Advertisement
০৭ মে ২০২৪

দখলদারির সমস্যায় বন্ধ খাল সংস্কার

এক সময়ে নৌকা চলত করত। হতো পণ্য পরিবহণ। এখন জল নিকাশিরও ক্ষমতা হারিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কোনও সংস্কার না হওয়ার পাশাপাশি খালের দু’ধারে দখলদারদের দাপটে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে হাওড়ার বাউড়িয়া-রাধানগর খাল।

মজে যাওয়া বাউড়িয়া-রাধানগর খাল। ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়।

মজে যাওয়া বাউড়িয়া-রাধানগর খাল। ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাউড়িয়া শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৪ ০১:৫১
Share: Save:

এক সময়ে নৌকা চলত করত। হতো পণ্য পরিবহণ। এখন জল নিকাশিরও ক্ষমতা হারিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কোনও সংস্কার না হওয়ার পাশাপাশি খালের দু’ধারে দখলদারদের দাপটে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে হাওড়ার বাউড়িয়া-রাধানগর খাল।

প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি রঘুদেববাটী, বেলডুবি, সাহাপুর, খাসখামার, চকবেনে খাঁ, রামেশ্বরনগর, রাধানগর হয়ে বাউড়িয়া ফোর্টগ্লস্টারের কাছে হুগলি নদীতে মিশেছে। এই সব এলাকার জল নিকাশি অনেকটাই নির্ভর করে এই খালের উপরে। কিন্তু বহু বছর ধরে খাল সংস্কারের কাজ বন্ধ থাকায় এই সমস্ত এলাকার নিকাশী ব্যবস্থাও বেহাল হয়ে পড়েছে। ফলে প্রতি বছর বর্ষা নামলেই প্রমাদ গোনেন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। এ বারও সেই আশঙ্কাতেই দিন কাটছে তাঁদের।

জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, খাল সংস্কারে অন্যতম প্রধান বাধা দখলদারি। সংস্কার না হওয়ার পাশাপাশি খালের দু’ধার দখল হওয়ার কারণে খাল সরু নালায় পরিণত হয়েছে। খালটি সেচ দফতরের অধীন হলেও ২০১১ সালের জুন মাসে উলুবেড়িয়া পুরসভার তত্ত্বাবধানে খাল সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু তিন মাস কাজ চলার পর জমি সংক্রান্ত জটিলতায় সংস্কার বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে এলাকায় নিকাশি যেমন বেহাল, তেমনই সেচের জল সরবরাহের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বহু বছর পর খাল সংস্কার শুরু হলেও এলাকার কিছু মানুষের দখলদারির কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

উলুবেড়িয়ার পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার সুরজিত্‌ দাস বলেন, “কয়েক বছর আগে পুরসভার তত্ত্বাবধানে খাল সংস্কার শুরু হলেও দখলদারি সমস্যার কারণে মাঝপথে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। যদি খাল সংস্কারের কাজ সেচ দফতরের তত্ত্বাবধানে করা যায় তবে সমস্যা অনেকটা কমবে।”

উলুবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান দেবদাস ঘোষ জমি জটিলতার কথা স্বীকার করে বলেন, “যাবতীয় সমস্যা মিটিয়ে শীঘ্রই বাউড়িয়া এলাকায় বিভিন্ন খাল ও কালভার্ট সংস্কার শুরু হবে।”

শুঘু রাধানগর খাল নয়, বাউড়িয়ার অন্যান্য খালগুলির দশাও একইরকম। বোউলখালি শ্মশানঘাট থেকে সিন্দুরিয়ামহল পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ আগার খালটিও বহু বছর ধরে সংস্কার হয়নি। ফলে খাল সংলগ্ন বোউলখালি, ভাষাপাড়া, সেপাইপাড়া, ২ নম্বর ফোর্টগ্লস্টার ইত্যাদি এলাকাগুলি অল্পবৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বাউড়িয়ার পূর্ববুড়িখালি থেকে খাজুরি হাইস্কুল পর্যন্ত প্রায় দেড় কিমি লম্বা খালটিও সংস্কারের অভাবে জমা জলে দূষিত হয়ে পড়ছে।

বাউড়িয়ার পূর্বখালির বাসিন্দা সৃষ্টিধর পাল, বিশ্বনাথ মিত্র প্রমুখ বলেন, “বর্ষা নামলেই ঘুম ছুটে যায়। খালে জল সরে না। ফলে অল্পবৃষ্টিতেই বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বছরের পর বছর এমন অবস্থা চলছে, অথচ প্রশাসনের কোনও নজর নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bauria-radhanagar canal renovation illegal occupation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE