Advertisement
০৫ মে ২০২৪

শ্লীলতাহানি, তরুণীই ধরালেন অভিযুক্তকে

প্রকাশ্য রাজপথে এক তরুণীর শ্লীলতাহানি করছে এক যুবক। ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে পরিত্রাহি চিৎকার করছেন ওই তরুণী। কিন্তু তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসছেন না কেউ। শেষে নিজেই ওই যুবককে এলোপাথাড়ি চড়-ঘুষি মারতে শুরু করলেন তিনি। তার পরে তার কলার চেপে ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেলেন সামনে চৌরাস্তার মোড়ে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাওড়া শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৩২
Share: Save:

প্রকাশ্য রাজপথে এক তরুণীর শ্লীলতাহানি করছে এক যুবক। ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে পরিত্রাহি চিৎকার করছেন ওই তরুণী। কিন্তু তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসছেন না কেউ। শেষে নিজেই ওই যুবককে এলোপাথাড়ি চড়-ঘুষি মারতে শুরু করলেন তিনি। তার পরে তার কলার চেপে ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেলেন সামনে চৌরাস্তার মোড়ে। এই দৃশ্য দেখে মুহূর্তে সেখানে ভিড় জমে গেল। ওই তরুণীর মুখে ঘটনাটি শোনার পরে এলাকার বাসিন্দারা বেধড়ক মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন ওই যুবককে।

শুক্রবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার দাশনগর রেল স্টেশনের কাছে হাওড়া-আমতা রোডে। শ্লীলতাহানির অভিযোগে সুব্রত চন্দ নামে বছর পঁয়ত্রিশের ওই যুবককে পুলিশ আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। ওই তরুণী দাশনগর থানায় শ্লীনতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন।

বছর পঁচিশের ওই বিবাহিতা তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, প্রতিদিনের মতো ওই রাতেও আন্দুলের এক বিউটি পার্লার থেকে কাজ সেরে বেলিলিয়াস রোডের বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। রাত একটু বেশি হওয়ায় রিকশা বা টোটো খুঁজছিলেন বাড়ি যাওয়ার জন্য। কিছু না পেয়ে অগত্যা হাঁটতে শুরু করেন। আশপাশের অধিকাংশ দোকানপাটই তখন বন্ধ। তবু রাস্তায় লোকজন ভালই ছিল।

ওই তরুণীর অভিযোগ, তিনি যখন হাওড়া-আমতা রোড দিয়ে সানপুরের কাছে একটি মদের দোকানের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন এক যুবক তাঁর শ্লীলতাহানি করে। তিনি জানান, ঘটনার সময়ে তাঁর পরিত্রাহি চিৎকার সত্ত্বেও কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি। ওই তরুণী বলেন, “আমি প্রচণ্ড ভয় পেয়ে চিৎকার করে সাহায্য চাইছিলাম। কিন্তু রাস্তার লোকজন সব দেখেও সাহায্য তো দূর, প্রতিবাদও করেননি।”

ওই তরুণীর বক্তব্য, অভিযুক্ত যুবক পুরোপুরি মত্ত অবস্থায় ছিল। কারণ, কারও সাহায্য না পেয়ে তিনি যখন ওই যুবককে জুতো খুলে মারতে শুরু করেন, তখন তার প্রতিরোধ করারও ক্ষমতা ছিল না। ওই ভাবে যুবকটিকে কলার ধরে মারতে মারতে সামনের সানপুর মোড়ে নিয়ে যান তিনি। এই দৃশ্য দেখে সেখানে ভিড় জমে যায়। সব শোনার পরে এলাকার বাসিন্দারা অভিযুক্ত যুবককে পেটাতে শুরু করেন। পরে পুলিশ এসে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে।

কিন্তু একা হাতে ওই যুবককে মারার সাহস পেলেন কী ভাবে? ওই তরুণী বলেন, “ঘটনার পরে আমি মাথার ঠিক রাখতে পারিনি। কী যেন হয়ে গেল। আমি চিৎকার করে উঠলাম। না হলে হয়তো আরও বড় অঘটন ঘটে যেত। কারণ, পথচলতি কেউ তো ঘটনাটিকে দেখেও দেখলেন না।”

দাশনগর থানা থেকে মাত্র সিকি কিলোমিটার দূরে জনবহুল ওই রাস্তায় এই শ্লীলতাহানির ঘটনা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে বলেছেন, সামনে থানা হলেও ওই রাস্তায় রাতে টহলদারি পুলিশের দেখা মেলে না। রাস্তার পাশে প্রকাশ্যেই বিক্রি হয় চোলাই মদ-গাঁজা। পুলিশে বারংবার অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি।

এ বিষয়ে হাওড়া পুলিশের এক কর্তা বলেন, “এই ধরনের অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হত। তবে রাতে পুলিশি টহলদারি কমেছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।

অন্য দিকে, চলন্ত বাসে এক কলেজছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার ঘটনাটি ঘটে হাওড়ার বকুলতলায়। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম তাপস মাইতি। বাড়ি সাঁকারাইলে। পুলিশ জানায়, এ দিন বিকেলে ধর্মতলা-সাঁকরাইল রুটের একটি বাসে ওই ব্যক্তি ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, ওই ছাত্রীর কাছে নাজিরগঞ্জ থানার নম্বর ছিল। তিনি নাজিরগঞ্জ থানায় ফোন করে ঘটনাটি জানিয়ে বলেন বাসটি কোথায় রয়েছে। নাজিরগঞ্জ থানা বটানিক্যাল গার্ডেন থানায় ঘটনাটি জানালে পুলিশ বকুলতলার কাছে বাস থামিয়ে ওই ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

howrah molestation girl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE