Advertisement
১৬ মে ২০২৪

ইন্দিরা আবাসে কারচুপি, টাকা আটকালেন বিডিও

ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্প রূপায়ণে কারচুপি করায় ১৪৪ জন বেনিফিসিয়ারির দ্বিতীয় কিস্তির টাকা আটকে দিল আরামবাগ ব্লক প্রশাসন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৪ ০০:৩৬
Share: Save:

ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্প রূপায়ণে কারচুপি করায় ১৪৪ জন বেনিফিসিয়ারির দ্বিতীয় কিস্তির টাকা আটকে দিল আরামবাগ ব্লক প্রশাসন।

নিয়ম অনুযায়ী এই প্রকল্পে পাওয়া টাকায় পাকা ঘর তৈরির কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ওই বেনিফিসিয়ারিরা ছিটেবেড়া দেওয়া মাটির বাড়ি করে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দাবি করেছিলেন বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর। ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে ওই কারচুপি দেখতে পান। আরামবাগের বিডিও প্রণব সাঙ্গুই বলেন, “মাস খানেকের মধ্যে ইটের ঘর তৈরির জন্য ওঁদের চূড়ান্ত সময় দেওয়া হয়েছে। তা না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আরামবাগ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বেনিফিসিয়ারিরা ছিলেন ২০১১-২০১২ এবং ২০১২-২০১৩ আর্থিক বছরের। আরামবাগ ব্লকের ১৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ওই দুই আর্থিক বছরে ৮১৪টি করে ইন্দিরা আবাস যোজনায় ঘর তৈরির কোটা ছিল। প্রকল্প পিছু বরাদ্দ ৪৫ হাজার টাকার প্রথম কিস্তি হিসাবে বেনিফিসিয়ারিদের সাড়ে ২২ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। প্রথম কিস্তির টাকার সদ্ব্যবহারের শংসাপত্র দিলে তবেই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পান বেনিফিসিয়ারি। সেই মতো ১৪৪ জন বেনিফিসিয়ারির প্রথম কিস্তির প্রাপ্ত টাকার সদ্ব্যবহার সংক্রান্ত শংসাপত্র জমাও পড়ে। কিন্তু ব্লক প্রশাসনের পক্ষে সেই শংসাপত্র যাচাই করতে গিয়েই ধরা পড়ে কারচুপি।

শুরুতে তিরোল, বাতানল, সালেপুর ১ ও ২, হরিণখোলা ১ ও ২, গৌরহাটি ১ ও ২, মায়পুর ১ ও ২, মাধবপর, আরান্ডি ১ ও ২ এবং মলয়পুর ১ ও ২ মোট ১৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েতে দেখা যায় কারচুপি করে পাকা ঘরের বদলে ৩০০টি মাটির বাড়ি হয়েছে। এর পরেই প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করায় ওই সংখ্যা ১৪৪-এ দাঁড়িয়েছে। ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, গত সোমবার বাতানল পঞ্চায়েতের বাতানল গ্রামের দলুই পাড়ায় পরিদর্শনে গেলে কয়েকজন বেনিফিসিয়ারি পরিদর্শককে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। এমনকী অন্য লোকের পাকা বাড়ি দেখিয়ে তা নিজের বলে দাবি করেন কয়েকজন বেনিফিসিয়ারি। কেউ আবার অন্যের জমায়েত করা ইমারতির সামগ্রী নিজের বলে দাবি করে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দাবি করেন।

ইন্দিরা আবাসের টাকায় পাকা ঘরের বদলে মাটির বাড়ি করা কয়েকজন বেনিফিসিয়ারি বন্দনা দলুই, শকুন্তলা দলুই, বিজলী দাস, সন্ধ্যা ধাড়া, কল্পনা দলুই, ঝর্না দলুই এ জন্য অন্যায় স্বীকার করেছেন। পাশাপাশি শীঘ্রই পাতা ঘর তৈরি করবেন বলে প্রশাসনকে জানিয়ছেন।

দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী (বিপিএল তালিকাভুক্ত) বা সহায় সম্বলহীন পরিবারকে পাকা ঘর তৈরির জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ১৯৯৬ সালে কেন্দ্রীয় এই প্রকল্প চালু হয়। প্রকল্পটি রূপায়ণের ক্ষেত্রে বার বার নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে নতুন নিয়ম চালু হয়। আগে দুই কিস্তিতে টাকা দেওয়ার নিয়ম ছিল। তা পাল্টে তিন কিস্তিতে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বাড়ি তৈরির প্রতিটি ধাপের ছবি ওয়েবসাইটে আপলোড বাধ্যতামূলক করা হয় এবং সেই অনুযায়ী ধাপে ধাপে টাকা দেওয়ার নিয়ম চালু হয়। ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে আরামবাগ ব্লক প্রশাসন পেয়েছে ১৪ লক্ষ টাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

indira awas yojana bdo arambagh southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE