Advertisement
০৪ মে ২০২৪

টাকা বাকি, সাগর মেলার প্রস্তুতি এগোতে সমস্যা

চলতি সপ্তাহেই জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণে বাড়তি টাকা খরচের অভিযোগ তুলেছিলেন। এ বার মেলার কাজে নিযুক্ত করেও তিনটি পঞ্চায়েত সমিতির বকেয়া প্রায় ৫ কোটি টাকা না দেওয়ার অভিযোগ উঠল ওই দফতরের বিরুদ্ধেই।

মেলার অপেক্ষায়। নিজস্ব চিত্র।

মেলার অপেক্ষায়। নিজস্ব চিত্র।

শান্তশ্রী মজুমদার
শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৩৫
Share: Save:

চলতি সপ্তাহেই জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণে বাড়তি টাকা খরচের অভিযোগ তুলেছিলেন। এ বার মেলার কাজে নিযুক্ত করেও তিনটি পঞ্চায়েত সমিতির বকেয়া প্রায় ৫ কোটি টাকা না দেওয়ার অভিযোগ উঠল ওই দফতরের বিরুদ্ধেই। নোট বাতিলের সঙ্গে এই বিপুল বকেয়ার জেরে পিছিয়ে যেতে বসেছে মেলা আয়োজনের প্রস্তুতিপর্বের কাজ। যদিও জেলাশাসক আশ্বাস দিয়েছেন, দ্রুত বিষয়টির নিষ্পত্তি করা হবে। মন্ত্রী নিজেও বলেন, ‘‘কিছু টাকা বকেয়া আছে এটা ঠিক। তবে বড় অঙ্ক নয়। দেরি হলেও দিয়ে দেওয়া হবে।’’

গঙ্গাসাগর মেলা আয়োজনে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরই নোডাল এজেন্সি। অন্যান্য দফতর এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে কাজে লাগানোর পরে তাদের টাকা দেওয়ার ভার ওই দফতরের। কিন্তু ২০১৩ সাল থেকে কাকদ্বীপ মহকুমার সাগর, নামখানা এবং কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতিকে মেলার বিভিন্ন কাজের বরাত দেওয়ার পরেও পাওনা হিসেবে প্রায় ৫ কোটি টাকা মেটানো হয়নি।

গঙ্গাসাগর পঞ্চায়েতের প্রধান হরিপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘নোটের সমস্যায় প্রাণ বেরিয়ে যাচ্ছে। কী ভাবে যে মেলার কাজ এ বার করব, বুঝতে পারছি না। প্রায় ৫৮ লক্ষ টাকা পাওনা রয়েছে আমাদের পঞ্চায়েত সমিতির কাছে। টাকা না দিলে কাজ এগোচ্ছে না।’’ সাগর পঞ্চায়েত সমিতির পাওনা ১ কোটি ৭৬ লক্ষ টাকা।

পঞ্চায়েত সমিতির কর্মকর্তাদের দাবি, তাঁরা কাজ করান পঞ্চায়েতগুলিকে দিয়েই। গঙ্গাসাগরে একটি বিশাল এলাকা জুড়ে তীর্থযাত্রী, সরকারি দফতরের লোকজন, সেনার জন্য হোগলাপাতার ছাউনি, অসংখ্য এলাকায় বাঁশের ব্যারিকেড থেকে শুরু করে ওয়াচ টাওয়ার তৈরি, শৌচাগার তৈরির মতো বেশ কিছু কাজ করা হয়। তিনটি পঞ্চায়েত সমিতি পুরো টাকা না পেলেও পূর্ত ও সেচ দফতরের কিন্তু কোনও বকেয়া নেই।

সাগরে মুড়িগঙ্গা ১, ধবলাট এবং গঙ্গাসাগর পঞ্চায়েতের উপরে মেলা আয়োজনের ভার পড়ে। মুড়িগঙ্গা ১ অঞ্চলের উপপ্রধান সুবোধ জানা বলেন, ‘‘আমাদের প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকা বাকি রয়েছে। ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া টাকা দেওয়ার কথা ছিল। তা আবার পিছিয়ে গিয়েছে। ঠিকাদার ছাড়াও শ্রমিকদের মাইনে আটকে যাচ্ছে। কাজ এগোবে কী ভাবে?’’ শ্রমিকেরা কাজ করলে দিনে ৫০ টাকা করে খোরাকি দিতে হয়। জরুরি কাজের জন্য ৩-৪ লক্ষ টাকা নগদ দরকার হয় এক একটি পঞ্চায়েতের। এ বছর কুম্ভ মেলা না থাকার জন্য গত বছরের চেয়ে বেশি ভিড় হওয়ার কথা সাগরে। কিন্তু তার আগে যদি মেলার প্রস্তুতি টাকার জন্য ঠিক সময়ে শেষ না হয়, তা হলে রাজ্য সরকারের মুখই পুড়বে বলে আশঙ্কা করছেন পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারাও। কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘‘টাকা পাওয়া যাবে, বলতে গেলে তা দিচ্ছে না। শাসক দলের তরফে আমাদের এ সব নিয়ে কথা বলতে বারণ করে দেওয়া হয়েছে।’’ কাকদ্বীপের রামকৃষ্ণ পঞ্চায়েতেও বেশ কিছু কাজ হয়।

কিন্তু কবে পাওয়া যাবে টাকা?

জেলাশাসক পিবি সেলিম বলেন, ‘‘জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর বিষয়টি অর্থ দফতরের সঙ্গে বসে ঠিক করছে। আশা করছি, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই বকেয়া টাকাপয়সা মিটিয়ে দেওয়া যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gangasagar Mela Low Currency Money Demonetisation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE