Advertisement
৩১ মার্চ ২০২৩
Piyali Basak

Piyali Basak: পিয়ালি সামিট ক্যাম্পেই, লোৎসের সিদ্ধান্ত আজ

রবিবার খারাপ আবহাওয়ার জন্য ৮৪৫০ মিটার উচ্চতায় পৌঁছে বকি পথটুকু অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহারে বাধ্য হন বছর একত্রিশের পিয়ালি।

অভিযানে পিয়ালি বসাক। ছবি তমালি বসাকের সৌজন্যে।

অভিযানে পিয়ালি বসাক। ছবি তমালি বসাকের সৌজন্যে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২২ ০৬:৩৭
Share: Save:

এভারেস্ট সামিট করে নামার সময়ে প্রবল খারাপ আবহাওয়ার মুখে পড়েছিলেন চন্দননগরের প্রাথমিক স্কুলশিক্ষিকা পিয়ালি বসাক। শরীরেও ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছিল ক্লান্তি। সে সময়েই অল্পবিস্তর ‘স্নো ব্লাইন্ড’ হয়ে যান পিয়ালি। সে কারণে রবিবার সকালে সর্বোচ্চ শৃঙ্গের শিখরে পৌঁছে গেলেও ক্যাম্প ৪-এ ফিরতে অনেকটা বেশি সময় লেগে গিয়েছিল তাঁর। সোমবার সারাটা দিন তাই ক্যাম্প ৪-এই রয়ে গিয়েছেন পিয়ালি। আবহাওয়ার মতিগতি বুঝে আজ, মঙ্গলবার সকালে তাঁর লোৎসে (৮৫১৬ মিটার, চতুর্থ উচ্চতম) অভিযানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আয়োজক সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে।

Advertisement

অতিরিক্ত অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়া এভারেস্ট-লোৎসে জোড়া শৃঙ্গ অভিযান লক্ষ্য ছিল বঙ্গকন্যার। কিন্তু রবিবার খারাপ আবহাওয়ার জন্য ৮৪৫০ মিটার উচ্চতায় পৌঁছে বকি পথটুকু অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহারে বাধ্য হন বছর একত্রিশের পিয়ালি। পরিকল্পনা ছিল, এভারেস্ট সামিট শেষে ক্যাম্প ৪-এ ফিরে যত দ্রুত সম্ভব লোৎসের দিকে এগোবেন। কিন্তু সেই পরিকল্পনা কিছুটা ভেস্তে দিয়েছে তাঁর ‘স্নো ব্লাইন্ডনেস’। আয়োজক সংস্থা ‘পায়োনিয়ার অ্যাডভেঞ্চারের’ তরফে পাসাং শেরপা সোমবার বলেন, ‘‘স্নো ব্লাইন্ড হয়ে যাওয়ায় ওঁদের নামতে অনেক দেরি হয়। তাই সোমবার সকালে সাহায্যের জন্য দু’জন শেরপাকে ক্যাম্প ২ থেকে উপরে পাঠিয়েছিলাম। তবে পিয়ালি এখন অনেকটাই সুস্থ।’’

সাধারণত অধিক উচ্চতায় বরফের উপরে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি প্রতিফলিত হয়ে চোখে পড়লে কেউ ‘স্নো ব্লাইন্ড’ হতে পারেন। এ ক্ষেত্রে নীচে নেমে এসে দু’তিন দিনের বিশ্রামেই সেই সমস্যা সেরে যেতে পারে। বিশিষ্ট পর্বতারোহী বসন্ত সিংহ রায় বলছেন, ‘‘এভারেস্ট সামিট থেকে নামার সময়ে নীচে তাকিয়ে নামতে হয়। ফলে তখন স্নো গগল্‌সের ফাঁক দিয়ে বরফের দিকে তাকাতে হয় বলে স্নো ব্লাইন্ড হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। ২০১০ সালে সামিট করে ফিরে আমার চোখেও কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। তবে দ্রুত সেরেও গিয়েছিল। তবে এইসব ক্ষেত্রে একা একা চলাফেরা করাটাও রীতিমতো ঝুঁকির হয়ে যায়।’’

ইন্ডিয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ফাউন্ডেশনের (আইএমএফ) পূর্বাঞ্চলীয় শাখার চেয়ারপার্সন ও পর্বতারোহী দেবরাজ দত্ত জানাচ্ছেন, অভিযাত্রী দীর্ঘ সময় ধরে স্নো গগল্‌স খুলে রাখলেও এই সমস্যা হতে পারে। ‘‘হয়তো খারাপ আবহাওয়ায় ফেরার পথে গগল্‌স খুলেছিলেন পিয়ালি, তাই চোখে অতিবেগুনি রশ্মি বা ঠান্ডা হাওয়ার ঝাপটা লেগে স্নো ব্লাইন্ডনেস হয়েছে। অল্প সমস্যা হলে এক-দু’দিনের বিশ্রামেই সেরে যাওয়ার কথা।’’— বলছেন দেবরাজ।

Advertisement

তবে খারাপ আবহাওয়ায় পিয়ালির লোৎসে অভিযান কবে হবে, তা কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় পাসাং জানান, আবহাওয়া অনেকটাই ভাল হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ আগের থেকে কমেছে অনেকটাই। তাই মঙ্গলবার সকালে কী অবস্থা থাকে, তা দেখে নিয়েই লোৎসের দিকে এগোনোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন পিয়ালি ও তাঁর শেরপা সঙ্গীরা। পিয়ালির বোন তমালিও বলেন, ‘‘আয়োজক সংস্থার তরফে জানিয়েছে যে, ক্যাম্প ৪ থেকেই লোৎসে যাওয়াটা সুবিধাজনক। তাই লোৎসের দিকে এগোবে নাকি ক্যাম্প ২-তে নেমে এসে অপেক্ষা করবে— সেই সিদ্ধান্ত কাল সকালে নেবে ওরা। আপাতত ক্যাম্প ৪-এ চার জন শেরপা রয়েছেন দিদির সঙ্গে।’’

তবে বেশি দেরি হলে লোৎসে অভিযানের সময় আর মিলবে কি না, সেই প্রশ্নটা থাকছে। দেবরাজ বলছেন, ‘‘লোৎসের পথে অভিযাত্রীর সংখ্যা কম থাকে। এত দিনে দুর্দান্ত আবহাওয়ায় তাঁদের বেশির ভাগেরই সামিট হয়ে গিয়েছে। তাই মাত্র এক-দু’জনের জন্য ওই পথে শেরপারা যেতে রাজি না-ও হতে পারে। মে মাস শেষ হয়ে গেলে নেপাল সরকারও রুট বন্ধ করে দেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.