কেশরীনাথ ত্রিপাঠী
বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমকে কড়া নিয়মে বাঁধতে বিধানসভায় যে সংশোধিত স্বাস্থ্য বিল পাশ হয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাতে সই করলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। গত সোমবার বিলটি পৌঁছেছিল রাজভবনে। তার পর থেকে তাগাদা দিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা বার কয়েক ফোন করেন। এ দিন সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে রাজভবনে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে আলোচনার পরেই বিলটিতে সই করেন রাজ্যপাল।
রাজভবনের এক মুখপাত্র জানান, গত ২ মার্চ বিধানসভায় বিল পাশ হয়েছিল। রাজভবনে তা আসে ১৪ মার্চ। তিন দিন বিলটি রাজভবনে পড়ে ছিল। রাজভবন সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে বিলটি পড়ে রাজ্যপালের কিছু প্রশ্ন মেন এসেছিল। তিনি মনে করছিলেন, বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ন্ত্রণে যে সব পদক্ষেপ করার কথা বলা হয়েছে, তাতে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় ধাক্কা লাগতে পারে। বিলটি আরও খুঁটিয়ে পড়়ার কথাও ভেবেছিলেন তিনি।
বিলে বলা হয়েছে, চিকিৎসা সংক্রান্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দেওয়ানি আদালতের ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিশন তৈরি হবে, ইমার্জেন্সি থেকে কোনও রোগীকে ফেরানো যাবে না, প্যাকেজের বিল বাড়ানো যাবে না। চিকিৎসার অবহেলায় মৃত্যু প্রমাণিত হলে নিদেনপক্ষে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালকে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘আইন কার্যকর করতে ১১ সদস্যের কমিশন গঠন করা হবে।’’
সংশোধিত এই ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট আইনের বিভিন্ন ধারা নিয়ে বেশ আতঙ্কে রয়েছে বেসরকারি হাসপাতালগুলি। তাদের অভিযোগ, আইন কার্যকর হলে হাসপাতালে ডাক্তারের চেয়েও বেশি জরুরি হয়ে পড়বে আইনজীবী নিয়োগ। তাদের প্রশ্ন, এক জন মরণাপন্ন রোগীর চিকিৎসার সময় কী ভাবে খরচের পরিমাণ আগে থাকে বলা সম্ভব? নতুন আইনে টাকা না মিটিয়ে রোগী বা মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়বে, চিকিৎসাধীন রোগী মারা গেলেই টাকা না দেওয়ার জন্য হুজ্জুতি বাড়বে— আশঙ্কা করছেন হাসপাতাল কর্তারা। পরিণতিতে কোনও কোনও বেসরকারি হাসপাতালের রাজ্য থেকে পাততাড়ি গোটানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
রাজভবনের এক মুখপাত্র জানান, এই সব বিষয় নিয়ে আরও ভাবনাচিন্তা করার জন্যই রাজ্যপাল কিছুটা সময় নিচ্ছিলেন। কিন্তু সরকারের তরফে চাপ থাকায় শেষ পর্যন্ত তিনি সই করে দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy