ
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৫৩
Share: Save:

কঠিন রোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য ‘পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট’ (পিআইসিইউ) এখানে নেই। তা সত্ত্বেও প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট’ (সিসিআই)-এই বিশেষ ব্যবস্থা গড়ে ভিন্ রাজ্যের সাত মাসের এক মুমূর্ষু শিশুর প্রাণ বাঁচাল চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল।

বিহারের বৈশালি জেলার ডগরু এলাকার বাসিন্দা ঋষিকা নামে ওই শিশুটি ব্রঙ্কিওলাইটিসে ভুগছিল। গত রবিবার মা চন্দা তাকে নিয়ে ব্যান্ডেলের মানসপুরে দাদার বাড়িতে আসেন। ওই দুপুরেই দুধ খাওয়ার সময়ে তা শিশুটির শ্বাসনালিতে আটকে যায়। তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাকে ভর্তি করানো হয় ওই হাসপাতালে। কিন্তু শিশুদের চিকিৎসার বিশেষ বিভাগ না-থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথমে শিশুটিকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রাজি হননি শিশুটির বাবা-মা। আর্থিক সামর্থ্য না-থাকার কথা বলে তাঁরা ওই হাসপাতালেই চিকিৎসার আর্জি জানান। তারপরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিশেষ ব্যবস্থা গড়েন। শিশু বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তিন সদস্যের বোর্ড গড়ে শুরু হয় চিকিৎসা।

‘যুদ্ধ’ জয়ের পরে এখন স্বস্তিতে চিকিৎসকেরা। তবে এখনও শিশুটিকে ছাড়া হয়নি। চিকিৎসকেরা তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। চিকিৎসক পার্থ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘শিশুটির কঠিন রোগ হয়েছিল। এখানে রেখে ওকে বাঁচানো শক্ত ছিল। কারণ এখানে সেই পরিকাঠামো নেই। কিন্তু ওর বাবা-মায়ের অসহায়তার কথা ভেবেই ঝুঁকি নিলাম। সাফল্য এল।’’ আর হাসপাতালের সুপার উজ্জ্বলেন্দুবিকাশ মণ্ডল মনে করছেন, আগামী দিনেও এই ধরনের রোগের চিকিৎসায় সাড়া মিলবে এই হাসপাতালেই।

ঋষিকার মা চন্দা বলেন, ‘‘এখানকার ডাক্তারবাবুরা ভগবান। ধরেই নিয়েছিলাম মেয়েকে বাঁচানো যাবে না। কিন্তু ডাক্তারবাবুরা মেয়ের পুনর্জন্ম দিলেন।’’ বাবা অখিলেশ কুমার এবং মা চন্দার একমাত্র মেয়ে ঋষিকা। অখিলেশ কলকাতায় দিনমজুরির কাজ করেন। মাঝেমধ্যে ‘দেশে’ ফেরেন। স্বামীর কাছে কিছুদিন থাকবেন বলে গত নভেম্বরে মেয়েকে নিয়ে কলকাতায় আসেন চন্দা। এখানেই ব্রঙ্কিওলাইটিসে আক্রান্ত হয় ঋষিকা। এখানে তার চিকিৎসাও শুরু হয়েছিল। চন্দা ঠিক করেছিলেন, ‘দেশে’ ফিরে মেয়েকে সেখানকার ডাক্তার দেখাবেন। কিন্তু রবিবার ব্যান্ডেলে যাওয়ার পরেই ওই ঘটনা।

ঋষিকার সুস্থ হওয়ার কথা জানতে পেরে চিকিৎসকদের প্রশংসায় হাসপাতালের অন্য রোগীরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE