Advertisement
E-Paper

জঙ্গি, সন্ত্রাসকে বিচ্ছিন্ন করার ডাক ইমামদের

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের নিন্দা করে তার প্রতিরোধে এগিয়ে আসার ডাক দিলেন ইমাম ও মোয়াজ্জিনরা। এর আগে বাল্যবিবাহ রোধ বা পোলিও নিয়ে সচেতন করতে একাধিক বার সভা করেছেন ইমামরা। খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরে যখন পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গি-জাল গড়ে ওঠার সঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের যোগসাজসের অভিযোগ উঠছে, তখন পশ্চিমবঙ্গ ইমাম মোয়াজ্জিন অ্যাসোসিয়েশনের এই ডাক তাৎপর্যপূর্ণ। সভায় বক্তারা বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সভ্যতার শত্রু। মৌলানা আব্দুল খালেকের কথায়, “ইসলাম কখনও মানুষ মারার কথা বলে না।”

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৫৯
চলছে ইমামদের সভা।  —নিজস্ব চিত্র।

চলছে ইমামদের সভা। —নিজস্ব চিত্র।

জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের নিন্দা করে তার প্রতিরোধে এগিয়ে আসার ডাক দিলেন ইমাম ও মোয়াজ্জিনরা। এর আগে বাল্যবিবাহ রোধ বা পোলিও নিয়ে সচেতন করতে একাধিক বার সভা করেছেন ইমামরা। খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরে যখন পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গি-জাল গড়ে ওঠার সঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের যোগসাজসের অভিযোগ উঠছে, তখন পশ্চিমবঙ্গ ইমাম মোয়াজ্জিন অ্যাসোসিয়েশনের এই ডাক তাৎপর্যপূর্ণ। সভায় বক্তারা বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সভ্যতার শত্রু। মৌলানা আব্দুল খালেকের কথায়, “ইসলাম কখনও মানুষ মারার কথা বলে না।”

রবিবার বিকেলে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর মুনিরিয়া হাই মাদ্রাসায় ওই সভা আয়োজিত হয়। সভায় মৌলানা রফিকুল হাসান বলেন, “ইমামরা গ্রামের নেতা। তাঁদের শুধু মসজিদে আটকে থাকলে হবে না। দিনের মধ্যে পাঁচ ওয়াক্তে বড় জোর ৬০ মিনিট নমাজে ব্যস্ত থাকেন তাঁরা। বাকি ২৩ ঘণ্টা গ্রামের দায়িত্ব নিতে হবে ইমাম ও মোয়াজ্জিনদেরই।” তাঁর কথায়, ইমামরা গ্রামের মাথা। মসজিদের পাশের বাড়িতে যে শিশু রয়েছে, তার শিক্ষার দায়িত্বও নিতে হবে ইমামকে। গ্রামের সম্প্রীতি রক্ষায় ইমামকেই এগিয়ে যেতে হবে। ইমাম যদি সচেতন থাকেন, গ্রামের মধ্যে দুষ্কৃতীরা সন্ত্রাস চালাতে পারবে না।

উদ্যোক্তাদের অন্যতম আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, “গ্রামের সব মানুষ সাধারণত ইমামের পরিচিত হন। সে ক্ষেত্রে বাইরে থেকে কেউ গ্রামে এলে ইমামদের চোখে তা পড়বেই। ইমামরা সজাগ ও সতর্ক রয়েছেন।” তবে তাঁর কথায়, সীমান্ত পেরিয়ে কোন দিক দিয়ে কী ভাবে কারা আসে, তা জানার কথা পুলিশ ও বিএসএফের। জঙ্গিপুরের বিধায়ক মহম্মদ সোহরাব জানান, কিছু মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে সন্ত্রাসের সৃষ্টি করছে। ইমামদের দায়িত্ব তাঁদের সেই বিভ্রান্তির পথ থেকে মুক্ত করা।

সভায় নওদার বিধায়ক কংগ্রেসের আবু তাহের বলেন, “সন্ত্রাসবাদকে সকলেই ঘৃণা করে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যিই কিছু মাদ্রাসা কিন্তু এর সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে। কিন্তু সব মাদ্রাসাকে এ ব্যাপারে দোষারোপ করা ঠিক হবে না।” তাঁর কথায়, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরব হতে হবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। রঘুনাথগঞ্জের বিধায়ক আখরুজ্জামানের বক্তব্য, “গুটি কয়েক মাদ্রাসায় ধর্মের নামে কিছু মানুষ সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। তাদের জন্য মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে আমাদের। তাদের চিহ্নিত করে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে।” পাশের দেশ বা রাজ্য থেকে দুষ্কৃতীরা অনেক সময় সীমান্তবর্তী এই জেলার বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে আশ্রয় নেয় বলে বারবার অভিযোগ উঠেছে। সে ক্ষেত্রেও ইমামদের দায়িত্ব রয়েছে বলে সভায় আলোচনা হয়।

স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ওয়াকফ বোর্ড নিয়ে সচেতন করতে ওই সভা আয়োজিত হলেও রাজ্যে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের উল্লেখ করে বক্তারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সকলে রুখে দাঁড়াতে আহ্বান জানান। ওই সভায় রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের সভাপতি প্রাক্তন বিচারপতি আব্দুল গনি, ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য মৌলানা রফিকুল হাসান, শিক্ষাবিদ এম এ হান্নান, মৌলানা আব্দুল খালেক, ইমাম সংগঠনের রাজ্য সভাপতি আব্দুল তৈয়ব, রঘুনাথগঞ্জ থানার আইসি সৈয়দ রেজাউল কবির, কংগ্রেসের তিন বিধায়ক-সহ উপস্থিত ছিলেন এলাকার কয়েকশো ইমাম ও মোয়াজ্জিন। মৌলানা আব্দুল তৈয়ব তাঁদের উদ্দেশে বলেন, “প্রত্যেকে ভাবুন আমাদের দেশ ভারত। এই দেশকে ব্রিটিশদের হাত থেকে মুক্ত করতে প্রাণ দিয়েছেন শত শত মুসলিমও।”

khagragarh blast burdwan blast biman hazra imam nia call disconnect terrorist Militant state news online state news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy