এমন ঝুঁকি নিয়েই ওঠানামা চলে উলুবেড়িয়ার কাজিয়াখালি ঘাটে। —নিজস্ব চিত্র।
কারও হাতে চটি-জুতো। কারও কাঁধে সাইকেল। কাদা-জল মাড়িয়ে তাঁরা উঠছেন নৌকা বা ভুটভুটিতে। হাওড়ার উলুবেড়িয়া মহকুমার বিভিন্ন ফেরিঘাটে এ দৃশ্য প্রতিদিনের। যাত্রীদের এই দুর্ভোগ থেকে রেহাই দিতে অবশেষে পাঁচটি ফেরিঘাটে প্রায় দু’কোটি টাকায় কংক্রিটের জেটি বানাতে উদ্যোগী হল জেলা পরিষদ। পর্যায় ক্রমে একই ভাবে মহকুমার অন্য ফেরিঘাটগুলিতেও ওই জেটি তৈরি করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে তারা।
উলুবেড়িয়া মহকুমার উল্টো দিকে, গঙ্গার ও পাড়ে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নানা ফেরিঘাট। প্রতিদিন ওই সব ফেরিঘাট দিয়ে ইটভাটার এবং নানা প্রশাসনিক কাজে দুই জেলার ১০-১৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। এ ছাড়াও যাতায়াত করে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। প্রথম পর্যায়ে হাওড়া জেলা পরিষদ যে পাঁচটি ফেরিঘাটে কংক্রিটের জেটি বানাতে উদ্যোগী হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে হীরাপুরের কাঁটাখালি, কাজিয়াখালি এবং শ্যামপুরের শিবগঞ্জ, বেলাড়ির ৫৮ গেট এবং নবগ্রামের ধ্বজায়।
পরিবহণ দফতরের আর্থিক সাহায্যে জেটিগুলি বানাবে জেলা পরিষদ। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কল্যাণ ঘোষ বলেন, ‘‘জেটি তৈরির টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। যত দ্রুত সম্ভব নির্মাণকাজ শুরু হবে।” এর ফলে, গড়চুমুকু, গাদিয়াড়ার মতো পর্যটনকেন্দ্রগুলিতেও পর্যটক বাড়বে বলে তাঁর আশা।
উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক পুলক রায় বলেন, “জেটিপিছু ৩৮ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে। কংক্রিটের জেটি তৈরি হলে মানুষ আরও স্বচ্ছন্দে এবং নিরাপদে যাতায়াত করতে পারবেন। দুই জেলায় যোগাযোগ আরও বাড়বে। লঞ্চ চালানোরও চেষ্টা হচ্ছে।”
কাঁটাখালি ফেরিঘাটের ও পারে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়পুর ফেরিঘাট। কাজিয়াখালির ও পারে হীরাগঞ্জ। শিবগঞ্জের উল্টো দিকে নৈনান। ধ্বজার অপর পাড়ে ফলতা এবং ৫৮ গেটের বিপরীতে পড়ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বুরুল ফেরিঘাট। তবে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ওই সব ফেরিঘাটে এখনও পাকা জেটি নেই। ফলে, যাত্রীদের একাংশের ক্ষোভ, এক দিকের সমস্যা মিটে গেলেও অন্য পাড়ে গিয়ে তাঁদের দুর্ভোগ পোহাতে হবে। হাওড়ার অন্য ফেরিঘাটগুলিতেও পাকা জেটির দাবি তুলেছেন তাঁরা। খেয়া পারাপারের বেহাল অবস্থার জন্য বেশি সময় লাগলেও বহু মানুষ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বদলে বাগনান হয়ে কলকাতায় যান। অন্য ফেরিঘাটগুলিতে কংক্রিটের জেটি হলে যাতায়াত অনেক সহজ হবে মনে করছেন তাঁরা। শিবগঞ্জ-নৈনান ফেরিঘাটের মধ্যে ভুটভুটিতে যাত্রী পারাপার করান রবীন্দ্রনাথ দাস। তিনি জানান, ভাটার সময় যাত্রীদের সমস্যা বাড়ে। কারণ, নদীর জল কমে গেলে ভুটভুটি ঘাটে ভিড়তে পারে না। যাত্রীদের জলকাদা মাড়িয়ে ভুটভুটিতে উঠতে হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy