Advertisement
০৮ মে ২০২৪

উচ্চ মাধ্যমিকেও ছাত্রদের চেয়ে বেশি ছাত্রী

মাধ্যমিকের মতো এ বার উচ্চ মাধ্যমিকেও ছাত্রীর সংখ্যা বাড়ল হাওড়া ও হুগলি দুই জেলাতেই। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হুগলিতে এ বার মোট পরীক্ষার্থী ৪৫ হাজার ৮৯৬ জন। এর মধ্যে ছাত্রসংখ্যা ২১ হাজার ৬৬৩ জন। ছাত্রী ২৪ হাজার ২৩৩ জন। অর্থাৎ, ছেলেদের থেকে ২৫৭০ জন বেশি মেয়ে এই জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকে বসছে। জেলার ৪টি মহকুমার মধ্যে একমাত্র আরামবাগে ছেলেদের সংখ্যা সামান্য বেশি।

চলছে পরীক্ষার প্রস্তুতি।

চলছে পরীক্ষার প্রস্তুতি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৫ ০১:৪৯
Share: Save:

মাধ্যমিকের মতো এ বার উচ্চ মাধ্যমিকেও ছাত্রীর সংখ্যা বাড়ল হাওড়া ও হুগলি দুই জেলাতেই।

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হুগলিতে এ বার মোট পরীক্ষার্থী ৪৫ হাজার ৮৯৬ জন। এর মধ্যে ছাত্রসংখ্যা ২১ হাজার ৬৬৩ জন। ছাত্রী ২৪ হাজার ২৩৩ জন। অর্থাৎ, ছেলেদের থেকে ২৫৭০ জন বেশি মেয়ে এই জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকে বসছে। জেলার ৪টি মহকুমার মধ্যে একমাত্র আরামবাগে ছেলেদের সংখ্যা সামান্য বেশি।

হাওড়ায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ হাজার ১২০ জন। তাদের মধ্যে নিয়মিত পরীক্ষার্থী ৩৬ হাজার ৯৮৪ জন। তার মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ১৯ হাজার ৬৭৭ জন। ছাত্র ১৭ হাজার ৩০৭ জন। অন্য, দিকে কম্পার্টমেন্টাল পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র এবং ছাত্রীর সংখ্যা হল যথাক্রমে ৬ হাজার ৬৯ জন এবং ৭ হাজার ৬৭ জন।

আজ, শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক। টুকলি রুখতে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে দুই জেলাতেই। বাইরে থেকে পরীক্ষার্থীদের টুকলি সরবরাহ আটকাতে কড়া নজর রাখবে পুলিশ। ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল ব্যবহারেও থাকছে কড়া নিষেধাজ্ঞা।

সংসদ সূত্রের খবর, হুগলিতে অন্তত ৮টি স্কুলে ভিডিওগ্রাফি করা হবে। এই স্কুলগুলিকে ‘স্পর্শকাতর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালনার জন্য গঠিত উপদেষ্টামণ্ডলীর এক সদস্য জানান, ভাড়া করা ওই ভিডিওগ্রাফাররা পরীক্ষা চালাকালীন কোনও অবস্থাতেই কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকবেন না। তিনি বলেন, “মূলত বাইরে থেকে টুকলি সরবরাহ করা আটকাতেই শ্রেণিকক্ষের বাইরে স্কুল চত্বরে ভিডিওগ্রাফি করা হবে।” এ ছাড়াও, ভিডিওগ্রাফারদের একটি দল থাকছে। প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠানো হবে। উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যেরা বিভিন্ন কেন্দ্রে ঘুরবেন। কোথাও কোনও সমস্যা হলে তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।

জেলায় মোট ১০১টি স্কুলে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এর মধ্যে ৪০টি স্কুলকে প্রধান পরীক্ষাকেন্দ্র হিসেবে বাছা হয়েছে। সংসদের তরফে এক জন আধিকারিক ওই সব কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকবেন। অভিভাবকেরা তাঁর কাছে বা সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে যে কোনও বিষয়ে অভিযোগ বা অসুবিধার কথা জানাতে পারবেন।

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক শুক্লা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “পরীক্ষা নির্বিঘ্নে শেষ করতে যা যা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, তার সবই করা হয়েছে। আশা করছি সুষ্ঠু ভাবেই সব কিছু মিটবে।” পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত থাকবে। নিয়ম ভেঙে বাইরে থেকে কেউ পরীক্ষার্থীদের সাহায্য করতে চেষ্টা করলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ থাকবে। প্রয়োজনে পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হবে।”

সংসদ জানিয়েছে, পরীক্ষা পরিচালনা করা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে। পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরে অভিভাবকদের ঢুকতে দেওয়া হবে না। শুধুমাত্র প্রথম দিন ছাত্রছাত্রীদের আসন খুঁজে দেওয়ার জন্য তাঁরা ঢুকতে পারবেন। জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের আধিকারিকরা জানান, বাস, অটো, ট্রেকার-সহ অন্য যাত্রী পরিবহণকারী গাড়িকে সাধারণ দিনের তুলনায় ঘনঘন চালাতে বলা হয়েছে। কোনও পরীক্ষার্থী স্টপেজে না দাঁড়িয়ে মাঝপথে দাঁড়ালেও তাকে গাড়িতে তুলে নিতে হবে। কোনও ক্ষেত্রে যদি পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে স্টপেজ না-ও থাকে, সেখানে গাড়ি দাঁড় করিয়ে পরীক্ষার্থীদের নামিয়ে দিতে হবে।

হাওড়ায় পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা ১১৮টি। এর মধ্যে প্রধান পরীক্ষাকেন্দ্র ২২টি। মাধ্যমিকের মতোই উচ্চ মাধ্যমিকেও টোকাটুকি রুখতে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করেছে জেলা শিক্ষা দফতর। বাছাই করা কয়েকটি কেন্দ্রে থাকবে ভিডিওগ্রাফির ব্যবস্থা। পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে থেকেই ভিডিওতে ছবি তুলে রাখা হবে। একই ব্যবস্থা করা হয়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়েও।

জেলা স্কুল পরিদর্শক তাপস বিশ্বাস জানান, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিভাবকদের জন্যেও রাখা হয়েছে বিধিনিষেধ। কেবলমাত্র প্রথম দিন পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরে তাঁরা ঢুকতে পারবেন পরীক্ষা শুরুর আধ ঘণ্টা আগে। শুধুমাত্র স্থায়ী শিক্ষকেরাই পরীক্ষা চলাকালীন নজরদারির দায়িত্বে থাকতে পারবেন। পার্শ্বশিক্ষক বা অস্থায়ী শিক্ষকদের এই দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। যদি কোনও পরীক্ষাকেন্দ্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্থায়ী শিক্ষক না থাকেন তা হলে জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে অন্য স্কুল থেকে শিক্ষক আনার জন্য আবেদন করতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

southbengal higher secondary examination
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE