Advertisement
০২ মে ২০২৪

নাবিধসা রোগে আলু চাষে ক্ষতি পুড়শুড়ায়, চিন্তায় চাষি

সামগ্রিক ভাবে আবহাওয়া অনুকূল থাকা সত্ত্বেও আলুর নাবিধসা রোগে বিপর্যস্ত পুড়শুড়া ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। ফলে, দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। কেননা, আলু তোলার সময় এগিয়ে আসছে। ওষুধ প্রয়োগ করেও প্রতিকার মিলছে না বলে তাঁদের অভিযোগ। সমস্যার কথা মেনে নিয়েছে কৃষি দফতর। রোগ প্রতিরোধের জন্য তারা প্রচারে জোর দিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুড়শুড়া শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৪৮
Share: Save:

সামগ্রিক ভাবে আবহাওয়া অনুকূল থাকা সত্ত্বেও আলুর নাবিধসা রোগে বিপর্যস্ত পুড়শুড়া ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। ফলে, দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। কেননা, আলু তোলার সময় এগিয়ে আসছে। ওষুধ প্রয়োগ করেও প্রতিকার মিলছে না বলে তাঁদের অভিযোগ। সমস্যার কথা মেনে নিয়েছে কৃষি দফতর। রোগ প্রতিরোধের জন্য তারা প্রচারে জোর দিয়েছে।

মহকুমা কৃষি আধিকারিক অশ্বিনী কুম্ভকার বলেন, “এ বার আবহাওয়া অনুযায়ী আলুর ব্যাপক ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তা সত্ত্বেও পুড়শুড়ার কয়েকটি অঞ্চলে নাবিধসা কারণ সম্ভবত দিন কুড়ি আগে হঠাৎ করে কয়েক দিন মেঘলা আবহাওয়া এবং কুয়াশা। ওই সময় গাছের সুরক্ষার জন্য যাঁরা যথাযথ তদারকি করেননি, সেখানেই রোগ ছড়িয়েছে।”

মহকুমা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগ মহকুমার ছ’টি ব্লকে মোট আলু চাষের এলাকা প্রায় ৩২ হাজার হেক্টর। তার মধ্যে পুড়শুড়ায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে চাষ হয়। মুণ্ডেশ্বরী এবং দামোদর দু’টি নদীর মধ্যে অবস্থিত পুড়শুড়ার ৮টি পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে আলুর নাবিধসা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছে কেলেপাড়া, ডিহিবাতপুর, ভাঙ্গামোড়া, শ্রীরামপুর, চিলাডাঙি ও শ্যামপুর পঞ্চায়েত এলাকায়।

চাষিদের অভিযোগ, গাছের পাতার ডাঁটা এবং কাণ্ডে বাদামি রংয়ের ক্ষত হচ্ছে। সেই ক্ষত খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে গোটা গাছে পচন ধরাচ্ছে। গাছ কালো হয়ে যাচ্ছে। মাটির তলায় থাকা আলুতে পচন ধরছে। বীজ, সার এবং কৃষি-মজুরদের পারিশ্রমিক মিলিয়ে যেখানে বিঘাপিছু ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা খরচ হওয়ার কথা, সেখানে ওষুধ প্রয়োগ করে ইতিমধ্যেই ২২-২৩ হাজার টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পোখরাজ প্রজাতির আলুই। জ্যোতি এবং চন্দ্রমুখী প্রজাতির আলুর মধ্যেও ওই রোগ ক্রমশ বাড়ছে। ওই দাগি আলু যেমন বিক্রি হবে না, তেমনই গুদামজাত করলেও পচে যাবে।

কেলেপাড়া গ্রামের আলুচাষি যশোবন্ত ধোলে ১৫ বিঘা জমিতে এ বার আলু চাষ করেছেন। তিনি বলেন, “১৫ বিঘা জমির আলুই নাবিধসায় নষ্ট হতে বসেছে। বারবার ওষুধ প্রয়োগ করেও কিছু হচ্ছে না। এখন অব্দি মোট ২৭ কেজি ওষুধ দেওয়া হয়ে গেল।” একই রকম ভাবে সমস্যার কথা জানিয়েছেন দুলালবাটি গ্রামের রমেশ দাস, ঘরগোয়াল গ্রামের সুনীল মণ্ডল, সোঁয়ালুক গ্রামের বিমল রায়েরাও।

মহকুমা কৃষি দফতর জানিয়েছে, ধসা রোগের প্রতিকারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সংক্রান্ত লিফলেট বিলি করা হচ্ছে। গ্রামে সচেতনতা শিবিরও করা হচ্ছে। কৃষি প্রযুক্তি সহায়কেরাও মাঠে ঘুরছেন চাষিদের সঙ্গে। চাষিদের বলা হচ্ছে, যে সব খেতে ওই রোগ দেখা দিয়েছে, সেখানে সেচ ও সার দেওয়া বন্ধ রাখতে হবে। অতি প্রয়োজন হলে হালকা সেচ দেওয়া যেতে পারে। ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। যে সব আলু গাছের বয়স ৭০ দিনের বেশি, সে সব গাছ দ্রুত পরিষ্কার করে পুড়িয়ে দেওয়া দরকার। মাটির তলায় থাকা আলুর বাড়তি ক্ষতি হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

southbengal potato diseases pursurah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE