Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দক্ষিণদাঁড়ি-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত এখনও অধরাই

এলাকায় মাদক-বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে নব্বইয়ের দশকে শহিদ হন দক্ষিণদাঁড়ির বাসিন্দা দিলীপ মণ্ডল। তখন থেকেই ওই এলাকা মাদক বিক্রির আখড়া বলে পরিচিত। ছিল সমাজবিরোধীদের দাপটও। স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক বছর এই দাপট ছিল কম। শুক্রবার এলাকায় মাদক কারবারের বিরোধিতা করে চপারের কোপে আক্রান্ত হন মহম্মদ রিয়াজুদ্দিন শেখ। এই ঘটনায় স্থানীয়দের আশঙ্কা, সেই সব দিন কি আবার ফিরে আসছে?

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৪ ০০:২৬
Share: Save:

এলাকায় মাদক-বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে নব্বইয়ের দশকে শহিদ হন দক্ষিণদাঁড়ির বাসিন্দা দিলীপ মণ্ডল। তখন থেকেই ওই এলাকা মাদক বিক্রির আখড়া বলে পরিচিত। ছিল সমাজবিরোধীদের দাপটও। স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক বছর এই দাপট ছিল কম। শুক্রবার এলাকায় মাদক কারবারের বিরোধিতা করে চপারের কোপে আক্রান্ত হন মহম্মদ রিয়াজুদ্দিন শেখ। এই ঘটনায় স্থানীয়দের আশঙ্কা, সেই সব দিন কি আবার ফিরে আসছে?

স্থানীয়দের অভিযোগ, কাঠগোলার কাছে একটি মাঠে দিনের আলোয় চলে মাদক-কারবার। এ দিন অবশ্য তেমন কিছু চোখে পড়ল না। বরং পুলিশি টহলদারিই দেখা গেল। তবে স্থানীয় কিছু যুবক জানালেন, টহলদারি দিন কয়েকের জন্য। টহলদারি উঠে গেলেই পরিস্থিতি ফের যে কে সেই।

ওই মাঠ থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বেই পুলিশ ফাঁড়ি। স্থানীয়দের অভিযোগ, সেখানে বেশির ভাগ সময়েই পুলিশ থাকে না। মাঠ থেকে কিছু দূরেই ২৬ নম্বর রেলগেট বরাবর পুরো রাস্তা মাদক-কারবারীদের স্বর্গরাজ্য বলে অভিযোগ। আফতাব আলম খান নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, “বহু বার পুলিশে জানিয়েও লাভ হয়নি। পুলিশ সক্রিয় হলে রিয়াজুদ্দিনকে আক্রান্ত হতে হত না।”

রিয়াজুদ্দিনের ভাই শের মহম্মদ বলেন, “দাদার অবস্থাও হয়তো দিলীপবাবুর মতোই হতো।” শুক্রবার রাতের ঘটনার পরে এ দিন এলাকা ছিল থমথমে। কোথাও জটলা দেখলে পুলিশ তা ভেঙে দিচ্ছিল। মূল অভিযুক্ত মহম্মদ ইসরাফেল এখনও অধরা। ইসরাফেলের স্ত্রী ইয়াসমিন বেগম এ দিন অভিযোগ করে বলেন, “আমার স্বামীকে মিথ্যা ফাঁসানো হচ্ছে। বরং রিয়াজুদ্দিনের পরিজনেরাই ঘটনার পরে আমাদের বাড়ি ভাঙচুর করে।” ইসরাফেলের পরিবারের অভিযোগ, এলাকায় এত দিন একচেটিয়া প্রোমোটারি করত রিয়াজুদ্দিনেরা। এখন ইসরাফেল ও তার সঙ্গীরা এই ব্যবসায় নামার চেষ্টা করায় তাকে ফাঁসানো হল।

তবে এলাকায় ঘুরে জানা গেল ইসরাফেলকে প্রোমোটার হিসেবে সে ভাবে কেউ চেনেন না। বরং অনেকেই জানালেন মাদক ব্যবসার অভিযোগে সে জেল খেটে এসেছে। গুলশন বিবি নামে এক মহিলার নামও ঘটনার পরে উঠে এসেছে। অভিযোগ, গুলশন বিবি চেন্নাই থেকে মাদক এনে কারবার করত। পুলিশ জানায়, গুলশন বিবিও একই অভিযোগে জেল খেটেছে। ঘটনার পর থেকে ইসরাফেল ও গুলশন বিবি পলাতক।

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে শনিবার রিয়াজুদ্দিন নিজের বাড়িতেই ছিলেন। তিনি বললেন, “মাদক কারবারীদের কিছুতেই এলাকায় ঢুকতে দেব না। এতে পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য চাই।” স্থানীয়দের অভিযোগ, দক্ষিণ দমদম পুরসভার লেকটাউন, বাঙুর, শ্রীভূমি এলাকায় যখন ক্রমশই উন্নয়ন হচ্ছে তখন এই এলাকা অন্ধকারে।

স্থানীয় বিধায়ক সুজিত বসুর অবশ্য দাবি, “ওই এলাকায় মাদক ব্যবসা এখন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাস্তায় আলো লাগানো হয়েছে। শুক্রবার রাতে যা হয়েছে তা স্থানীয় যুবকদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কোনও ঘটনা ঘিরে মারপিট। এটা কোনও রাজনৈতিক ঘটনা নয়। পুলিশকে বলেছি অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করতে।” বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, “অভিযুক্ত দুই যুবক মহম্মদ আরসাদ ও মহম্মদ জাব্বিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE