Advertisement
E-Paper

নয়ানজুলির একাংশে রাস্তা কারখানার, সমস্যা চাষিদের

একটি নয়ানজুলির একাংশ বুজিয়ে একটি নির্মাণের জন্য চাষে সঙ্কট দেখা দিয়েছে জগৎবল্লভপুরের মাজু পঞ্চায়েত এলাকায়। বর্ষার সময়ে ওই নয়ানজুলি দিয়ে জমির জমা জল নামতে না পারায় ক্ষতি হচ্ছে বোরো চাষে। আবার গরমের সময়ে ওই নয়ানজুলি থেকে সেচের জল সে ভাবে না মেলায় আমন চাষেও সমস্যায় পড়ছেন চাষিরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৪ ০১:০৮
নয়ানজুলির উপরে কারখানার প্রবেশ পথ। এতে চাষের জল পেতে সমস্যায় এলাকার চাষিরা।—নিজস্ব চিত্র।

নয়ানজুলির উপরে কারখানার প্রবেশ পথ। এতে চাষের জল পেতে সমস্যায় এলাকার চাষিরা।—নিজস্ব চিত্র।

একটি নয়ানজুলির একাংশ বুজিয়ে একটি নির্মাণের জন্য চাষে সঙ্কট দেখা দিয়েছে জগৎবল্লভপুরের মাজু পঞ্চায়েত এলাকায়। বর্ষার সময়ে ওই নয়ানজুলি দিয়ে জমির জমা জল নামতে না পারায় ক্ষতি হচ্ছে বোরো চাষে। আবার গরমের সময়ে ওই নয়ানজুলি থেকে সেচের জল সে ভাবে না মেলায় আমন চাষেও সমস্যায় পড়ছেন চাষিরা। তাঁদের অভিযোগ, অবৈধ ভাবে নয়ানজুলির একাংশ মাটি ফেলে বুজিয়ে পাশে একটি কারখানা গড়ার জন্যই ওই সমস্যা। পঞ্চায়েতে এ ব্যাপারে একাধিকবার জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যে কারখানাটির দিকে গ্রামবাসীরা অভিযোগের আঙুল তুলেছেন, বছর দুয়েক আগে ফিঙেগাছি এলাকার খাঁদরাঘাট এবং ফটিকগাছির মধ্যে বিস্তৃত একটি রাস্তার ধারে নয়ানজুলিটির পাশে সেটি গড়ে ওঠে। কারখানাটিতে যাতায়াতের জন্য নয়ানজুলির একাংশে মাটি ফেলে রাস্তা তৈরি করা হয়। ওই কারখানায় গ্যাস সিলিন্ডার মেরামতি ও রং করা হয়।

কারখানার মালিক শৈলেন দলুই অবৈধ ভাবে নয়ানজুলি বোজানোর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, যাবতীয় অনুমতি নিয়েই কারখানা করা হয়েছে। রাস্তা করার অনুমতি দিয়েছে পঞ্চায়েত। তিনি বলেন, “নয়ানজুলির জলস্রোত যাতে কোনও ভাবে বাধা না পায়, তার ব্যবস্থা রেখেই তার উপরে রাস্তা করা হয়েছে। কিন্তু কী সমস্যা হচ্ছে, তা আমাকে এখনও কেউ জানাননি। কেউ জানালে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।” মাজু পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের অশোক মান্না শৈলেনবাবুর দাবি মানেননি। তিনি পাল্টা দাবি করেন, “আমরা এক বছর আগে ক্ষমতায় এসেছি। আগের বোর্ড কী করেছে জানি না। সমস্যার কথা মাস তিনেক আগে আমরাই শৈলেনবাবুকে জানিয়েছি। তখন উনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনও তা নেননি। তিনি যদি ব্যবস্থা না নেন, তা হলে মাস খানেকের মধ্যে আমরাই ব্যবস্থা নেব।”

ওই নয়ানজুলির ধারে প্রায় ২০০ হেক্টর কৃষিজমি রয়েছে। নয়ানজুলির সঙ্গে সংযোগ রয়েছে উলুবেড়িয়ার গঙ্গা থেকে বেরনোর সিদ্ধেশ্বরী খালের। ফলে, জোয়ারের সময়ে ওই নয়ানজুলি জলে ভরে উঠত। দীর্ঘদিন ধরে গরমে সেই জলে সেচের কাজ করছিলেন চাষিরা। কিন্তু কারখানাটি তৈরি হওয়ায় সেই জল নয়ানজুলিতে আসতে বাধা পাচ্ছে। আবার বর্ষার সময়ে জমা জল বেরোতে পারছে না। চাষিরা এই সমস্যার কথা জানিয়ে পঞ্চায়েতে স্মারকলিপিও দিয়েছেন।

ফিঙেগাছির এক চাষি বলেন, “বর্ষায় বিঘা পাঁচেক জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। এখনও জমিতে হাঁটুর উপরে জল। ধান নষ্টই হল। গত বছর জলের অভাবে আমন চাষও করতে পারিনি। আগামী মরসুমে কী করব জানি না।” আর এক চাষির প্রশ্ন, “কারখানার জন্য আমাদের যে ক্ষতি হচ্ছে, তা কে পূরণ করবে?”

wetland jagatballavpur problems
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy