গলায় নাইলনের দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় একটি বন্ধ কারখানার শ্রমিকের ঝুলন্ত দেহ মিলল তাঁর ঘর থেকে। বৃহস্পতিবার সকালে ভদ্রেশ্বর লাইব্রেরি রোডের চৌমাথা এলাকার বাসিন্দা রতন মণ্ডল (৩৫) নামে ওই শ্রমিকের দেহটি তাঁরই পরিবারের লোকজন নামিয়ে পুলিশে খবর দেন।
পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদে রতন আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর দেহটি যে ঘরে মেলে, সেখান থেকে রতনের সই করা একটি ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার করে পুলিশ। তাতে নিজের মৃত্যুর জন্য রতন কাউকে দায়ী করেননি বলে পুলিশ জানিয়েছে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পরিবারের লোকজনও মনে করছেন, আর্থিক সমস্যা এবং মানসিক অবসাদে রতন আত্মঘাতী হয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ভদ্রেশ্বরেরই চটকলের যন্ত্রাংশ তৈরির একটি কারখানায় ১৪ বছর ধরে স্থায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন রতন। মাস চারেক আগে শ্রমিক অসন্তোষকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে ওই কারখানায় ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক-এর বিজ্ঞপ্তি ঝোলান কর্তৃপক্ষ। বছর সাতেক আগে তাঁর বিয়ে হলেও সন্তান না হওয়ায় আগে থেকেই তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। কাজ হারানোর পরে পুরোপুরি চুপচাপ হয়ে যান।
গত মঙ্গলবার রতনের স্ত্রী চৈতালি তেলেনিপাড়ায় বাপেরবাড়ি যান। বুধবার রাতে খাওয়ার পরে রতন একাই ঘরে ঘুমোতে যান। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত তাঁর সাড়াশব্দ না পেয়ে পরিবারের লোকজন দরজা ভেঙে সিলিং ফ্যানে রতনের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। খবর দেওয়া হয় পুলিশে।
স্বামীর মৃত্যুর কথা শুনে এ দিন বাপেরবাড়ি থেকে চলে আসেন চৈতালি। তিনি বলেন, “কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর্থিক সমস্যা বাড়ছিল। সেই কারণে স্বামী মানসিক অবসাদে ভুগছিল। বেশ কিছু দিন ধরেই চুপচাপ হয়ে গিয়েছিল। ও যে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুকেই বেছে নেবে বুঝতে পারিনি।” বাবা মহানন্দ মণ্ডল বলেন, “একে চাকরি নেই। সন্তান না হওয়ার কষ্টও ছিল। মনে হয়ে এই দুই কারণেই ছেলে আত্মহত্যা করল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy