Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

এখনও ভেল্কি দেখাচ্ছে পুরনো কালাশনিকভ

নতুন জিনিস কালেদিনে অনেক এসেছে। ঠিক ২১ বছর আগে, পুরুলিয়ায় ঘটা অস্ত্র বর্ষণের দৌলতে যেগুলি এসেছিল, একেবারে গোড়ার দিকের সেই ২০টি এখনও তাজা।

(বাঁ দিকে) পুরনো কালাশনিকভ। (ডান দিকে) নতুন সংস্করণ।—নিজস্ব চিত্র

(বাঁ দিকে) পুরনো কালাশনিকভ। (ডান দিকে) নতুন সংস্করণ।—নিজস্ব চিত্র

সুরবেক বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:০৫
Share: Save:

নতুন জিনিস কালেদিনে অনেক এসেছে। ঠিক ২১ বছর আগে, পুরুলিয়ায় ঘটা অস্ত্র বর্ষণের দৌলতে যেগুলি এসেছিল, একেবারে গোড়ার দিকের সেই ২০টি এখনও তাজা। ওরা এতটুকু বুড়িয়ে যায়নি, মানে কর্মক্ষমতা কমেনি। ওদের উপরে ভর করে খান কুড়ি অভিযান এখনও পর্যন্ত কলকাতা পুলিশ চালিয়েছে জঙ্গলমহলে, মাওবাদীদের বিরুদ্ধে। ‘‘১৫ বছর হয়ে গেল। ওদের কেউই কখনও ধোঁকা দেয়নি।’’ বলছেন লালবাজারের এক অফিসার। ওদের যত্ন করে রাখা হয়। মাসে দু’দিন উত্তর ২৪ পরগনার জাফরপুরে অনুশীলনে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই কুড়িটা আসলে একে-৪৭ বা কালাশনিকভ রাইফেল।

শতাধিক একে-৪৭ রাইফেল ও রাশি রাশি বুলেটের সঙ্গে পুরুলিয়ার ঝালদা, জয়পুরে ফেলা হয়েছিল ১৯৯৫-এর ১৭ ডিসেম্বর। তার মধ্যে ২০টি একে-৪৭ কলকাতা পুলিশের কমান্ডোরা পাবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। আনুষ্ঠানিকতা, আদালতের নির্দেশের চৌকাঠ পেরিয়ে দফায় দফায় ২০০৬-এর মধ্যে সবগুলি কলকাতা পুলিশের হাতে এসে যায়।

কলকাতা পুলিশে জঙ্গি হামলা মোকাবিলার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষিত কমান্ডো বাহিনী ও স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপের সদস্য শ’তিনেক। সমসংখ্যক একে-৪৭ আছে লালবাজারের হাতে। তবে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে তৈরি একে-৪৭ রাইফেল ওই ২০টাই।

পরে, ২০১১-’১৪-র মধ্যে বাকি যে ২৮০টি একে-৪৭ এসেছে, সেগুলি মূলত কালাশনিকভ রাইফেলের চেক সংস্করণ। বাট, ব্যারেল আন্ডার গ্রিপ, ব্যারেল আপার গ্রিপ ফাইবারের। আর পুরুলিয়ায় ২১ বছর আগে ফেলা রাইফেলগুলির ওই সব অংশ কাঠের। আবার আদি রাইফেলগুলির ম্যাগাজিন লোহার, নতুনগুলির ম্যাগাজিন ফাইবারের।

লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই ২০টা রাইফেল থেকে নিখুঁত নিশানায় গুলি ছোড়া যায়। অ্যাডজাস্ট করা বা নিজের মতো করে ঠিক করে নেওয়ার দরকার নেই। তবে পরবর্তী কালে চেক প্রজাতন্ত্র থেকে আসা রাইফেলগুলির প্রায় সবগুলোর ক্ষেত্রে ওই সমস্যা। যিনি ব্যবহার করবেন, তাঁকে আগে নিজের মতো নিশানা ঠিক করে নিতে হচ্ছে।’’

কলকাতা পুলিশের কমান্ডো বাহিনী তৈরি হয় ১৯৯৬ সালে। প্রথমে কমান্ডোরা ব্যবহার করতেন কার্বাইন ও নাইন এম এম পিস্তল। পাঁচ বছর পর তাঁদের হাতে প্রথম বার এসে পৌঁছয় একে-৪৭।

লালবাজার সূত্রের খবর, মাসে দু’দিন চাঁদমারি অনুশীলনের সময়ে এক-এক দিন ১০টি করে ওই ২০টি কালাশনিকভ ব্যবহার করেন কমান্ডোরা। প্রতিটি থেকে ১০টি করে বুলেট ছোড়া হয় অনুশলীনে।

এক কমান্ডোর কথায়, ‘‘চেক প্রজাতন্ত্রের কুচকুচে কালো একে ফর্টি সেভেনের মারণ ক্ষমতাও কিছু কম নয়। তবে খয়েরি-কালো রঙের কালাশনিকভের ইজ্জত আলাদা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalashnikov
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE