Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পাল্টা সভা করে ভিড় টেনে দেখাল তৃণমূল

 ভরা সভা করে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল বিজেপি। চার দিনের মাথায় শুক্রবার সেই পুরুলিয়ার ট্যাক্সিস্ট্যান্ডেই ধিক্কার সভা ডেকে ভিড় দেখিয়ে দিল তৃণমূল। ভিড়ের নিরিখে তাঁরাই এগিয়ে বলে দাবি করলেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

জমায়েত: পুরুলিয়া ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে তৃণমূলের ধিক্কার সভা। শুক্রবার। ছবি: সুজিত মাহাতো

জমায়েত: পুরুলিয়া ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে তৃণমূলের ধিক্কার সভা। শুক্রবার। ছবি: সুজিত মাহাতো

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:২২
Share: Save:

ভরা সভা করে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল বিজেপি। চার দিনের মাথায় শুক্রবার সেই পুরুলিয়ার ট্যাক্সিস্ট্যান্ডেই ধিক্কার সভা ডেকে ভিড় দেখিয়ে দিল তৃণমূল। ভিড়ের নিরিখে তাঁরাই এগিয়ে বলে দাবি করলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও কয়েকদিনের ব্যবধানে দু’টি বড় দলের সভায় শহরের প্রাণকেন্দ্র কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে থাকায় সমস্যায় পড়লেন পথে বের হওয়া সাধারণ লোকজন।

বড়দিনে পুরুলিয়ায় সভা করতে আসেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সুভাষ সরকার, মুকুল রায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়েরা। সে দিন ভিড় দেখে জেলায় এত বড় সভা তাঁদের আগে হয়নি বলে তৃপ্তি প্রকাশ করেছিলেন বিজেপি-র স্থানীয় নেতৃত্ব। কিন্তু অল্প দিনের ব্যবধানে সেই ভিড়কে টেক্কা দেওয়া চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয় শাসকদল। তাতে যে পূর্ণমাত্রায় তাঁরা সফল হয়েছেন, এ দিন সে কথা বার বার বলেছেন শাসকদলের নেতারা।

দলের জেলা সভাপতি তথা পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো অভিযোগ করেন, ‘‘বিজেপি ঝাড়খণ্ড থেকে লোক এনে সভা ভরিয়েছিল।’’ আর তৃণমূলের জেলা সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছেন। অথচ বিজেপি শুধু কুৎসা করছে। কেন্দ্রীয় সরকার একের পর এক জনবিরোধী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। তাই জবাব দিতে জেলার মানুষ কাতারে কাতারে এখানে সমবেত হয়েছেন। আমাদের ভিড়ই বিজেপি-কে চুপ করিয়ে দেবে।’’

তবে বিজেপি-র জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী দাবি করেছেন, ‘‘আমাদের ভিড় দেখে তৃণমূল নেতারা চোখে অন্ধকার দেখছেন। তাই ভাবছেন, সভাস্থল ভরিয়ে ফেলেছেন। পঞ্চায়েত ভোটেই ওদের দৃষ্টি ফিরবে।’’

সভায় নেতারা আগাগোড়া বিজেপি-র সভার পাল্টা জবাব দিয়ে গিয়েছেন। শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘বিজেপি এখানে তৃণমূলের বিরুদ্ধে, দলনেত্রীর বিরুদ্ধে কুৎসা করে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী কুড়মিদের দাবি নিয়ে সহানুভূতিশীল। তিনি কুড়মি উন্নয়ন বোর্ড তৈরি করেছেন, মানভূম কালচারাল অ্যাকাডেমি গড়েছেন। বিজেপি শাসিত ঝাড়খণ্ডে কি তা হয়েছে?’’

তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি বাংলার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। উন্নয়নের প্রসঙ্গ তুলেও তিনি বিজেপি-র সমালোচনা করেন। তাঁর কথায়, ‘‘পর্যটনে পুরুলিয়া এখন বাংলার প্রথম সারিতে। শান্তি ফেরানোর পরে পরিকাঠামোর উন্নয়ন করা হয়েছে বলেই পর্যটকেরা আসছেন।’’

রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়া কর্মী-সমর্থকদের কাছে জানতে চান— এক দিকে মুকল রায়-দিলীপ ঘোষ, অন্য দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাকে তাঁরা বাছবেন? জনতা হাত নাড়তেই, মানস বলেন, ‘‘আগামী দিনে এটাই হবে সারা বাংলার রায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই সবাই চাইবেন। আমরা মন্দির-মসজিদ, রাম-রহিমকে নিয়ে এক সাথে চলতে চাই।’’

অন্য দুই বক্তা মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও বিধায়ক পার্থ ভৌমিকও তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন মুকুল রায়কে। চন্দ্রিমা মুকুলের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘আপনি বাংলার মানুষের সঙ্গে গদ্দারি করেছেন।’’ বক্তব্য রাখেন জেলা নেতা স্বপন বেলথরিয়াও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Congestion Meeting TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE