Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ভূমিহীনদের পাট্টা বিলি জগদ্বল্লভপুরে

সোমবার হাওড়ার জগদ্ববল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয়ে যেন মেলা বসেছিল। দফতরে ভিড় করেছিলেন প্রচুর ভূমিহীন মানুষ। দীর্ঘ লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েও ধৈর্যহারা নন কেউই। কারণ লাইনে দাঁড়ানো অবস্থাতেই মানুষগুলির হাতে প্রশাসনের কর্তারা তুলে দিচ্ছিলেন জমির পাট্টা। পাট্টাপ্রাপকদের কেউ পেয়েছেন তিন শতক আবার কেউ পেয়েছেন পাঁচ শতক জমি। হাতে জমি পেয়ে স্বভাবতই খুশি মানুষগুলি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জগদ্বল্লভপুর শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৪ ০১:৫০
Share: Save:

সোমবার হাওড়ার জগদ্ববল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয়ে যেন মেলা বসেছিল। দফতরে ভিড় করেছিলেন প্রচুর ভূমিহীন মানুষ। দীর্ঘ লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েও ধৈর্যহারা নন কেউই। কারণ লাইনে দাঁড়ানো অবস্থাতেই মানুষগুলির হাতে প্রশাসনের কর্তারা তুলে দিচ্ছিলেন জমির পাট্টা। পাট্টাপ্রাপকদের কেউ পেয়েছেন তিন শতক আবার কেউ পেয়েছেন পাঁচ শতক জমি। হাতে জমি পেয়ে স্বভাবতই খুশি মানুষগুলি। এ দিন জগদ্বল্লভপুরে মোট ১ হাজার ৩১০ জন ভূমিহীন মানুষের হাতে ‘নিজ ভূমি নিজ গৃহ’ প্রকল্পে জমির পাট্টা তুলে দেওয়া হল। জেলাশাসক শুভাঞ্জন দাস বলেন, ‘‘পরবর্তী কাজ হল এই সব ভূমিহীনদের মধ্যে যাঁরা উপযুক্ত, ইন্দিরা আবাস যোজনা বা গীতাঞ্জলি প্রকল্পে তাঁদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়া।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, সারা জেলায় যেখানে নিজ ভূমি নিজ গৃহ প্রকল্পে জমির পাট্টা দেওয়ার ক্ষেত্রে সাফল্যের হার বেশ কম সেখানে জগদ্বল্লভপুরের মতো একটি ব্লকে এই সংখ্যা একটা রেকর্ড। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ২০১২-’১৩ সালে সাকুল্যে পাট্টা দেওয়া হয়েছিল ৫১৬ জনকে। ২০১৩-’১৪ সালে জেলায় পাট্টা পেয়েছিলেন ৭৭৪ জন। জগদ্বল্লভপুরে পাট্টা প্রাপকদের সংখ্যা বাড়ার কারণ, গত বছরের নভেম্বর মাসে রাজ্য জুড়ে এক সমীক্ষায় দেখা যায় হাওড়া জেলার মধ্যে জগদ্বল্লভপুরেই ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এর ফলে ইন্দিরা আবাস, গীতাঞ্জলি প্রকল্প প্রভৃতির রূপায়ণে সাফল্য আসছিল না। কারণ এইসব প্রকল্পে বাড়ি পেতে হলে নিজের নামে জমি থাকা বাঞ্ছনীয়। দেখা যায় এই ব্লকে একেকটি বাড়িতেই ঠেসাঠেসি করে অনেকে থাকেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেরই নিজের জমি নেই। এই অবস্থায় এই সব ভূমিহীনদের যুদ্ধকালীন তপরতায় নিজ ভূমি নিজ গৃহ প্রকল্পের অধীনে আনতে উদ্যোগী হয় প্রসাসন। ব্লক প্রশাসন, ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর এবং পঞ্চায়েত সমিতি যৌথভাবে জমির খোঁজে নামে।

পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মহম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘‘আমরা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাছে খাস জমির তালিকা চেয়েছিলাম। তালিকা অনুযায়ী জমি সরেজমিন পরিদর্শনের পর তা আইনানুগ পদ্ধতিতে ভূমিহীনদের মধ্যে বিলি করার ব্যবস্থা হয়।’’ এ দিন দুপুর ২টো থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত পাট্টা বিলি করা হয়। তবে সবাইকে পাট্টা দেওয়া সম্ভব হয়নি। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে কাল, বুধবার বাকিদের পাট্টা দেওয়া হবে।

নরেন্দ্রপুরের বাসিন্দা প্রতিবন্ধী মহিলা মমতা ধর পাঁচ শতক জমির পাট্টা পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘খুব আনন্দ হচ্ছে। জমির যে মালিক হলাম, তা বিশ্বাসই হচ্ছে না।’’

অন্যদিকে, এ দিন বিকেলে ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগেও সমিতির দফতরে ভূমিহীনদের মধ্যে জমির পাট্টা বিলি করা হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায়, স্থানীয় বিধায়ক আবুল কাশেম মোল্লা ও ডোমজুড়ের বিডিও তমোঘ্ন কর। পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ সজল ঘোষ (বীরু) জানান, এ দিন মহিয়াড়ী (১), মাকড়দহ (২) ও দক্ষিণ ঝাঁপড়দহ পঞ্চায়েতের মোট ৪৯জনকে জমির পাট্টা দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

landless farmers land lease jagadballavpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE