Advertisement
E-Paper

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে দুই জেলায় খুন তৃণমূলকর্মী

তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বারেবারেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে সতর্ক করছেন কর্মীদের। কিন্তু নিচুতলায় যে সে বার্তা পৌঁছচ্ছে না, মুর্শিদাবাদ ও কোচবিহারে দুই তৃণমূলকর্মী খুনের ঘটনায় ফের তা সামনে এল। শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ মুর্শিদাবাদ থানার গুধিয়া গ্রামে পিন্টু শেখ (৩৩) নামে তৃণমূলের এক কর্মীকে কুপিয়ে ও বোমা ছুড়ে খুন করা হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৪ ০২:৫৫
নিহত পিন্টু শেখের শোকার্ত পরিবার। গুধিয়া গ্রামে।

নিহত পিন্টু শেখের শোকার্ত পরিবার। গুধিয়া গ্রামে।

তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বারেবারেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে সতর্ক করছেন কর্মীদের। কিন্তু নিচুতলায় যে সে বার্তা পৌঁছচ্ছে না, মুর্শিদাবাদ ও কোচবিহারে দুই তৃণমূলকর্মী খুনের ঘটনায় ফের তা সামনে এল।

শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ মুর্শিদাবাদ থানার গুধিয়া গ্রামে পিন্টু শেখ (৩৩) নামে তৃণমূলের এক কর্মীকে কুপিয়ে ও বোমা ছুড়ে খুন করা হয়। পুলিশের কাছে মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে পিন্টু জানিয়েছেন, তোলাবাজির প্রতিবাদ করায় তৃণমূলেরই সংখ্যালঘু সেলের কর্মী আলি আসগর শেখ ওরফে খাইরুল ও পাঁচ সঙ্গী মিলে তাঁকে খুন করেছে। শুক্রবারই রাত ১২টা নাগাদ কোচবিহারের কোতোয়ালি থানার হাড়িভাঙা পঞ্চায়েতের দয়ালের ছড়া এলাকায় জনাব আলি (৪৭) নামে তৃণমূলের এক কর্মীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে দলের লোকেদের বিরুদ্ধে। উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁর দক্ষিণ বাগড়া গ্রামে সাজাহান গাজি (২৭) নামে এক তৃণমূলকর্মীকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে এই রাতেই। তবে, এর পিছনে কারা আছে স্পষ্ট হয়নি।

মুর্শিদাবাদ জেলার মুর্শিদাবাদ থানার গুধিয়া গ্রামে প্রায় চার দশক আগে ৭৪ শতক খাস জমির উপর গড়ে ওঠে একটি কলোনি। অভিযোগ, সেখানে বসবাসকারী ২০টি পরিবারের কাছ থেকে তোলা নিতেন খাইরুল। পেশায় রিকশাচালক পিন্টু এর প্রতিবাদ করায় চক্ষুশূল হয়ে পড়েন। জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র আশিস রায় চৌধুরী মেনে নেন, মৃত ও অভিযুক্ত দু’জনেই তৃণমূলের কর্মী। তবে তাঁর দাবি, “এর সঙ্গে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সর্ম্পক নেই। জমি নিয়ে বিবাদের জেরে এই ঘটনা।”

নিহত সাজাহান গাজির পরিজনদের সঙ্গে মিনাখাঁর
বিধায়ক ঊষারানি মণ্ডল। দক্ষিণ বাগড়া গ্রামে।

কোচবিহারের নিহত জনাব আবার আগে ফরওয়ার্ড ব্লকের কর্মী ছিলেন। বছর দু’য়েক আগে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। তাঁকে খুনের মামলায় অভিযুক্তরাও প্রায় একই সময়ে ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। জনাব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের অনুগামী বলে পরিচিত। বিরোধী গোষ্ঠী তথা জেলার সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদের অনুগামী দূর সম্পর্কের ভাই বল্টু মিঁয়ার সঙ্গে সম্প্রতি বিরোধ বাধে তাঁর। অভিযোগ, শুক্রবার রাতে বাড়ি ফেরার পথে জনাব ও তাঁর তিন সঙ্গীর উপর বল্টু, তাঁর কাকা জব্বার মিঁয়া-সহ বেশ কয়েকজন ধারালো অস্ত্র, লাঠি হাতে চড়াও হন। জনাব মারা যান। বাকিরা চিকিৎসাধীন। রাতে গ্রামবাসীদের একাংশ জব্বার ও ভুট্টুর বাড়ি ভেঙে দেয়। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব জানান, অভিযুক্তরা পলাতক। তল্লাশি চলছে।

শুক্রবার রাতেই মিনাখাঁর তৃণমূলকর্মী সাজাহানকে গুলি করে, হাত-পা বেঁধে পুকুরের জলে পুঁতে দেয় দুষ্কৃতীরা। বাঁচাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন স্ত্রী ছফিরা বিবি ও কাকা নুরউদ্দিন গাজি। তাঁদের কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। নিহতের বাবা নুর আহমেদ গাজি আট জন দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে জীবনতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। শনিবার ওই গ্রামে যান বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ ইদ্রিশ আলি, মিনাখাঁর বিধায়ক ঊষারানি মণ্ডল ও তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তথা ঊষারানির স্বামী মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডল। ১২ মে লোকসভা ভোটের দিন হাড়োয়ার ব্রাহ্মণচক গ্রামের সিপিএম সমর্থকদের উপর গুলি চালানোর ঘটনায় অভিযুক্ত ঊষারানি সেই সময় থেকেই বিধানসভায় যাচ্ছিলেন না। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সিপিএম পরিকল্পনা করে দুষ্কৃতীদের দিয়ে সাজাহানকে খুন করিয়েছে।” যদিও সিপিএমের বক্তব্য, তৃণমূলের দ্বন্দ্বের জেরেই খুন হয়েছে সাজাহান।

শনিবার সকালে আবার এলাকা দখল নিয়ে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার গোপালপুর। দু’পক্ষের সাত জন জখম হন। এলাকায় পুলিশি পিকেট বসেছে।

ছবি: গৌতম প্রামাণিক এবং নির্মল বসু

internal clash 2 tmc candidate murdered murshidabad cooch behar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy