প্রজাতন্ত্র দিবসে চড়ুইভাতি করতে গিয়ে ডিঙি নৌকো উল্টে জলে ডুবে মৃত্যু হল এক স্কুলছাত্রী-সহ দু’ জনের। সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে হুগলির কানাইপুর পঞ্চায়েতের সৌরদীপ এলাকায়। পুলিশ জানায় মৃতদের নাম অন্বেষা চট্টোপাধ্যায় (১২) এবং প্রলয় গুপ্ত (৩৮)। দু’জনেরই বাড়ি ওই পঞ্চায়েতের বড় বহেরা এলাকায়। অন্বেষা মাখলা দেবীশ্বরী বিদ্যানিকেতনে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। প্রলয় চিকিত্সা সরঞ্জাম বিক্রির কাজ করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জলাশয় এবং গাছগাছালিতে ঘেরা সৌরদীপ নামের জায়গাটি হিন্দমোটর কারখানার পিছন দিকে। সোমবার প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে স্থানীয় নবগ্রাম এলাকার একটি ক্লাবের সদস্যরা পরিবার-সহ সেখানে চড়ুইভাতি করতে যান। বেলা সওয়া দু’টো নাগাদ জনা কয়েক যুবক এবং কয়েক জন ছোট ছেলেমেয়ে একটি ডিঙি নৌকোয় চেপে জলাশয়ে ঘুরছিলেন। পাড় থেকে কিছুটা দূরে যাওয়া ডিঙিটি ভারসাম্য হারিয়ে উল্টে যায়। অন্বেষা এবং প্রলয় ডুবে যায়। তাদের উদ্ধার করে উত্তরপাড়ার একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্সকেরা দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ মৃতদেহ দু’টি ময়না-তদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, চড়ুইভাতির আনন্দে ডিঙিতে বেশি লোক উঠে পড়াতেই ওই ঘটনা ঘটে। ওই ক্লাবের সদস্য সমীর গোস্বামী, মানস রায়রা জানান, ডিঙিটি উল্টে যেতেই ছোটরা হাবুডুবু খেতে থাকে। তা দেখে পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা ক্লাবের সদস্যরা জলে ঝাঁপিয়ে সকলকে তুলে আনেন। মানসবাবু বলেন, “ডিঙিতে প্রয়লের ভাইঝিও ছিল। প্রলয় ওকে বাঁচানোর জন্য উপরে তুলে ধরে। তার পরে অন্যরা ভাইঝিকে উদ্ধার করে আনে। কিন্তু প্রলয় নিজে সাঁতার জানত না। ও ডুবে যায়। সাঁতার জেনেও অন্বেষা বাঁচল না।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এলাকায় অত্যন্ত পরোপকারী হিসেবে পরিচিতি ছিল প্রলয়ের। লোকজনের আপদে-বিপদে সব সময়েই ঝাঁপিয়ে পড়তেন। তাঁর এবং অন্বেষার মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। মঙ্গলবার দু’জনেরই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy