বন্ধে বন্ধ চাঁপদানির অ্যাঙ্গাস জুটমিলের সামনে ধর্মঘটীরা।
শাসকদলের চাপ থাকলেও বুধবার হুগলি জেলার শিল্পাঞ্চলে বনধ্ ছিল সর্বাত্মক। জেলার অধিকাংশ কলকারখানার দরজা এদিন বন্ধ ছিল। গঙ্গা লাগোয়া জুটমিলগুলির অধিকাংশই খোলা ছিল না। যে সব কারখানা খোলা ছিল সেখানেও শ্রমিকদের উপস্থিতির হার ছিল খুবই নগণ্য।
২০১৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সেই নিরিখে বাম এবং অন্যান্য কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনের ডাকে শ্রমিক মহল্লাগুলি কী রকম সাড়া দেয় এ দিন সেটাও দেখার ছিল। যাচাই করে নেওয়ার সুযোগ ছিল রাজ্যে বিরোধীদের নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা। ফলে রাজ্যের শাসক এবং বিরোধী, সবপক্ষই বন্ধ নিয়ে ছিল উদগ্রীব। কোনওভাবে বন্ধ ব্যর্থ হলে ঢাল হিসেবে শাসকদলের বিরুদ্ধে মারধরের আগাম অভিযোগ এনে রেখে দিয়েছিল বিরোধীরা। কিন্তু বামেরা মারধরের আশঙ্কার কথা বললেও বুধবার হুগলিতে শাসকদলের ডাকাবুকোদের বন্ধ ভাঙতে সে ভাবে পথে দেখা যায়নি। বনধ্ সমর্থকেরাও সে ভাবে হই হই করে রাস্তায় নামেনি। দু’পক্ষই সে ভাবে সক্রিয় না থাকায় দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া জেলায় বড় কোনও গোলমাল এ দিন হয়নি। যেখানে হয়েছে, সেখানেই পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্বে আনে।
বুধবার উত্তরপাড়া থেকে বাঁশবেড়িয়া সর্বত্রই বনধে্র ছবি ছিল চোখে পড়ার মতো। কলকারখানা বা জুটমিলমুখো হননি শ্রমিকেরা। রিষড়া, শ্রীরামপুর, ভদ্রেশ্বর, চাঁপদানি থেকে বাঁশবেড়িয়ার গ্যাঞ্জেস, জেলার ১৪টি জুটমিলের অধিকাংশের দরজাই এদিন বন্ধ ছিল। ভদ্রেশ্বরের নর্থ শ্যামনগর জুটমিল এদিন খোলা থাকলেও শ্রমিকদের উপস্থিতি ছিল নগণ্য। রিষড়ার কাচ কারখানা এবং স্টেশন লাগোয়া জয়শ্রী টেকস্টাইল বন্ধ ছিল। জয়শ্রী ইনসুলেটর কারখানায় বনধ্ বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
ভদ্রেশ্বরের শ্যামনগর জুটমিলের সামনে মিছিল তৃণমূলের।
জেলার এক সিটু নেতা জানান, সবক্ষেত্রে শাসকদলের ভূমিকা দেখে মানুষ ওঁদের উপর আস্থা হারাচ্ছেন ক্রমেই। সে জন্যই আজকের বনধ্ সফল। যদিও জেলা তৃণমূলের এক নেতার দাবি, বামেরা যত বনধে্র রাস্তায় ফিরবে, পায়ের নীচ থেকে ততই ওদের মাটি সরে যাবে। মানুষ ৩৪ বছর যে বনধে্র রাজনীতি দেখেছে তা আর ফিরিয়ে আনতে চান না তাঁরা।
তবে শাসক ও বিরোধীদের এই তরজায় ভ্রূক্ষেপ নেই মানুষের। তাঁদের কাছে যে নিরাপত্তার প্রশ্নই সবচেয়ে বড়, তার প্রমাণও মিলেছে। কাজে না যাওয়া এক শ্রমিকের কথায়, ‘‘এই সব দিনগুলিতে কোনও ঝুঁকি নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’’
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy