Advertisement
E-Paper

ছোট ইলিশে নিষেধ শোনে কে!

ছোট ইলিশ ধরা নিষেধ। কিন্তু শোনে কে? বর্ষা নামলেই ইলিশের সন্ধান শুরু হয়। যতটুকু পাওয়া যায়, চেটেপুটে খেতে চায় বাঙালি। সে চাহিদা মেটাতে পিছপা নন ব্যবসায়ীরাও। গত সপ্তাহে কাঁথি-সহ পূর্ব মেদিনীপুরের প্রায় সর্বত্রই অবাধে চলছে ছোট ইলিশ বিক্রি।

সুব্রত গুহ

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৬ ০২:৩৩
বিকোচ্ছে ছোট ইলিশ। কাঁথির বাজারে সোহম গুহর তোলা ছবি।

বিকোচ্ছে ছোট ইলিশ। কাঁথির বাজারে সোহম গুহর তোলা ছবি।

ছোট ইলিশ ধরা নিষেধ। কিন্তু শোনে কে?

বর্ষা নামলেই ইলিশের সন্ধান শুরু হয়। যতটুকু পাওয়া যায়, চেটেপুটে খেতে চায় বাঙালি। সে চাহিদা মেটাতে পিছপা নন ব্যবসায়ীরাও।

গত সপ্তাহে কাঁথি-সহ পূর্ব মেদিনীপুরের প্রায় সর্বত্রই অবাধে চলছে ছোট ইলিশ বিক্রি। ২৩ সেন্টিমিটার বা ৯ ইঞ্চির কম ইলিশের বিক্রি, পরিবহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য দফতর। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে দফতর শুধু কয়েকটি ট্যাবলো নামিয়েছে রাস্তায়। এই প্রচারাভিযানেই কি বন্ধ করা যাবে ছোট ইলিশের কারবার? তেমনটা নয়, জানে দফতরও। তাঁদের আছে যুক্তি— পরিকাঠামো আর কর্মীর অভাবে এর থেকে বেশি করা সম্ভব নয়।

গত সপ্তাহে ইলিশের ব্যাপক আমদানি হয়েছে উপকূলের বিভিন্ন মৎস্যখটিগুলিতে। সপ্তাহান্তে প্রতিদিন প্রায় ছয়-সাত টন ইলিশ উঠেছে বলে জেলার বিভিন্ন মৎস্যজীবী ও মৎস্যব্যবসায়ী সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে। আর ধরা পড়া এই সব মাছের ৪০ শতাংশ বা তার বেশি ছোট ইলিশ। দু’শো থেকে সাড়ে তিনশো-চারশো টাকা কিলো দরে বিক্রি হয়েছে সে সব মাছ।

কিন্তু ছোট মাছ বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে জেনেও ব্যবসায়ীরা কেন বিক্রি করছেন? এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা হলে ব্যবসায়ীরা গ্রেফতার পর্যন্ত হতে পারেন। কাঁথি সুপার মার্কেটের এক ইলিশ বিক্রেতার ঝাঁঝালো জবাব, ‘‘বাজার জুড়ে সকলে বিক্রি করছে, আমিও করছি। পাইকারি বাজার থেকে নিলামে কিনে এনেছি ছোট ইলিশ।’’ তাঁর দাবি, যাঁরা সমুদ্রে ছোট ইলিশ ধরছেন বা পাইকারি বাজারে নিলাম করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আগে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

প্রায় একই বক্তব্য কাঁথির সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড বাজার, নিউমার্কেট-সহ মহকুমার বিভিন্ন বাজারের ইলিশ বিক্রেতাদের। তাঁদের অভিজ্ঞতা বলছে, ছোট ইলিশের দাম কম, তাই সাধারণ মানুষ সাধ মিটিয়ে ইলিশ কিনছেন। চাহিদা দেখেই ছোট ইলিশ পাইকারি বাজারে কিনে খোলা বাজারে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। লাভও হচ্ছে দেদার। সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড বাজারে এক ক্রেতাও বললেন, ‘‘হাজার-দেড় হাজার টাকা কেজি দরে ইলিশ কেনার ক্ষমতা আমার নেই। পরিবারের সদস্য সংখ্যাও কম। দু’আড়াইশো টাকায় ছোট ইলিশ পেলেই ভাল হয় সব দিক থেকে।’’

ছোট ইলিশ ধরা, বিক্রি বন্ধ নিয়ে আইন থাকলেও সে আইন বলবৎ করার মত পরিকাঠামো ও কর্মীবল মৎস্য দফতরের নেই। বাধ্য হয়েই জেলার সহ-মৎস্য অধিকর্তা(সামুদ্রিক) রামকৃষ্ণ সর্দার বলেন, ‘‘জেলার দীর্ঘ সমুদ্র উপকূল। রয়েছে বিভিন্ন মৎস্যখটি ও মৎস্য উত্তোলন কেন্দ্র। হাতে গোনা সামান্য সংখ্যক কর্মী নিয়ে এই বিশাল এলাকায় নজরদারি চালানো সম্ভব নয়।’’ বরং দফতরের তরফে দাবি করা হয়েছে, নজরদারির চেয়েও মানুষের সচেতনতা বেশি জরুরি। ছোট ইলিশ কেনা বন্ধ হলেই ছোট ইলিশ ধরাও বন্ধ হয়ে যাবে। তাই সচেতনতা বাড়াতে বিশেষ ট্যাবলো-সহ প্রচারাভিযানেই জোর দিচ্ছে দফতর।

কিন্তু আইন করে, ট্যাবলো দিয়ে কি আর রসনায় লাগাম পরানো সম্ভব?

Hilsa Market
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy